স্বাধীনতার পূর্বে একটা জনপ্রিয় স্লোগান ছিল "বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন করো"। তখন সময় ছিল লড়াই করে নিজেদের অধিকার অর্জন করার। কিন্তু এখন সময় হলো তেলবাজি, দলবাজি করে নিজেদের আখের গুছানোর। ১ দশক পূর্বেও তেল বাজি; দলবাজি ছিল ব্যক্তি পর্যায়ে; সেটা গত ৭ বছরে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। তাই লালন সাই এর ভাষায় বলি "সময় গেলে সাধন হবে না"। উপায় একটাই:
"সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কলম ধরো; ব্যাংক লুট, সুন্দরবনের কথা ভুলে গিয়ে সরকারের স্তুতি করো।"
৫ই জানুয়ারির ভোটের পূর্বে সেনাবাহিনী সব কিছু দেখে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল; বিনিময়ে পেয়েছে ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে ৪ টা মেডিকেল কলেজ; ৪ টা বিশ্ববিদ্যালয়; যেগুলোতে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের যোগ্য-অযোগ্য সকল ছেলে-মেয়েরা প্রতিদন্দিতাহীন ভাবে ডাক্তার-ইন্জিনিয়ার হতে পারবে।
আমলাতন্ত্রের কর্মকর্তারা ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে কর্মরত থেকে সারা দিনে ব্যালট বক্সে পড়া ৫% ভোটকে দিন শেষে ৪২ বানিয়ে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে বিনিময়ে আমলাতন্ত্রের সর্বোচ্চ পদ "সচিব" এর উপরে "সিনিয়র সচিব" নামক পদ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। পদ শূন্য না থাকলেও উচ্চ পদে হাজার হাজার প্রমোশন বাগিয়ে নিয়েছে নিজেদের দলীয় আনুগত্যের প্রমাণ দিয়ে।
পুলিশ বাহিনী বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের দিনে দুপুরে ক্রস ফায়ার দিয়ে ও মিছিলে গুলি চালিয়ে নিজেদের আনুগত্যের পরিচয় দিয়ে নিজ বাহিনীর ১ টা আইজি পদকে ৯ টা পদে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। Man is Mortal: মানুষ মাত্রেই ভুল হয় এই তত্বের খপ্পরে পড়ে খাদ্য মন্ত্রী গম+কামরুল = গমারুলের আনা পচা গমের রুটি খাইতে হইছে slip of the tongue হিসাবে। পেটে খেলে যেহেতু পিঠে সয় তাই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও পচা গমের রুটি খাওয়া মাইনা নিতে বাধ্য হইছে।
চোখ বন্ধ করে বিনা বাক্য ব্যায়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের হল-মার্ক কে ৪ হাজার কোটি; বেসিক ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা হাপিশ করার সুযোগ দিয়ে দিব্যি ব্যাংকাররাও নিজেদের আখের গুছিয়েছে।
যেখানেআমলারা সচিব পদের উপরে সিনিয়র সচিব নামক পদ সৃষ্টি করে; পুলিশ বাহিনী ১ টা আইজি পদকে ৯ টা পদে উন্নীত করে; সেখানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পদমর্যাদা পূর্বের মর্যাদা ক্রম থেকে এক লাফে ৩ ধাপ নিচে নেমে যায়।
বন্ধু লিস্টে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষকরা আছেন তারা ভেবে দেখুন তো সরকারকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করতে দিতে আপনারা কি করেছেন গত ৭ বছরে? গ্রাম বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "পেটে খেলে পিঠে সয়"।
পুলিশের মতো আপনাদের হাতে তো অস্ত্র নাই যে বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের ক্রস ফায়ার দিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ দিবেন; কিংবা সরকারি আমলাদের মতো ৫% ভোটকে ৪২% বানাবেন। তবে অস্ত্র একটা আছে আপনাদেরও। অস্ত্রটা হলো "কলম"। প্রবাদের আছে A pen is mightier than a sword। পুলিশ ও আমলারা তাদের নিজ নিজ অস্ত্র দিয়ে সরকারের সেবা করতেছে; আপনারাও একই ভাবে কলম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। পত্রিকার পাতা ভরিয়ে ফেলুন সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে। তবে সাধু সবধান, ভুলে শেয়ার বাজার, ব্যাংক লুট, সুন্দরবনে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ২ বছরের কথা বলে গত ৭ বছর ধরে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ এর নামে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা লুট-পাট নিয়ে লিখবেন না। এমনকি নিজেদের খাবার টেবিলে কিংবা চায়ের আড্ডায়ও উপরোক্ত প্রসঙ্গ গুলো আলোচনা করবেন না।
কালো বিড়াল দাদা বাবু মুখ ফসকে একটা সত্য কথা বলে ফেলেছিল "বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে; শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না"। বুয়েটের ঐতিহাসিক ভাবে চলে আসা জোষ্ঠতার নিয়ম ভেঙ্গে বুয়েটের বঙ্গবন্ধু পরিষদের একজনকে প্রো-ভিসি হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিল সরকার; চশমখোর সে ক্ষমতা-লোভী মানুষটাকে আপনাদের জ্ঞাতি ভাইরা (বুয়েটের শিক্ষকরা) মেনে না নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। শেখ হাসিনার নিজ মুখে বলা কথা সে "Forgive Not Forget" এর বিশ্বাসী। সুতরাং এখনও সময় আছে রাতের আধারে গণভবনে গিয়ে (........ 3 3 .........)।
২০১৩ সালে নিজেদের বেতন-ভাতার দাবিতে পথে নামা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর সাধারণ মরিচের গুড়া স্প্রে করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেহেতু সবচয়ে উঁচু স্তরের শিক্ষা দানে নিয়োজিত তাই সরকারের নির্দেশ বেতন ও মর্যাদা নিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পথে নামলে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী যেন মরিচ শ্রেণির সবচেয়ে দামি প্রজাতি ""নাগা মরিচ" এর গুড়া দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হয়
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৪