১০ মার্চ ,২০১৩
....................
প্রথম আলো প্রকাশিত ফান ম্যাগাজিন 'রস+আলো'র ৫ নাম্বার পৃষ্ঠায় 'বসন্তের কোকিল যখন যা বলেন' শিরোনামে এক লেখায় সুবিধাবাদি লোকদের চরিত্র তুলে ধরতে গিয়ে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনের সূরা লোকমানের ২৭নং আয়াতকে ব্যাঙ্গাতক অর্থে বিদ্রূপ করে।
"যমীনের সমস্ত গাছ যদি কলম হয় আর মহা সমুদ্রের সাথে সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে যদি কালি হয় তবুও আল্লাহতাআলার গুনাবলী লিখে শেষ করা যাবে না।"
- আয়াত ২৭,সূরা লোকমান।
প্রথম আলো উদ্দেশ্যমূলক ভাবে একসাথে পবিত্র আল-কোরআন এবং সরকারকে বিদ্রূপ করার জন্য সূরা লোকমানের ২৭নং আয়াতে উল্লেখিত আল্লাহতাআলার গুনাবলীর পরিবর্তে 'সরকারের গুণের কথা ' ব্যবহার করে।
"সাগরের সমস্ত পানি দিয়ে যদি কালি বানানো যায়, আর বনের সমস্ত গাছ দিয়ে যদি বানানো যায় কলম, সেই কালি-কলম দিয়েও এই সরকারের গুণের কথা লিখে শেষ করা যাবে না! "
-রস+আলো,১০ মার্চ,২০১৩ সংখ্যা।
১৪ এপ্রিল,২০১৩
........................
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন ইস্যুতে সারাদেশে জামায়াত যখন কোণঠাসা,মনোবল ভেঙ্গে একাকার,তখন প্রথম আলো তাদের মনোবল চাঙ্গা করার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়।টোটকা হিসেবে ব্যবহার করে বিতর্কিত সাহিত্যিক হাসনাত আব্দুল হাই-এর লেখা “টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি”। প্রথম আলো’র নববর্ষ সংখ্যা ১৪২০-এ উদ্দেশ্যমূলক এই লেখাটি ছাপিয়ে তরুণ-তরুণীদের জাগরণকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল,যা মূলত জামায়াতের প্রকাশনা নয়াদিগন্ত,সংগ্রাম,সোনার বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত ধারাবাহিক লেখাগুলোর রসালো সারসংক্ষেপ।
বিতর্কিত এই চটি গল্পের এক পর্যায়ে লেখা ছিল
"তিনি রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছেন, অনেক জায়গাজুড়ে মঞ্চ। রাস্তায়, ফুটপাতে মানুষের ভীড়। অল্প বয়সের ছেলেমেয়রাই বেশী। স্লোগান উঠছে থেকে থেকে, কোলাহল বাড়ছে। তিনি সীমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি মঞ্চে যাবে না আজ? স্লোগান দিতে?
'না,ছাত্রনেতারা পলিটিকস করছে আমার সঙ্গে।বলছে,তাদের খাদ্য হতে হবে। শুধু জমির চাচার একার খাদ্য হলে চলবে না।রাতের বেলা মঞ্চের আশেপাশে তাদের সঙ্গেও শুতে হবে।তাহলেই হাতে মাইক্রোফোন দেবে, নচেৎ নয়।"
মূলত,একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে বিতর্কিত করে তারা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল।তারা চেয়েছিল সাবেক শিবির কর্মী,বিশিষ্ট গাঁজাখোর ইমরান এইচ সরকারের হাতে শাহবাগ আন্দোলনের চাবি তুলে দিয়ে আন্দোলনটিকে বিপথে পরিচালিত করতে।তবে,সৌভাগ্যের বিষয় এটাই যে,ঐ বিশেষ ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা চক্রান্ত বুঝতে পেরে সময় মত নিজেদের যা করা দরকার ছিল তা করতে পেরেছেন।
১১ মে,২০১৩
..................
২০১৩ সালের ১১ মে প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ছাপা হয় ওআরজি-কোয়েস্ট পরিচালিত জরিপের ফলাফল।প্রথম আলোর দাবি অনুসারে প্রায় ৩০০০ মানুষের অংশগ্রহণে এই জরিপ পরিচালিত হয়।
জরিপে মূলত যে তিনটি বিষয় ফোকাস করা হয় তা হলঃ
১)নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা
২)জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা
৩) দেশের তৎকালীন পরিস্থিতি (জরিপ পরিচালনা করার সময়)
প্রথমে আসি,নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থায়।জরিপে দেখা যায়,প্রায় ৯০ ভাগ লোক নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা চায়।এক্ষেত্রে,যে সম্যসাটি দেখা যায় সেটি হল ,নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা এবং তত্ত্বাবধায়ক দুটি অনেকাংশেই ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে।এক্ষেত্রে জরিপে অংশগ্রহণকারীদেরকে নিঃসন্দেহে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
আর যদি মেনেও নেই,এই প্রশ্ন নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হয়নি,তাহলেও কিভাবে ৯০ ভাগ লোক নির্দলীয় সরকারের পক্ষে রায় দেয়?জরিপ কি শুধু বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের নিয়ে পরিচালিত হয়েছিল?
দ্বিতীয় যে প্রসঙ্গটি আসছে,সেটি হল জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।জরিপে দেখা গেছে,৬৪.৮ ভাগ লোক জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে। ভালো কথা!!!
চলুন,এই বিষয়টা বিশ্লেষণ করার পূর্বে ছোট্ট আরেকটি বিষয় জেনে নেই।যে ৩০০০ লোকের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে তার মধ্যে ৫০১ জন শাহবাগ আন্দোলন বা ৭১ এর যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাহলে কেন তাদের মধ্যে জরিপ পরিচালনা?আপনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট জানার জন্য যদি জরিপ করেন নেপালে,তাহলে কি সেই জরিপের কোন অর্থ থাকে?
মূল ব্যাপার যেটা হল,প্রথম আলো জামায়াতে ইসলামের পেয়িং এজেন্ট হিসেবে জামায়াতকে বাঁচাতে বড় ধরনের এই কারচুপির আশ্রয় নেয়।
আর,শেষ যে ব্যাপারটি আসছে সেটি হল,দেশের তৎকালীন পরিস্থিতি। ৮০ ভাগ মানুষ বলেছে,দেশের তৎকালীন পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল।আশা করি,এই ব্যাপারটি বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই।কারণ, ইতোমধ্যে আপনাদের বুঝে যাওয়ার কথা,জরিপটি কাদের মধ্যে পরিচালিত করা হয়েছিল এবং কেন হয়েছিল।
৫ জানুয়ারি,২০১৪
.....................
৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন প্রথম আলো তাদের অনলাইন সংস্করনে একটি ছবি আপলোড করে যাতে দেখা যায়, সিঁদুর পড়া মহিলারা লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন।প্রকৃতপক্ষে,এটা সম্পূর্ণ একটা ভুয়া ছবি।
ইমেজ ফরেনসিক এক্সপার্টরা অভিমত দিয়েছেন,ইমেজ এডিটিং টুলের মাধ্যমে কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হয়েছে।যাতে,যারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা ছবিটি দেখে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সাথে দাঙ্গা বাঁধায় এবং এই কারনে নির্বাচিত সরকার যাতে চাপে পড়ে।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে উস্কে দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য প্রথম আলো দিনের পর দিন ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।
১৭ মে,২০১৪
..................
গত ২০১৪ সালের ১৭ মে তারিখে প্রথম আলোর অনলাইন এবং প্রিন্ট উভয় সংস্করণে ভারতের সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিজয়ী বিজেপির প্রভাবশালী নেতা নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে প্রায় ২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে (যদিও বাংলাদেশের কোন ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রথম আলোতে এতটা জায়গাজুড়ে প্রতিবেদন দেখা যায় না।)
প্রতিবেদনের এক পর্যায়ে 'চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী' শিরোনামে মোদির জীবন কাহিনীতে বলা হয়, "আরএসএসের 'প্রচারক' হিসেবে যোগ দেন ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধের পর।"
দেখুন তাদের দৃষ্টতা,কিভাবে তারা স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করে স্বাধীনতা যুদ্ধকে ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে,মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি করা হচ্ছে!
উপরের ঘটনাগুলো প্রথম আলোর অব্যাহত ষড়যন্ত্রের কিছু অংশ মাত্র।এরা গণমানুষের শত্রু,দেশের শত্রু।এদেরকে যদি আরও সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে এরা আমাদেরকে ধীরে ধীরে পিষে ফেলবে।
তাই,আসুন,আমরা আজই প্রথম আলো বর্জন করি।মুখে মুখে বা অনলাইনে নয়,আপনার হকারকে এখনি ফোন করে বলুন,কালকে থেকে আপনার বাসায় আর প্রথম আলো আসছে না। আপনাকে দেখে আরও ৫ জন উদ্বুদ্ধ হবে। এভাবে আমরা চাইলে প্রথম আলোর সার্কুলেশন কমিয়ে তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে।
আমরা চাইলে সবই পারি।এখন সময় শুধু প্রমান করে দেয়ার।