ভারতে আসতে গিয়ে তিনটা ভুল হল মা'র, আমার আর বাবার। মা ফোন পান না, রাস্তায় কিছুদূর এসে আবার বাসায় গিয়ে খুঁজে পেলাম না। পরে দেখা হল স্যুটকেসে ঢুকিয়ে দিয়েছে আমার ভাগ্নেমশাই।
বাবা হারালেন সিম। ভোদাফোনের একখানা সিম কেনা ছিল আমার আত্মীয়দের, বাবা ওঠার সময় আমাকে দেখিয়েছিলেন ও। কিন্তু এয়ারপোর্টে আসতে আসতে গোলমালে কিভাবে যে সিম টা টা বাই।
আর এদিকে আমি আমার প্রিয় ইয়ারফোনখানা এই একটু আগে কলকাতায় ওলা থেকে নেমে আর পাচ্ছিনে। ব্যাগ ইত্যাদি টানাটানিতে পকেট থেকে পড়ে গেল কিনা! মা আমাকে কিছুটা খোঁচালেন - আমি যখন ফোন পাচ্ছিলাম না, তোমরা তো আমার উপর খুব চালিয়েছিলে; এ কারণেই এ অবস্থা!
এনিওয়ে, সাথে আরো দুটো এয়ারটেল সিম অতিরিক্ত ছিল - সুতরাং এসে কাজ চালাতে খুব অসুবিধা হচ্ছে না। এটা খুব দারুণ একটা সুবিধা। এয়ারপোর্ট থেকে মাত্র ২৭৬ টাকায় ওলা ক্যাবে নারেন্দার সিং আমাদের নিয়ে এল লেক টাউনে।
আরে সেই নরেন্দর সিং-রে ভাই! ক্যাব-এনআরসি-বাবরি-শিখ মুসলিমদের শিক্ষার লেভেল সব ব্যাপারেই তার নানা কট্টর ডানপন্থী মতামত। হিন্দু ধর্ম থেকে কেন এত ধর্ম হবে - কেন শিখ বৌদ্ধ মুসলিমরা ধর্মান্তরিত হবে - মাদার তেরেসাও দোষী, লোকজনকে টাকার বিনিময়ে খ্রিস্টান বানিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কথা যতই ঘুরাই চাচু খালি ফেরত আসে। আমার মা ট্যাকটিকালি পরে প্রশ্ন করলেন - তোমার ছেলে মেয়ে ক'টা। আহ সে গলে গেল। পাঞ্জাবি এই চালকের মেয়ে একটা - ছয় বছরের। বৌ নাকি এখনো একটা ছেলে চায়, কিন্তু তা নিয়ে সে বৌকে বোঝাচ্ছে যে এ যুগে ছেলে আর মেয়ে সমান! ভাগ্যিস এ ব্যাপারেও সে কট্টর ডানপন্থী নয় - মেয়ের কপাল!
কিছুক্ষণ আগে লেক টাউনে বের হয়ে কিনে নিলাম একখানা ইয়ারফোন - এলাকাটাও ঘুরে নিলাম একটু। কলকাতার ট্রাফিকের অবস্থা ঢাকা থেকে অনেক ভাল সেটা বলতেই হবে। যদিও বাংলা ভাষার অবস্থা আমার হোটেলে ভাল না - সবাই হিন্দি বলে। একটু পরে বালিগঞ্জের দিকে ডিনারে যাওয়ার পরিকল্পনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩১