somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিদান-১০

০৬ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
(আগের পর্বের পর থেকে)
(আমার (মোনা) ভাইয়া ঐ ঘটনার পর আরোহীর সাথে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু আরোহী বেহায়ার মতো আবারো যোগাযোগ করেছিল। আরোহী এরপর আমার ভাইয়াকে যেভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে তার কয়েকটা নমুনা আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।)

১৭/৯/২০০..
সন্ধ্যায় আরোহী ফোন করলো আমাকে।
সে বললো,“ আজ সারাদিনে একবারও ফোন করো নি কেন?”
আমি চুপ করে রইলাম। কোন জবাব দিলাম না।
সে আবারো বললো,“ আমার গতকালের আচরণে তুমি খুব রাগ করেছো, তাই না?”
“জানি না,” আমি বললাম,“আর জানলেও বলবো না।”
“আমি জানি, আমার কথায় তুমি খুব রাগ করেছো। ঠিক আছে, আমাকে আর সাহায্য করা লাগবে না।”
“এমন কথা আর কখনো বলো না।”

১৮/৯/২০০..
আজ সন্ধ্যায় আরোহী ফোন করলো আমাকে।
আমি ফোন রিসিভ করতেই সে বললো,“ তুমি আজ কুমিল্লায় আসো নি কেন?”
আমি কোন কথা বললাম না।
সে বললো,“ আসলে তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না। সত্যিই যদি আমাকে ভালবাসতে, তাহলে ঠিকই আজ তুমি আমাকে দেখার জন্য ছুটে আসতে। আচ্ছা, তোমার কি ইচ্ছে করে না আমাকে দেখতে?”
আমার খুব কষ্ট লাগলো তার কথা শোনে।
তখন আমি মনে মনে বললাম,“আরোহী, এমন করে বলো না প্লিজ। এসব কথা শুনলে আমার খুব কষ্ট হয়।”
অনেকক্ষণ পর বললাম,“ঠিক আছে, আমি কাল আসবো তোমাকে দেখতে।”
আরোহী বললো,“আমি অপেক্ষায় থাকবো।”
..........................................................
ঠিক দু’ঘন্টা পর আরোহী আবারো ফোন করলো আমাকে।
সে বললো,“ স্যরি, আমি ক্ষমা চাচ্ছি তোমার কাছে।”
আমি বললাম,“ কেন? কি হলো আবার?”
“ আমি কাল বাসায় থাকতে পারবো না।”
“কেন?”
“বিশেষ কাজে বাইরে যেতে হবে আমাকে। তবে তুমি চিন্তা করো না, আমি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।”

রাত বারোটা।
জাহাঙ্গীর ফোন করলো আমাকে।
সে বললো,“ দেখবেন, শেষ পর্যন্ত জয় আরোহীকে বিয়ে করবে না।”
যদিও একসময় প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু আজ কিছুই করি নি; বরং নীরবে তার কথাগুলো শুনেছি।
সে আজ খুব আশ্চর্য হলো আমার নীরবতায়।
সে বললো,“ কি ব্যাপার আরমান ভাই, আজ আমার সাথে ঝগড়া করলেন না কেন?”
“কারণ, আমিও যে এখন তাকে ভালবাসতে শুরু করেছি।”

২২/৯/২০০..
আজ আরোহী ফোন করলো আমাকে।
আরোহী জিজ্ঞেস করলো,“ কেমন আছো?”
“ভালো।” আমি জবাব দিলাম।
“আচ্ছা আরমান, তুমি কি আমাকে বিপদে ফেলে চলে যাবে।”
কি জবাব দেবো ভাবছি আমি।
আরোহী বললো,“ কি হলো?”
“ঠিক আছে কথা দিলাম, আমি তোমাকে বিপদে ফেলে কোথাও যাবো না।” আমি জবাব দিলাম।
“খুশী হলাম।”
“ আমি কিন্তু তোমাকে খুশী করার জন্য কথাটা বলি নি।”
“ এ জন্য ধন্যবাদ তোমাকে। আচ্ছা, তুমি কি আমাকে কিছু টাকা দিতে পারবে?”
“কি জন্য?” জানতে চাইলাম আমি।
“দরকার আছে।” জবাব দিলো আরোহী।
“ কি দরকার? জানতে পারি?”
“ না, মানে আসলে আমি টাকাটা জয়ের জন্য চাইছি।”
জয়ের কথা শোনেই আমি বললাম,“ স্যরি আরোহী, ক্ষমা করো আমাকে। জয়ের জন্য কোন টাকা পয়সা দিতে পারবো না তোমাকে।”
“কেন দিবে না? তুমি কি তোমার আরোহীর সুখ চাও না?”

(এ কথার শোনার পর আমার(মোনা) ভাইয়ার উচিৎ ছিল আরোহীর গালে দুইটা চড় দেওয়া। কিন্তু সে তা করে নি।)

“অবশ্যই চাই।”
“তাহলে কেন দেবে না?”
“ আমি জয়কে অবশ্যই টাকা দিতাম। কিন্তু যখনই তোমার কথা মনে পড়ে; তখনই আমার সব এলোমেলো হয়ে যায়।”
“ তুমি এতো ভাবো আমার জন্য?”
“ হ্যা।”
“তুমি এতো ভালোবাসো তোমার আরোহীকে।”
“ কোন সন্দেহ আছে?”
“ না।”

২৩/৯/২০০..
আজ সারাদিন মোবাইলটা বন্ধ রেখেছিলাম।
সন্ধ্যার সময় মোবাইল অন করতেই আরোহী ফোন করলো।
সে বললো,“ আরমান, তুমি আমাকে কষ্ট দিয়ে খুব মজা পাও, তাই না?”
আমি কোন জবাব দিলাম না।
সে বললো,“ তুমি কি দুপুরে খেয়েছো?”
“না।” জবাব দিলাম।
“কেন খাও নি? জানতে পারি?”
“বিশেষ কোন কারণ নেই। ক্ষিধে লাগে নি, তাই?”
“ আর কোন কথা শুনতে চাই না। যাও, লক্ষ্মীছেলের মতো এক্ষুণি খেয়ে ফেলো। তা না হলে আমিও কিন্তু রাতে কোন কিছু খাবো না।”
“তুমি কি ভয় দেখাচ্ছো আমাকে?”
“ আমি কোন কথা শুনতে চাই না। বল, তুমি এক্ষুনি খাবে কি না?”
“ পরে হলে কি চলবে না?”
“ না, কোন বাহানা নয়। যাও, এক্ষুনি। তা না হলে আমি কিন্তু সত্যিই কোন কিছু খাবো না রাতে।”
“আরোহী, তুমি আমার জন্য শুধু শুধু কেন কষ্ট দেবে নিজেকে?”
“তুমি কি কিছু বুঝ না? আমি কেন কষ্ট দিতে চাই নিজেকে?”
যদিও আমি সবই বুঝতে পেরেছি, তারপরও জবাব দিলাম,“না।”
আরোহী বললো,“ তুমি তোমার মনকে প্রশ্ন করো, তাহলে তুমি আমার প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবে।”
“আমার তো মন বলে কোন কিছু নেই;সেই কবে মরে গেছে।”
আমার কথা শোনে আরোহী খানিকটা রেগে গিয়ে বললো,“বাজে কথা বলো না তো। মন কখনো মরে না।”
“আচ্ছা আরোহী, আমি তো এখন আর তোমাকে ফোন করতে চাই না, তারপরও তুমি কেন আমাকে ফোন করো?”
“একজন বন্ধু কি আরেকজন বন্ধুর খবর নিতে পারে না?”
খুব ভালো লাগলো আরোহীর কথা শোনে।
তাকে বললাম,“Thanks”

২৪/৯/২০০..
আজ আরোহীকে জিজ্ঞেস করলাম,“ আচ্ছা, তুমি আমার সব কথা শোন কেন?”
আরোহী বললো,“সব মানুষই তার প্রিয় মানুষের কথা শোনে। আর তুমি হলে আমার প্রিয় মানুষ। এবার তুমিই বলো, আমি তোমার কথা শুনবো না কার কথা শুনবো?”
“তাই!”
“হ্যা, তাই।”আরোহী বললো,“ আচ্ছা আরমান, আমার শুশ্বর বাড়ির লোকেরা যদি তোমাকে এটা-সেটা দিতে বলে; তাহলে তুমি কি তা দেবে আমার জন্য?”
আমি বললাম,“ হ্যা দেবো।”
“কেন দেবে?”
“তুমি কি জানো না?”
“হ্যা জানি। তুমি কখনোই তোমার আরোহীর চোখে পানি দেখতে চাও না, তাই না?”
(চলবে)











সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৮
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×