somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিদান-৯

০২ রা মে, ২০১০ সকাল ৮:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
(আগের পর্বের পর থেকে)

এই ক’দিনে আমি আরোহীকে নিয়ে কম স্বপ্ন দেখি নি।
অনেক স্বপ্নের জাল বুনেছি তাকে নিয়ে।
কিন্তু স্বপ্ন যে স্বপ্নই হয়, তা বুঝতে আমার অনেক দেরী হয়েছে।

আজ সকাল ১০টায় আরোহী আমাকে ফোন করে বললো, “ আরমান, আমি কাল ক্লিনিকে যাবো টেষ্ট করাতে?”
আমি বললাম,“ঠিক আছে যাও।”
“হাতে টাকা নেই। টাকা লাগবে?”
“কত?” জানতে চাইলাম আমি।
“বেশী না দশ হাজার হলেই চলবে।” বললো আরোহী।
“ঠিক আছে, তুমি কোন চিন্তা করো না। আমি এক্ষুনি কুরিয়ার সার্ভিসে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি, তুমি কাল সকালে পেয়ে যাবে।”

পরদিন রাতের ঘটনা

রাত ৮টার দিকে আমি আরোহীকে ফোন করলাম।
জানতে চাইলাম,“ কি খবর তোমার?”
আরোহী বললো,“ ভালোই।”
“ আমি তোমার খবর জিজ্ঞেস করি নি।তোমার টেষ্টের খবর কি?”
“ আমি প্র্যাগনেন্ট নই।”
“তাহলে তো ভালো খবর।”

মেয়েরা যাকে একবার মন দেয়, তার জন্য নাকি জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করে না-একথাটা আরোহী আরেকবার প্রমাণ করলো।
আরোহী বললো,“আরমান, এ ক’দিন আমি তোমাকে যা বলেছি, তার একটাও আমার মনের কথা ছিল না। তার সবগুলোই আমার মুখের কথা ছিল।”
আরোহীর এ কথাটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
আমি বললাম,“মানে!”
“ আমি ওকে(জয়কে) মনে প্রাণে ভালবাসি। ওর জায়গায় আমি কখনো অন্যকে কাউকে বসাতে পারবো না। আর আমি তোমাকে বড় ভাইয়ের মতো মনে করি। তুমি কি করে ভাবলে আমি তোমাকে স্বামীর স্থানে বসাবো?”
যদিও সে সত্যি কথাগুলোই বলেছে, তারপরও তার কথাগুলো শোনে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। তবে আমি সেটা প্রকাশ করি নি তার সামনে।
আমি খুব সাধারণভাবে বললাম,“ আরোহী, জীবনটা তোমার। তোমার জীবনকে নিয়ে তুমি কি করবে, সেটা আমার চেয়ে তুমি ভালো জানো। তবে একটা কথা মনে রেখো, আমি শুধু একজন বিপদে পড়া মানুষকে সাহায্য করতে চেয়েছি।”

(আরোহীর জন্য আমারও(মোনা) খুব মায়া হয়েছে। মেয়েটা বিপদে পড়েছিল বলে আমার ভাইয়া(আরমান) তাকে সাহায্য করেছে।
কাউকে সাহায্য করলে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করা উচিৎ- এ কথা ভাইয়া আমাকে শিখিয়েছে।)


আরোহী এবং জয়ের সম্পর্কটা আবারও আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এ কারণে আরোহী আমাকে এড়িয়ে চলছে।
আমিও আর চাই না আরোহী আর জয়ের জীবনের সাথে জড়াতে। কিন্তু আরোহীই আমার পিছু ছাড়ছে না।
আজ দুপুর দুটো বাজে আরোহী ফোন করলো আমাকে।
আমি ফোন রিসিভ করতেই সে বললো,“ আমাকে এক্ষুণি একটা গ্রামীণের তিনশত টাকার কার্ড পাঠাও।”
আমি বললাম,“ পারবো না।”
“কেন?”
“ সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।”
“ জানতে পারি সেটা?”
“না।”
“কেন?”
“আমি এত কথা বলতে পারবো না।”
“ এতদিন দিয়েছো, তা হঠাৎ আজ কেন দেবে না?”
“আমার ইচ্ছে।”
“বুঝতে পারছি, আর বলতে হবে না। তারমানে, তুমি এতদিন আমার জন্য যা করেছো, তা শুধু আমাকে কাছে পাবার জন্য করেছো, তাই না?”
কথাটা শোনে আমি আর নিজেকে স্থির রাখতে পারছি না। রাগে ফোস ফোস করছি। এখন যদি আরোহী আমার সামনে থাকতো, তাহলে আমি কি যে করতাম, তা আমি নিজেও জানি না। শুধু বলতে পারি, আজকের পর থেকে সে দুনিয়ার আলো দেখতো না। অর্থাৎ আমি তাকে খুন করে ফেলতাম।
আমি খুব শান্তভাবে আরোহীকে বললাম,“ কথাটা তুমি ঠিক বলো নি। আমি কখনোই তোমাকে পাবার চেষ্টা করি নি।”
আরোহী,“ তাহলে আমাকে কার্ড দিবে না কেন?”
“ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।”
“ আমি অতো শতো বুঝি না, এখন যদি তুমি আমাকে কার্ড না দাও, তাহলে আমি মনে করবো, আমার ধারণা-ই সত্যি।”
কি আর করা? অগত্যা বাধ্য হয়ে আমি গ্রামীণের তিনশত টাকার কার্ড কিনে আরোহীর নাম্বারে এসএমএস করে দিলাম।

(আরোহীর এ কথাগুলো জেনে আমার(মোনা) খুব ঘৃণা হচ্ছে তার প্রতি। আমি ভাবতেও পারছি না যে, মানুষ এত নিচু মনের অধিকারী হতে পারে। এ কথাগুলো বলার আগে সে একবারও চিন্তা করলো না যে, এ মানুষটাই তাকে তার বিপদে সাহায্য করেছে। আসলে মানুষ এত স্বার্থপর (তবে সবাই নয়)! আমরা (অনেকেই) উপকারীর উপকারের কথা খুব সহজেই ভুলে যাই। এ ঘটনার পর আমার(মোনা) ভাইয়ার উচিৎ ছিল আরোহীর সাথে যোগাযোগ না করা। কিন্তু আমার (মোনা) ভাইয়াটাও আরেক বেহায়া। এতকিছুর পরও সে আরোহীর সাথে যোগাযোগ করেছে।)
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×