হেফাজতে ইসলামের তীব্র প্রতিবাদের কারনে অবশেষে সংগঠিত হল না বহুল আলোচিত গনজাগরনের চট্রগ্রামের সমাবেশ। এটাকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করছেন। হেফাজতে ইসলাম বলছে ইসলামের বিজয়, গনজাগরন মঞ্চ বলছে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। তবে যেই যাই বলুক এতে ফা্যদা লুটছে জামাত-শিবির। অবশ্য অনেকে এটাকে গনাজাগরন মঞ্চের জন্য বড় একটা ধাক্কাও মনে করছেন। কারন যে গনজাগরন মঞ্চের কথায় সচিবালয় পর্যন্ত চলে তারা এবার অনেকটা পিছু হটল একটি ইসলামিক অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিবাদের মুখে। কিন্তু যত বাধাই আসুক আমাদের প্রাণের দাবী এবং গনজাগরন সমাবেশ প্রতিহতকারী সাধারন আলেম-উলামাদেরও একদাবী যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি। হেফাজতে ইসলাম স্পষ্ট ভাষায় বলে আসছে " আমরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি চাই"। তার মানে এই একটি ইস্যুতে সাধারন আলেম উলামা সবাই এক । আর এক হবেই না কেন? আওয়ামিলীগ বা বামপন্থীরা জামাতকে পছন্দ করে না এই কয়েক বৎসর যাবত, তারা কেবল রাজনৈতিক কারনেই তাদের দেখতে পারে না। আমরা বিভিন্ন সময় সরকার বিরোধী আন্দোলনে দেখেছি জামাত -আ্ওয়ামিলীগ একসাথে কাজ করতে। কিন্তু এই সাধারন আলেম সমাজই জামাত-শিবির রে ঘৃনা করে তার জন্মলগ্ন থেকেই, এবং বর্তমানেও করছে ভবিষ্যতেও করবে। যার সিকিভাগও করে না আওয়ামিলীগ। আজকের আওয়ামিলীগ, বামপন্থি, গনজাগরন মঞ্চ জামাত-শিবিরের ব্যাপারে সাধারন মানুষকে কতটুকুই বা সতর্ক করছে? কেবল একটু মিছিল মিটিং এই যা। আর কওমী আলেম উলামার এ ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক সিলেবাসে আলাদা ভাবে একটি বই-ই রাখা হয়েছে, যা ১০০ নাম্বারে পরিক্ষা হয়ে আসছে, যুগ যুগ ধরে কওমী মাদরাসর পঠনের তালিকায়ও রয়েছে। এতটুকুন কে করতে পেরেছে আওয়ামিলীগ, বামপন্থিরা, আজকের প্রজন্ম চত্বরের কেউ? কেউ না, কেউ করবেও না, সবাই এটাকে ভোটের রাজনীতী মনে করছে। একমাত্র কওমী আলেম উলামারাই নিস্বার্থ ভাবে এর জন্মলগ্ন থেকেই ঈমানের তাকিদে সাধারন মানুষকে এদের ব্যাপারে সতর্ক করছে। কিন্তু রাজনৈতিক শক্তি না থাকার কারনে তা জনসম্মুখে আসছে না।
সাধারন আলেম উলামা নেট থেকে দুরে থেকের কারনে ধর্মদ্রোহি, খোদাদ্রোহী, ইসলাম বিদ্বেষীদের ইসলাম নিয়ে ব্লগ গুলোতে কটুক্তি করাটা এতদিন তাদের নজরে আসেনি। তাই এই সুযুগে গোলাপানিতে মাছ শীকারে নেমেছে জামাত-শিবির। তারা সাধারন আলেম সমাজের ধর্ম অনুভূতি কে কাজে লাগাল ১০০ ভাগ। তারা ব্লগ গুলিতে মুক্ত বুদ্ধি চর্চার আড়ালে কি হচ্ছে তা প্রকাশ করে দিল। শুরু হল ক্ষোভ। ক্ষোভটা আরো বাড়ল যখন দেখল শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে এ সমস্ত খোদাদ্রোহীদের। আগুনে ঘি ঢেলে দিল কিছু মিডিয়া। তারা ইসলাম বিদ্বষী এ সমস্ত ব্লগারদের লেখাগুলো প্রকাশ করল। শুরু হল আলেম উলামাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ। অথচ ঐক্যমত্যের একটি দাবী থেকে দু দিকে সরে গেল দু মেরুর দু বাসিন্দা। মাঝখান থেকে ফায়দা লুটছে জামাত-শিবররা। ধর্মীয় অনুভূতি কে কাজে লাগিয়ে সফল হচ্ছে জামাত শিবিররা। বিপরীতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দুরে সরিয়ে দিল ঐক্যমত্যের একটি দাবী থেকে আলেম উলামাদের। এখন আলেম উলামারাও দেখছেন যুদ্ধাপরাধীদের ফাসির দাবীর আড়ালে রয়েছে নাস্তিক্যবাদের জয়গান। তাই তারাও মাঠে নামছেন বা নামতে বাধ্য হচ্ছেন।
তাই সাধু সাবধান!!
আলেম উলামাদের নিয়ে এই আন্দোলন চালিয়ে যান। তারাই প্রস্তুত আছেন সর্বোচ্চ কুরবানী দিতে। যেমনটা বলেছিলেন হেফজতে ইসলামের গতকালের এক মিটিং এ " শাহবাগ গংরা চট্টগ্রামে আসলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে আসতে হবে"। এমন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এই আন্দোলন কোনভাবেই সফল হতে পারে না। তাদের ধর্মীয় অনুভূতির সৎ ব্যবহার করুন। তাদের বুঝাতে সক্ষম করুন ব্লগ মানেই নাস্তিকতা নয়, এ জন্য ধর্মদ্রোহী-খোদাদ্রোহী ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রত্যাখ্যান করুন, তাদের সামাজিক ভাবে বয়কট করুন দেখবেন, আলেম উলামারাই থাকবে গনজাগরন মঞ্চের সামনের কাতারে।