ইসলামে যা যা নিষিদ্ধ তা নিয়ে বেশী ভাবিনা কারন ভাবলে আমার জীবনটা পানসে হয়ে যাবে।কাউকে বলিও না যে ক্লাবে গিয়ে মদ খেয়োনা, মেয়েদের সাথে ফ্লাড কোরনা,সামার আসলে মেয়েরা যখন শর্ট শর্ট জামা পড়ে রাস্তায় হাটে তখন তাদের খোলা বুকের দিকে তাকিয়োনা বা খোলা উরুর দিকে তাকিয়ে ভেবোনা যে, ইশ্ যদি কাছে পেতাম!!...কারন আমিও তাকাই আর হয়তোবা একই জিনিস ভাবি।
পৃথিবীতে ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে পাপ এবং পুণ্য নামক দুই ভাইয়ের কারনে। এই দুই ভাই আমাদের জীবনের সাথে ওতো-প্রতোভাবে জড়িত। প্রতিটি ধর্মের সারমর্ম হচ্ছে এই দুই-ভাইকে কন্ট্রোলে রাখা।সব ধর্মেই বলা আছে পাপ কাজ থেকে দুরে থাকার কথা। আমরা সেটা মানি বা না মানি সেটা অন্য বিষয় কিন্তু মূল বিষয়তো সেটাই।আমরা যখন কোন পাপ কাজ করতে উদ্যোত হই তখন আমাদের মনে দুটি জিনিস এসে খোঁচা দেয়; ১. বিবেক ২. পরকালের ভীতি। বিবেক আমাদের চিন্তা,শিক্ষা,পারিবারিক মূল্যবোধ বা আচারের উপর নির্ভর করে। আর পরকালের ভীতি নির্ভর করে ধর্মীয় শিক্ষার উপর। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন যদি মিথ্যা বলতাম তখন আমার বাবা-মা বলতো; মিথ্যা বলেনা আল্লাহ্ গুনাহ দেবে।মা বলতো; মিথ্যা বললে দোযখের আগুনে পুড়বো। এই দুটি অদেখা চরিত্র কিংবা স্থানের কারনে মিথ্যা বলতে ভয় পেতাম এবং এখনো পাই।এখন আমার বাবা-মা যদি আমাকে বলতো যে মিথ্যা বললে বাঘে খাবে হয়তো কচি মনে সেটা বিশ্বাস করতাম,কিন্তু এখন তো জানি যে বাঘ নামের প্রানীর নিবাস হচ্ছে গহীন অরন্যে আর মিথ্যার সাথে তার কোন সম্পর্ক নাই। আমি যদি মনে এই ধারনা নিয়ে বড়ো হতাম, মিথ্যা বললে বাঘের খাদ্য হবো তাহলে হয়তো এখন কথায় কথায় মিথ্যা বলতাম।
ব্লগে জয়েন করার পর থেকেই দেখে আসছি এখানে অনেক সদস্যই ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলাটাকে এক ধরনের বিশেষ পারদর্শীতা মনে করেন। তারা কোরআন-হাদীসের ভুল খুজে বেড়ান। মোল্লাদের ফতোয়ার দোহাই দিয়ে ইসলামকে ছোট করার প্রয়াস খোজেন।অথচ তারা খুব ভালো মতোই ফতোয়াবাজ মোল্লাদের উদ্দেশ্য বোঝেন।তারা হয়তো নিজেদের মুসলিম বলতে লজ্জাবোধ করেন এবং ব্লগে ইসলামের বিরুদ্ধে দু'কলম লিখে নিজেদের জ্ঞানী মনে করেন। কেউ কেউ আবার সে লেখায় বাহাবা দিয়ে আগুনে ঘি ঢালেন।এদেরকে কখনো কিন্তু দেখা যাবেনা অন্য ধর্মের বিষয়ে কোন ভাল-মন্দ লিখতে।মূর্তি পূজা যদি ইসলামে জায়েজ থাকতো হয়তো তারা সে নিয়ে সমালোচনাও করতো না।আমরা জানি আল্লাহ্ আকার নেই,তিনি নিরাকার।হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর কোন ছবি নেই পৃথিবীতে যাতে তার ছবির পুজা কেউ না করতে পারে।আমি মনে করি ছোট্ট এই দু'টি বিষয় ইসলামকে অন্য ধর্মগুলো থেকে বিশেষ আলাদা করেছে।আমি কোন ধর্মকে খাটো করছিনা কারন খোদ ইসলাম ধর্মই তা সাপোর্ট করেনা।ইসলাম ধর্ম পারস্পরিক সহবস্থান এবং সাম্যে বিশ্বাস করে।কিন্তু আমরা সেটাকে মানতে চাইনা।তাই নিজেদের ধর্মের বিরুদ্ধে লিখি।নিজেরা মারামারি করি।উপর দিকে থুথু ফেলি আর তা আমাদের গায়ে এসে পড়ে মিসাইল-বোমা হয়ে।
ইসলাম ধর্মে যদি লেখা থাকে মেয়েদের পর্দা করা উচিত, তাহলে আমাদের নিজস্ব জ্ঞান দ্বারা বুঝতে হবে এখানে বলা হয়েছে যে, মেয়েদের যেসব অংগ ঢেকে চললে শালীনতা বজায় থাকবে এবং ছেলেরা কামাতুর দৃষ্টিতে তাকাবেনা তা ঢেকে চলা।এখন কেউ যদি এমন ফতোয়া দেয় যে মেয়েদের পর্দা করা মানে হচ্ছে যে বোরকা পড়া (এটাই বুঝায় পর্দা করা বুঝাতে) তাহলে ধরে নিতে হবে আইয়েমী জাহেলিয়াতের সময় মেয়েদের অবস্থা এতই করুন ছিলো যে তাদের নিরাপত্তার জন্যই সারা শরীর ঢেকে চলতে হতো। কিন্তু এখন তো অতো খারাপ অবস্থা না, তো মোটামুটি যতোটুকুতে শালীনতা বজায় রাখা যায় তাতেই চলবে।এই নিয়ে মোল্লাদের ফতোয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদেরও ফতোয়া দিতে হবে!!!
হ্যা হবে।কারন আমরা যদি কোরআন শরীফের ভুল খুজে বের করি বা আল্লাহ্ বা মুহাম্মদকে নিয়ে সমালোচনা করি তাহলে সেটা হবে আমাদের স্মার্টনেসের একটা আধুনিকরুপ এবং অনেক মানুষ পাওয়া যাবে ব্লগে বা সমাজে যারা বাহাবা দিয়ে কমেন্ট করবে।
একটু ভেবে দেখুন আমরা মুসলিমরা কতোটা আনইউনাইটেড। যার ফলে অন্য ধর্মাব্লম্বীরা নিজেদের স্বার্থে আমাদের তালেবান বানায় আবার নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার হলে সন্ত্রাসী উপাধী দিয়ে নির্বিচারে হত্যা করে। কারন আমরা নিজেদের গায়ে নিজেরা থুথু মেরে অভ্যস্থ্।আমাদেরই অনেকে শুধুমাত্র মুসলিম নাম ধারন করার কারনে সালমান রুশদী বা তাসলিমা নাসরিনের মতো বিখ্যাত হয়।এমন কোন অমুসলিম লেখকের নাম বলতে পারবেন যে কিনা ইসলামের বিরুদ্ধে লিখে তাদের মতো বিখ্যাত হয়েছে?
অনুরোধ রইলো এখন থেকে দয়া করে কেউ যদি ইসলাম বা আল্লাহ্-এর অসারত্ব প্রমানের চেষ্টা করেন তবে দয়া করে পাশাপাশি এও লিখবেন যে আপনার মতে কোন ধর্মটা আমাদের অনুসরন করা উচিত এবং কেন?
একজন যতো বড়ো নাস্তিকই হোক আমি জানি যখন সে এমন কোন বিপদে পড়বে যে তার মনে হবে এ থেকে উদ্ধারের আর কোন রাস্তা নেই। আশার প্রতিটি দরজা একে একে বন্ধ হয়ে আসবে।তখন তার মনে হবে কেউ একজনকে বিশ্বাস করতে।গভীর মনে তার কাছে প্রার্থনা করতে।কারন সত্যিই কেউ একজন আছে এবং সে আমাদের খুব কাছেই থাকে।
পৃথিবীর সকল প্রানী সুখী হোক।সকলেই শান্তি লাভ করুক।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৩৬