ইঁচড়ে পাকা ছেলেবেলা ৩- নীল ছবির গল্প ( ১৮ পিলাচ, বাচ্চারা দূরে থাকো)
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্ট । মাস ছয়েক হল এসেছি এখানে । চমৎকার একটি দেশ । বিশেষ করে এর রাজধানী আবিদজান ইউরোপের যে কোন শহরের সাথে আধুনিকতায় পাল্লা দেয়ার মত শহর। বিচিত্র এই দেশে জাতিসংঘের চাকরিতে এসে নানা রকম অম্ল মধুর অভিজ্ঞতা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারই কিছু খণ্ডচিত্র নিয়ে লিখতে বসলাম ।
আমি ‘লুক’ ভাল না। তাই চোখে খালি দুষ্টু জিনিস পড়ে। কিছু কিছু “অচলিল” বিষয় প্রসঙ্গক্রমে চলে আসলে মাইন্ড খাইয়েন না। এইটা কোন ভ্রমন কাহিনী না, এই দেশ পরিচিতিও না, শুধুই মজা করার জন্য লেখাগুলি লেখা।
১। দোজো বাহিনী - এইখানে এসে এক বিচিত্র ধরনের মানুষদের সাথে পরিচয় হল যারা দোজো নামে পরিচিত । এরা পারিবারিক ঐতিহ্যের কারনেই এখানকার পেশাদার শিকারী । যুগ যুগ ধরে এরা বনে জংগলে শিকার করে বেড়ায় । এদের পোশাকও খুব অদ্ভুত ।গায়ে আলখাল্লার মত জামা আর মাথায় বিচিত্র ধরনের টুপি । এরা সবসময়ের জন্য তীর-ধনুক অথবা বন্দুক নিয়ে ঘুরাঘুরি করে । ভাবখানা এমন যে বেশি তেড়িবেড়ি করলেই গুলি করে দিব কিন্তু ।
এদের মধ্যে প্রচলিত আছে বিভিন্ন রকম কুসংস্কার আর অন্ধ বিশ্বাস । দোজোরা বিশ্বাস করে কোন বন্দুকের গুলি কখনই তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না । এছাড়া শিকারে যাবার আগে নানারকম ঝাড়ফুক আর তুক্ তাক তো আছেই । বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো এইসব দোজোদের দেখলে মনে হয় যেন হঠাত টাইম মেশিনে করে একশ বছর আগে চলে এসেছি।
২। গার্লফ্রেন্ড আর জিগি জিগি - আইভরি কোস্টে এমনিতেই মেয়েদের অনুপাতে ছেলেদের সংখ্যা কম । উপরন্তু সদ্য যুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে এই সংখ্যা আরও হ্রাস পেয়েছে। তাই এইখানে ছেলেদের ব্যাপক ডিমান্ড । আর ছেলেরাও গড়ে তিন চারটা গার্ল ফ্রেন্ড রাখাকে নিজেদের নৈতিক দায়িত্ব বলেই মনে করে। ভাবখানা এমন, আমি না দেখলে মেয়েগুলোর কি দুর্দশাই না হত!!
তো বেশির ভাগ পোলাপাইনই কিন্তু আকামের ধাড়ি । সারাদিন রাস্তার পাশে,গাছের নিচে এক ধরনের বিশেষ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকে।
সারাদিন ঝিমায় আর আসল কাম শুরু করে সন্ধার পরে। রাস্তার আশে পাশে প্রচুর বার আছে আর এইখানে পানির চেয়ে বিয়ার সস্তা । প্রতিটা পাড়ায়-মহল্লায় নাইট ক্লাব আছে। কাজেই গলা ভেজানো আর গার্লফ্রেন্ডের সাথে দুষ্টুমি এবং সবশেষে জিগি জিগি!! জিগি জিগি কি? বুইঝা লন ।
৩। শক্তিবর্ধক সালশা-হালুয়া,আছেন কোন ভাই- ভাইরে,ভাবছিলাম শুধু আমাদের দেশেই মনে হয় রাস্তা ঘাট আর দাওয়াখানায় বলবর্ধক হালুয়া বিক্রি হয়। আফ্রিকায় দেখালাম আর এক কাঠি উপরে। একদিন ফুটপাথের পাশে গাড়ি পার্ক করে ফিরছি,একটা মার্কেটে ঢুকবো । এই সময় এক লোক ডাক দিল। ফ্রেঞ্চে যা বলল তার মানে হল আছেন কোন ভাই আমার এই সালশা নিবেন,...... লৌহ দণ্ডের ন্যায়.........দুই ঘন্টা স্থায়ী ইত্যাদি ইত্যাদি ।
তার সামনে টেবিলের উপর সাজানো বিভিন্ন রকম বোতলের সারি । আমাকে দেখে কি ঠাউরালো কে জানে ? তার হাত প্রসারিত করে দিয়ে দেখালো যে ওই ওষুধ ব্যবহারে বিশেষ প্রত্যঙ্গ এক হাত পরিমাণ লম্বা হবে। আমি বিপদ বুঝে তাড়াতাড়ি সটকে পরলাম । তবে তার আগে ভিন্দেশের এই কবিরাজের একটা ছবি তুলতে ভুল করলাম না । আর মনে মনে বললাম হে বিশ্ব জননী ভান্ডারে তোমার বিবিধ রতন। (চলবে)
ব্লগার মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ভাই বড় ভাল "লুক" । ওনার আজকে জন্মদিন। জন্মদিন শুভ হোক,জহির ভাই।