আমায় ক্লান্ত মালগাড়ী বলেছিল তার ঝক্কর ঝক্কর ধ্বনি শুনিয়ে;
পথভ্রান্ত তুমি! পথিমধ্যে তোমার কোন বিশ্রাম নেই।
তোমাকে যেতে হবে দূরে।
ঐ দূরের ফিকেয় যে গন্তব্য দেখা যাচ্ছে তার পরের সীমানায়।
ম্লান বদনে চেয়ে চেয়ে দেখেছি মালগাড়ীর পেছনের সর্তক বার্তা “দূরত্ব বজায় রাখুন”।
বাঁধ দেওয়া নদীর ঘাটে দাঁড়িয়ে দেখেছি বাঁশের চ্যাচড়ায় জমে যাওয়া শ্যাওলা।
একটা ঠিকানা। যেখানে থেমে গেছে প্রবাহ।
শ্যাওলায় জমাটবদ্ধতায় চোখ আমার।
আর কিছুই পড়েনি এ দুচোখে।
সন্ধ্যার সায়হ্নে দাঁড়িয়ে দেখেছি একটা কাকতাড়ুয়ার মিথ্যে অভিনয়।
দেখেছি তার জীর্ণ শরীরে কাক আর শালিকদের ফেলে যাওয়া চিহ্ন,
নির্বাক কাকতাড়ুয়া কিছুই করতে পারেনি।
আমি হতবাক চিহ্নগুলো মনে একে নিই।
রেইল স্টেশনে বেফাস হুইসেলে কান খাড়া করেছি,
চোখ দুটো উড়ন্ত পতাকায়।
কিছুই মিল পায়নি।
ট্রেনের স্টপেজে স্টপেজে দেখেছি জীবনযাত্রায় মানুষের উঠানামা,
আর ভেবেছি তাদের গন্তব্যের ভেতর-বাহির।
বহু গন্তব্য সীমানায় চিহ্ন রাখতে চেয়েছি, পারিনি।
পারিনি নিজের চিহ্ন রাখতে।
মুছে গেছে সময়ের আবর্তে, ঝড়-ঝঞ্ঝায় কিংবা ব্যস্ত মানুষের বেখায়ালে;
রাখতে পারিনি নিজেকে।
রাখতে পারিনি স্মৃতিস্মারক।
অথবা ঐ সব প্রতীকের যার কোন অর্থ পায়নি।