somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নস্টালজিক
পেশায় গীতিকার, লেখক। তড়িৎ কৌশল পড়া বাদ দিয়ে একদিন গীতিকার হব বলে বেড়িয়ে পড়েছিলাম শব্দের তালাশে। ইদানিং আবার বেড়িয়ে পড়তে ইচ্ছে হয়। এবার এই অন্তর্জাল থেকে। নস্টালজিক এর নাম শেখ রানা। নিজেকে চেনার পর হাতে বেশী সময় থাকে না।

গল্প শেষে-র গল্প

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত বছর চার গীতিকবিকে নিয়ে একটা অনলাইন আড্ডার আয়োজন করেছিলাম। সঞ্চালক হিসেবে মনে একটাই ভাবনা ছিল আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে গান ও গান সংক্রান্ত কিছু গল্প যেন উঠে আসে। আমাকে খুব অবাক করে দিয়ে অনেক গানপাগল মানুষ গীতিকবিদের এই অনলাইন আড্ডায় শরীক হলেন। সেই আড্ডা- সাক্ষাৎকারে মন খুলে কথা বললেন তিন গীতিকবি। শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, লতিফুল ইসলাম শিবলী আর নিয়াজ আহমেদ অংশু।

নব্বইয়ে বাংলা ব্যান্ডের একটা স্বর্ণযুগ গেছে। গান, ফ্যাশন মিলে তরুণদের আইকন তখন ব্যান্ডের তারকারা। প্রচুর ক্যাসেট বের হতো সে সময়। চারপাশে গান আর কনসার্টে গমগম একটা ধ্বনি। সেই তুমুল ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে আমি রেনেসাঁ, ফিড ব্যাক, সোলস, এল আর বি, আর্ক, ফিলিংস, ওয়ারফেজ, উইনিং...সবার গান শুনতাম। লিরিক থেকে শুরু করে গিটার বা কী বোর্ড পিসশুদ্ধ মাথায় ঘুরতো। লিরিক পড়ে গান শুনতে শুনতে গান এবং গান সংশ্লিষ্ট মানুষের সাথে এক ধরনের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল । আমার এবং আমাদের সমবয়সী প্রায় সবার। যারা বাংলা গান ভালোবাসতেন।

আজ যে শিশু, হৃদয় কাদামাটির কোনো মূর্তি নয়, একদিন ঘুম ভাঙা শহরে, আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি, প্রিয় আকাশী, হাসতে দেখো গাইতে দেখো, আহা! জীবন, বৃষ্টি দেখে অনেক কেঁদেছি, মেয়ে, এ শহর ডুবে যায়, জন্মহীন নক্ষত্র... এত বছর পরেও এই গানগুলোর ঔজ্জ্বল্য ম্লান হয়ে যায় নি। হবেও না কোনোদিন। পরিচিত গান এর তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। এখানেই তাই থামলাম। জঙ্গী ভাই, শিবলী ভাই আর অংশু ভাই এর লেখা প্রিয় এবং জনপ্রিয় গানের তালিকা লিখতে গেলে মুশকিল হয়ে যাবে! গল্পে ফিরি বরং।

আড্ডা থেকে যখন বই করব ভাবছিলাম, কলেবর বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। তিনজনাই আমার বইয়ের পরিকল্পনা শুনে সানন্দে সম্মতি দেন। আরো সময় দেন। আমিও নতুন প্রশ্ন সাজিয়ে আলাদা আলাদা করে তিন গীতিকবির সাথে বসে যাই। আড্ডা হয়, সাথে বইয়ের রসদ জমতে থাকে। এইসব কর্মযজ্ঞে আমার ক্লান্তি নেই কোনো।

নব্বইয়ের স্বর্ণযুগের গল্প, সাউন্ড গার্ডেন থেকে অডিও আর্ট, সৈকতচারী থেকে সোলস অথবা বামবা শুরুর সুত্র ধরে হোটেল ব্লু নাইল। সেই হোটেল ব্লু নাইল, যেখানে একসময় নিয়ম করে ব্যান্ড সংশ্লিষ্ট প্রায় সব মিউজিশিয়ান নিয়মিত আড্ডা দিতেন। প্রিয় আকাশী, একদিন ঘুম ভাঙা শহরে আর জন্মহীন নক্ষত্র সহ বেশকিছু গানের পেছনের গল্প। অথবা এইসব গল্পে গল্পে উঠে আসা গীতিকবিদের লুকোনো আক্ষেপ, রয়্যালটি, কপিরাইট নিয়ে মনখোলা কথা আর গীতিকবি হয়ে ওঠার গল্প। সাথে হাতে লেখা লিরিক আর কিছু দূর্লভ ছবি। সব মিলে গল্প শেষে বইতে পাঠকের জন্য মনের খোরাক মেটানোর নানারকম বর্ণিল উপাদান রয়েছে।

আমি সম্পাদনা করতে বসে বিভিন্ন ভাগে লেখাগুলো সাজিয়েছি। যে কোনো লেখা শেষ হলে লেখকই হয় তার লেখার প্রথম পাঠক। পাঠক হিসেবে বলতে পারি, বাংলা গানের বুঁদ হয়ে থাকা শ্রোতা হিসেবে গল্প শেষের পান্ডুলিপি আমাকে প্রভূত আনন্দ দিয়েছে।

পান্ডুলিপির শেষ লাইন শেষ করে আমার মনে হয়েছে বাংলা ব্যান্ডের গান নিয়ে ভালো একটা আর্কাইভ হয়ে থাকবে এই বইটা।

গল্প শেষে নামটা নিয়েছি অংশু ভাইয়ের স্বপ্ন-২ গান থেকে। নাম নিয়ে যখন ভাবছিলাম হুট করে এই গানটা মাথায় এলো। মনে হলো, তাইতো! গল্প শেষে আমরা হারিয়ে যাব। সবাই কী হারিয়ে যাব? নাকি গল্প শেষে আসলে একটা মেটাফোর। একটা গল্প শেষ মানেই একটা গল্প শুরু! একটা নতুন গল্প শুরু। তাতে আনন্দ বেদনার কথা আর গান থাকে, অন্তরালে।

আমার প্রস্তাব শুনে সাগ্রহে রাজী হবার জন্য চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী আর ফাহাদকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। এই বইটার প্রচ্ছদ আমার খুব পছন্দ হয়েছে। করে দিয়েছে আমার বিজ্ঞাপন জগতের প্রিয় সহকর্মীদের একজন। শাফিন চৌধুরী বাবু।

আরো কিছু কৃতজ্ঞতা নোটস আছে। সেগুলো বইয়ে তোলা থাকলো। কিছু গল্প থাকুক বরং।

গল্প শেষে বই এর প্রি অর্ডার শুরু হয়েছে। ব্লগের সবাইকে লিঙ্ক দিয়ে রাখছি।

গল্প শেষে আপনাদের হাসিমুখ থাকুক।

রকমারী লিঙ্কঃ Click This Link

৩০% কমিশনে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনা পেজ এর লিঙ্কঃ Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×