somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'ট্রাবলড পেরিফেরি: ক্রাইসিস অব ইন্ডিয়া'স নর্থইস্ট': শান্তিবাহিনী ও বর্মী বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিল ভারত

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

১৯৭৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনীর প্রতি ভারত তাদের গোয়েন্দা সংস্থা 'র'- র সমর্থন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর প্রস্তুতি নেয়। ওই বছরই নির্বাচনে হেরে গিয়ে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতাচ্যুত হন।

সম্প্রতি প্রকাশিত 'ট্রাবলড পেরিফেরি: ক্রাইসিস অব ইন্ডিয়া'স নর্থইস্ট' বইতে সাংবাদিক ও লেখক সুবীর ভৌমিক এরকম নানা বিষয় তুলে ধরেছেন।

পেশায় সাংবাদিক ও গবেষক সুবীর ভৌমিক গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমারের কাচিনে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর ইন্ধনে 'র'- র 'সম্পৃক্ততার' নানা খুঁটি-নাটি তুলে ধরেছেন তার বইয়ে।


পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনীর গণহত্যা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়বে কি?

তবে লেখক বলেছেন, সংস্থাটির নিজস্ব কোনো উদ্যোগ নয়, সর্বোচ্চ মহলের সক্রিয় নির্দেশনায়ই তাদের এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো।

সুবীর ভৌমিক লিখেছেন: "শান্তিবাহিনীকে ভারতের সমর্থনের পেছনে তাৎক্ষণিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করেছিল শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যা করে বাংলাদেশে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থান। ভারতের কাছে এটাকে মনে হয়েছিল তার বিরুদ্ধে জোর রাজনৈতিক বিরোধিতা। ওই অভ্যুত্থানের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে 'র' এর সিনিয়র কর্মকর্তারা আগরতলার রাজধানী ত্রিপুরায় গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চায় এমন চাকমা নেতাদের খুঁজে বের করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।"

শান্তিবাহিনীর গেরিলা কমান্ডার ও 'র'-র সদস্যদের বিশদ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সুবীর ভৌমিক এরকম নানা তথ্য তুলে ধরেছেন।

লেখকের মতে, ১৯৭৭ সালে নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর পরাজয় সেইসময়ে বিদ্রোহ ও অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশকে বড় ধরনের দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেছিল।

"যখনই ভারতের পক্ষ থেকে শান্তিবাহিনী গেরিলাদের শক্তিবৃদ্ধিতে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এগুনোর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো তখন ইন্দিরার পরাজয়ের খবর আসে। তবে এটি নিশ্চিত নয় ইন্দিরা গান্ধী কতটুকু যেতে চেয়েছিলেন।.."

সুবীর ভৌমিক লিখেছেন, মোরারজী দেশাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে র'- র তৎপরতা জোরদারের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। তিনি বলেছেন ইন্দিরা ক্ষমতায় ফিরে এলে শান্তিবাহিনীর প্রতি ভারতের সমর্থন পুনরায় শুরু হয়েছিল। তবে ততোদিনে অন্তর্কলহে শান্তিবাহিনীর অবস্থা ক্ষতবিক্ষত এবং ওই সময়ই নিহত হয়েছিলেন বাহিনীর নেতা এমএন লারমা।

আগরতলা 'র'- র স্টেশন চিফ পরিমল ঘোষ সে সময় শান্তিবাহিনীর গেরিলাদের বিবাদ মীমাংসায় দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তিও করে দিয়েছিলেন বলে বইয়ে উল্লেখ করা হয়।

এই পরিমল ঘোষ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। একজন বিএসএফ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি মুক্তিফৌজের হয়ে শুভপুর ব্রিজ এলাকায় যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন।

সুবীর ভৌমিক তার বইয়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্র"প কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মির (কেআইএ) ওপর ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'র' আধিপত্য বিস্তারের পুরো প্রক্রিয়াটিও তুলে ধরেছেন।

বইয়ের তথ্য অনুযায়ী উত্তর-পূর্ব ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তারা আর সমর্থন করবে না এটি নিশ্চিত করতে 'র' কেআইএ- কে অস্ত্র দিতে শুরু করে। আর এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে যিনি সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন সফলতম র' কর্মকর্তাদের একজন হিসেবে বিবেচিত সেই বি.বি নন্দী এক সময় ঢাকায় 'র' এর স্টেশন চিফের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ব্যাংককে স্টেশন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি মিয়ানমারের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন বিশেষ করে কাচিন এর সঙ্গে 'র' এর সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এবং বাংলাদেশের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করায় অবসরে যাওয়া বি বি নন্দী 'র'-র তীব্র সমালোচনা করেন।

বইটিতে উত্তর-পূর্ব ভারতে ভূমি, ভাষা, নেতৃত্ব, আদর্শ, ধর্ম-- এসব নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং এ সংকট থেকে উত্তরণে একটি কর্মকৌশল তুলে ধরেছেন লেখক।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৫৬
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×