যা শুনলাম।
খুব ঘনিষ্ট, যারা ভোট দিয়েছেন, যারা নৌকার এজেন্ট হয়েছিলেন। শিক্ষক বন্ধু যিনি ভোটকেন্দ্রে পোলিং ডিটিতে ছিলেন। এদের কাছেই শোনা, বিচ্ছিন্ন ভাবে।
বাক্স খালিই ছিল, নৌকা, তালপাখা ও ছাতার এজেন্টের সামনে খালি বাক্স দেখিয়ে সিল করা হয়। বিএনপির কোন এজেন্ট ছিল না।
নৌকার এজেন্ট ছিল একাধিক, অন্য মার্কার নামে বা গায়ের জোড়ে।
সকালে সবাই নরমালি ভোট দিচ্ছিলেন, বাইরেও বড় লাইন। ১২টা পর্যন্ত কোন অনিয়ম হয় নি।
ব্যালট বইএর মুড়িতে সাইন/টিপসই ছাড়া কাউকে ব্যালট দেয়া হয় নি।
১২টার পর যখন বোঝা যায় ধানের শিষের কেউ আসবে না, বাহিরেও বিএনপির কেউ নেই তখন আস্তে আস্তে সাহস বাড়তে থাকে।
প্রথমদিকে ভোটারের দেয়া সিলমারা ব্যালট নিয়ে বলে আমি ঢুকিয়ে দিচ্ছি।
ঘন্টা খানেক পর বাক্সে ঢুকানোর আগে ব্যালটের ভাজ খুলে দেখা হচ্ছিল, যদিও সব ভোটই নৌকার ছিল।
আরেকটু পর আরো সাহসী - নৌকার ব্যাজ থাকলে বলা হচ্ছিল - সিলটা এখানেই মারেন, আপনিতো নৌকারই।
আরেকটু পর আরো বেশী সাহস, নৌকার ব্যাজ না থাকলেও বলা হচ্ছিল। - ভাই সিলটা এখানেই (নৌকায়) মারেন।
তবে মানুষ দেখে বলা হচ্ছিল, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ভদ্রলোকদের কিছু বলা হয় নি, তারা নির্বিঘ্নে ইচ্ছামত ভোট দিয়েছেন।
বলার পরও প্রকাস্যে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকেও বাধা দেয়া হয় নি, ইচ্ছামত দিতে পেরেছেন।
তবে সেই কেন্দ্রে গনহারে সিল মারা হয়নি।
শিক্ষক যিনি সেই রুমে পোলিং ডিটিতে ছিলেন তিনি বলেছেন অন্য কেন্দ্রে কি হয়েছে জানি না, তবে আমার কেন্দ্রে গনহারে সিল মারা হয়নি, দরকারও হয় নি, বোঝা যাচ্ছিল প্রায় সব ভোটই নৌকার।
এছাড়া বিএনপি আনেক ক্ষেত্রে নেগেটিভ প্রচার করে গেছে।
যাত্রাবাড়ি এলাকায় ধানের শীষের প্রার্থী নবী উল্লাহ নবীর কোন প্রচারণা দেখা যায় নাই। এমনকি কোন পোস্টারও না। আজ দুপুর দেড়টার দিকে খবর পাওয়া যায় নবী উল্লাহ নবী তার নেতা কর্মীরে নির্দেশ দিছে, তাদের সব ভোট যেন নৌকায় পড়ে।
এর উদ্যেশ্য কিন্তু মামু নিজের বাঁশ নিজে খাওয়া না, এর উদ্যেশ্য এই নির্বাচনরে পরিকল্পিত ভাবে বিতর্কিত করা।
যদি একটি এলাকায় এমন ঘটনা ঘইটা থাকে, তবে ফলাফলের পর ধরেই নেওয়া যায়, তাদের কিছু কেন্দ্র বাদে প্রায় দেশের সব যায়গাতেই একই পলিসি গ্রহণ করা হয়।
কেন্দ্র ও রুম অনুযায়ী এবারই প্রথম ভোটার সংখা গুনে সেই সংখক ব্যালট দেয়া হয়েছে।
ব্যালট বই ব্যালটের সিরিয়াল নাম্বার রুম অনুযায়ী কঠিন ভাবে ডিজিটালি সংরক্ষন করা হয়েছে।
ব্যালটের মুড়ি (কাউন্টার ফয়েল) এ ভোটারের আইডি দেখে সিগ্নেচার/টিপশই ছাড়া একটি ব্যালটও দেয়া হয় নি।
প্রতিটি ব্যালটে প্রিজাইডিং বা পোলিং অফিসারদের সাক্ষর মাষ্ট। এটা কঠিন ভাবে মেনে চলা হয়েছে।
সকল প্রিজাইডিং অফিসারদের এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্দেশ দেয়াছিল। (সাম্ভাব্য পুনগননা, মামলা তদন্ত বা বাক্স আদালতে তলব ইত্যাদির ভয়ে) হাসিনা এত কাচা কাজ করে না।
প্রতিটি ভোটারের আংগুলের ছাপ, নমুনা সিগ্নেচার (বায়োমেট্রিক রেকর্ড) কেন্দ্রিয় ডাটা সেন্টারে সংরক্ষন করা আছে।
অব্যাবহৃত ব্যালট গুনে সাইন করে জমা দিতে হয়েছিল রিটার্নিং অফিসারের কাছে।
একটি ব্যালটও এদিক ওদিন হয়নি
যেসব কেন্দ্রে (৩০/৪০ টি কেন্দ্রে) বেশী বাড়াবাড়ী/অনিয়ম হয়েছিল সেসব কেন্দ্র ভোট বন্ধ করে বাতিল ঘোষনা হয়েছে।
যাদের ভোট তাদের এজেন্ট কর্মি উপস্থিত না থাকলে এমনটাই তো হবে। হওয়াই উচিত।
বিএনপি জোট বা ঐক্যজোট, নেতারা ছিল ঢাকা নির্ভর, মুলত মিডিয়া ক্যামেরা নির্ভর।
তারা ভোটারের কাছে কখনোই যায় নি।
অপেক্ষায় ছিল কোন অপশক্তি হয়ত তাদের কোলে করিয়ে বসিয়ে দিবে।
এবারের নির্বাচনে পুর্বে বহুল ব্যবহৃত - 'ধর্ম ইশু' (ইসলাম বিপন্ন) ও 'ভারত যুযু' আসেনি।
মুল ইশু বলতে - খালেদাজীয়ার মুক্তি। সেটা মানুষ নেগেটিভ ভাবে নিয়েছে।
মুল নেতা ড কামাল, জাফরুল্লা নির্বাচনে দাড়ান নি, এখানেইতো মনস্তাত্তিক ভাবে পিছিয়ে পড়া।
এছাড়া
ভোট প্রচারনায় বিএনপি একদমই ছিলো না,
পোষ্টার লাগায় নি, লাগানোর চেষ্টাও করেনি। আসলে একটি পোষ্টারও ছাপায় নি (শুধু জোটের জামাতের পোষ্টার দেখা গেছে)
ভোটার স্লিপ বিতরনেও বিএনপি ছিলো না,
এদেশের নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। বিম্পি প্রার্থিরা প্রচারে ১০ টি টাকাও খরচ করেছে কিনা সন্দেহ ।
এজেন্ট নিয়োগে বিএনপি ছিলো না, উপস্থিত থাকার কথাও না।
নির্বাচন কমিশন সপ্তাহ আগে এজেন্টদের নামের তালিকা চেয়েছিল সব দলগুলোর কাছে।
বিএনপি এজেন্টদের নামধাম বা কোন তালিকা দেয় নি।
ভোট কেন্দ্রে বিএনপি নেতা কর্মিরা ছিল না। গেটেও ছিলনা, একটু দুরেও ছিলনা থাকার চেষ্টাও ছিলো না, বাসায় বসে টিভি দেখছিল।
ভোটারদের চা বিড়ি খাওয়ানোর জন্য বিম্পির কেউ ছিলনা (জামাতের ছিল)
একজন বয়ষ্ক ভোটার বলেছেন "যিনি আমার কাছে এসেছেন, ভোট চেয়েছেন, আমার কাছে হাত ধরে নত হয়েছেন তাকেই ভোট দিছি"।
ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনার কাজেও বিএনপি ছিলো না,
অজ্ঞাত কারনে প্রায় সব বিম্পি প্রার্থী নিজের ভোট প্রদান করেননি। ভোটকেন্দ্রের কাছেও আসেন নি। বাসায় ছিলেন।
সাত সকালে ঢাকার এক ভিআইপি প্রার্থি শুদ্ধ ভাষায় বলে "আমি ভোট দিচ্ছি না"।
তাহলে তাদের মার্কায় ভোটটা দিবে কোন শালায়।
আমার মতে শুন্য ভোট পেলেও অবাক হওয়ার কথা ছিল না
বিএনপি জামাতের হয়ে বিবিসি আগের মতই শুটিং করেছে।
বিবিসি ক্যামেরার সামনে এসব অভিনয় করানো হয়েছে।
লোকটা ক্যামেরার সামনে সরাসরি তাকিয়ে বাক্সের জিনিস দেখিয়ে দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে!
কোনটা বাস্তব কোনটা অভিনয় বুঝতে সমস্যা হয় না
আমরা কি শুটিং অভিনয় কিছুই বুঝিনা?
ঘটনা বাস্তব হলে একজন বাক্স ধরতো, আরেক জন পাছা দিয়ে আড়াল করে রাখত। সবার চোখে লুকোচুরির একটা ভাব থাকতো। ক্যামেরাম্যানকে ধমক দিত।
বিবিসি সিএনেন আলজারিরার এরুপ ভুমিকা শুটিং নাটক আমরা আগেও দেখেছি।
২০১৩ তে এি তিন বিদেশী মিডিয়া ক্রমাগ্রত ভাবে শাপলা চত্তরে ৩০০০ মৃত্যুর দাবি করে যাচ্ছিল।
শুটিং অভিনয় চলছিল বিরামহীন।
একটি কবরস্থানে সারি সারি কবর। একজনকে (কবরখোড়ার শ্রমিক) অভিনয় করে তাকে শিখানো কথা বলাচ্ছিল, -
"এখানে মাত্র হাজার হাজার রক্তাক্ত লাশ কবর দেয়া হয়েছে"।
শুধু দেশটা বাংলাদেশ বলে এরা পার পেয়ে গেল।
একই ধরনের মিথ্যা নাটক তৈরি করার দায়ে মিসর, ইরান ও তুরষ্কে বিবিসি ও আলজারিরার অনেক সাংবাদিক এখনো জেল খাটছে, মৃত্যুদন্ডের মুখোমুখি।