চামেলীবাগে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান সুপরিকল্পিত হত্যার শিকার। হত্যাকাণ্ডের পরপরই তাদের একমাত্র কিশোরী কন্যা স্কুলছাত্রী ঐশী রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এতবড় নৃশংস জোড়া খুনের তদন্তে অন্য কোন বিষয় বিবেচিত হতে দেখা যায়নি।
এত ছোট স্কুলছাত্রী মেয়ে অষ্পষ্ট মোটিভে কিভাবে একসাথে দুজনকে হত্যা করতে পারে স্বীকারক্তি ছাড়া অন্যকোন আলামত পাওয়া যায়নি। পরে কিছু আলামত সাজানো হয়েছিল। হতভাগ্য উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার দম্পতি সম্ভবত নিহত হয়েছিলেন সম্ভবত তার সহকর্মীদের বা তার কাছের লোকজনদের হাতেই। ঘুষ, পোষ্টিং, কালোটাকার ভাগাভাগিতে সেটাই সম্ভব। বা অন্য কোন ব্যাপার ছিল কিনা তদন্তে তার ধারকাছেও যাওয়া হয়নি।
ঐশী রহমান ছিল তাদের একমাত্র মেয়ে। একাকিত্তে ভোগা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলছাত্রী অনেকের মত সেও উশৃংখল, কিছুটা মাদকাসক্ত ছিল। ষড়যন্ত্রকারিরা সেটারই সুযোগ নিয়েছে, পিতামাতা হারানো অভিবাভকবিহীন নিরিহ শিশুটিকে হত্যাকারি সাজানো হয়। বার বার দীর্ঘ রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে তার কাছ থেকে স্বীকারক্তি নেয়া হয়। স্বীকারোক্তি ভুয়া। এতটুকু ছোটো বাচ্চা মেয়ের কাছে থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি লিখে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছিল।
মিডিয়াগুলো কোন প্রশ্ন উত্থাপন না করেই এসব গ্রহণ করেছিল। কারণটা স্পষ্ট। একটি ফুটফুটে সুন্দর কিশোরী মেয়ের ড্রাগ এডিক্সান, ছেলেদের সাথে উশৃংখলতা .. সব রগরগে খবর, লাখ লাখ সার্কুলেশন, ইটিপি বৃদ্ধি। অযথা প্রশ্ন উঠিয়ে এসব পানসে করার কোন মানে হয় না। বরং আরো বানোয়াট যোগ করে রগরগে নিউজ বানাও।
হত্যার সহযোগিরাই তদন্তে নিয়োজিত ছিল। স্কুল বয়স রেকর্ড অগ্রাহ্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের রেকর্ড গায়েব করে করে বেশি বয়স দেখানো হয়। অবশ্য কিছুদিন পর নির্যাতন আঘাত সামলে সুস্থ হয়ে আদালতে তার স্বীকারক্তি প্রত্যাহার করে।
সাধারন কমনসেন্স বলে এত ছোট মেয়ে কোনমতেই দু’জন বলিষ্ঠ প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষকে হত্যা করতে পারেনা। কঠিন চার্জশিট দিয়ে প্রায় নিরবে বিচারও সম্পন্ন হয়ে গেছে, রায় আগামি সপ্তাহে। তার কোন অভিভাবক না থাকায়, শক্ত ডিফেন্ডিং লইয়ার না থাকায় সে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে বলেই মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪০