তাই সান্ধ্যকালীন কোর্সের নামে যে চেষ্টা চলছে তা চলা উচিত নয়। করলে কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে দুটি শিফট চালাতে পারে। অর্থাৎ একেবারে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। সবাই কম খরচে পড়তে পারবে। তখন প্রশ্ন উঠবে অবকাঠামো সমস্যা ও লোকবল সঙ্কট নিয়ে। কারণ কর্তৃপক্ষ প্রায়ই আবাসন সঙ্কট ও অবকাঠামোর সমস্যার কথা বলে। অথচ এই সমস্যার মধ্যে কর্তৃপক্ষ সান্ধ্যকালীন বাণিজ্যিক কোর্স চালু করতে চায়।
এবার আমার কথা বলি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এ বছর প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়ে মাস্টার্স পাস করেছি। অনার্সেও একই ফলাফল ছিল।
অথচ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ারই কথা ছিল না। দারিদ্র্য ও পারিবারিক অশানি-র কারণে ২০০০ সালে কোনোমতে এসএসসি পাস করেছি। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে নম্বর ছিল ৮২৬।
কলেজে পড়া নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজ সেই বার ঘোষণা দিল অন-ত ৭৭৫ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থী বিনাবেতন ও খাওয়া-দাওয়ায় পড়ার সুযোগ দেবে। সুযোগটি নিলাম। দুই বছর সাপ্তাহিক হাত খরচ ছাড়া কোনো খরচ হয়নি। ২০০২ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পেলাম ৮০০ নম্বর।
ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ ইউনিটে চান্স পেলে হিসাব বিজ্ঞান পড়বো নয় তো ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে সাংবাদিক হতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়বো। নয় তো আর পড়াশুনা করবো না। কারণ আমাদের সেই সামর্থ্য নেই। গ ইউনিটে চান্স পাইনি।
ঘ ইউনিটে চান্স পেয়ে সাংবাদিকতায় ভর্তি হলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস'ায় টিউশনি ও সাংবাদিকতা দুটোই করেছি। এখন পড়াশুনা শেষ। দেশের প্রথম সারির একটি দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদকের কাজ করছি। মাঝে মধ্যে রিপোর্টিংও করি। আমার লক্ষ্য আমার ভুল বা অসতর্কতার কারণে কোনো ভুল প্রতিবেদন যাতে ছাপা না হয়, যেনো কারো ক্ষতি না হয়।
সবশেষে বলতে চাই শিক্ষাটা যদি পুরোটাই বাণিজ্যের হাতে চলে যায় তবে আমার মতো শিক্ষার্থীরা কোনোদিন উচ্চতর শিক্ষা নিএত পারএব না।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৪