এখনো বিয়ে করিনি। করবো। মাস্টার্স ও চাকরি পাকাপোক্ত হওয়ার পর। আমার পরিবারের সঙ্গে গোলাপীদের (ছদ্মনাম) পরিবারের সঙ্গে আকাশ পাতাল তফাৎ। সেই আকাশ থেকে নেমে গোলাপী আমাকে ভালোবেসেছে। আমাদের ভালোবাসার ব্যাপারটা গোলাপীদের বাসার সবাই জানে। আমি এখনো শ্বশুর আব্বার কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেইনি। দিব। কিছুদিন পর।
আমার শ্বশুর আব্বা যদি বলে আমার মেয়েকে তো তুমি ঠিকভাবে রাখতে পারবে না। আমি জবাব দেব আর যাই হোক অন্তত আপনার চেয়ে ভালোভাবে রাখতে পারবো।
আমি এই কথা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারবো। কেননা আমার শ্বশুর আব্বা যথেষ্ঠ কিপটা। শুদ্ধভাষায় যাকে বলে কৃপণ। যে লোক তিন তিন বার সংসদ সদস্য ও হুইপ ছিল, গ্রামে যার শতাধিক বিঘা জমি ও মার্কেট আছে তার মেয়ে যদি ক্যাম্পাসে দুপুরে না খেয়ে বাসায় যায় তবে কী বলবো বলেন।
আজকের ঘটনাই বলি। গোলাপীর কাছে ১২০ টাকা ছিল। বান্ধবী তানভী হাওলাত চাইলো দিয়ে দিল ৫০ টাকা। ফটোকপি করতে খরচ হল ৪০ টাকা। রইল ৩০ টাকা। এই টাকা দিয়ে দুপুরে খাবার খাবে নাকি বাইরের বাসে উত্তরায় যাবে। (ভার্সিটির বাস মিস তাই বাইরের বাসে যেতে হবে।)
অন্য সময় আমার কাছে টাকা থাকত। গত তিন মাস ধরে যে বেতন পাচ্ছি বাসায় টাকা দিয়ে তাতে আমিই চলতে পারছি না। গোলাপী আজ ক্যাম্পাস থেকে না খেয়েই বাসায় গিয়েছে। খুব খারাপ লেগেছে।
গোলাপীর বাবা দৈনিক ১০০ বা তারও কম টাকা দৈনিক হাত খরচ দেয়। এই টাকা দিয়ে উত্তরা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া আসা, দুপুরে খাওয়া, ফটোকপি, রিকশা ভাড়া কি সম্ভব?
অথচ গোলাপীর বাবা তার ছেলের জন্য যথেষ্ঠ টাকা খরচ করে। আমি অন্তত সবাইকে বলতে চাই ছেলে হোক বা মেয়ে হোক কোনো সন্তানের প্রতি বৈষম্য করবো না।