গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনের সিগনাল থেকে বেশ কয়েকজন যাত্রী বাসে উঠতে চাইলো। কন্ডাক্টর উঠতে দিল না। বললো-দাঁড়াইয়া নেওন যাইবো না। যাত্রীরা নেমে গেল।
গেটলক বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়ার নিয়ম নেই। যেখানে যাত্রী নামুক নির্দিষ্ট ভাড়া দিতে হয়। আশীর্বাদ পরিবহনে নিউমার্কেট থেকে মিরপুর এক নম্বর যেতে ১০ টাকা। আবার মিরপুর এক নম্বর থেকে দুয়ারীপাড়া রূপনগর যেতে লাগে ৫ টাকা।
কন্ডাক্টর ভাড়া চাইতে এলে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা বললো তারা ঢাকা কলেজের ছাত্র। ভাড়া লাগবে না। কন্ডাক্টর নতুন ছিল তাই সে বাস চালককে জানালো। এরপর সে ভাড়া নিলো না।
বললো- মামা চারজন যাত্রী তয় দাঁড়াইয়া নিতাছি। সমস্যা নাই তো?
ছাত্ররা বললো: তুমি কয়জন দাঁড়াইয়া নিবা এটা তোমার ব্যাপার।
গাড়িটি শুক্রবাদ এসে একজন মাত্র যাত্রী পেল। বাসের লাইনম্যান/সুপারভাইজার এসে যাত্রী সংখ্যা গণনা করলো। কন্ডাক্টর জানালো ঢাকা কলেজের চারজন আছে। তিনি হিসাবের খাতা থেকে তিনজনকে বাদ দিলেন। পুরো বাস আসন ভর্তি থাকলেও হিসাবের খাতায় তিনটি আসন ফাকা রইলো।
এবার ছাত্রদের সংলাপ:
প্রথম ছাত্র: আরে ব্যাটা একদিন আশীর্বাদের এক গাড়ি ধইরা ক্যাম্পাসে আটকাইয়া রাখছিল বড় ভাইরা। এরপর আর ভাড়া নেয় না। অরা কোটি কোটি টাকা কামায়। এ টাকা না নিলে অগো কিছু হইবো না।
দ্বিতীয় ছাত্র: সেফটি গাড়িতেও তো ভাড়া লাগে না তা জানোস। (সেফটি পরিবহন ঢাকেশ্বরী থেকে মিরপুর ১২ নম্বর হয়ে রূপনগর যায়। এই গেটলক গাড়ির ভাড়া ১৫টাকা।)
প্রথম ছাত্র: হ জানি। একদিন দুপুরে সেফটির বড় বাসে কলেজের ১৫ জন উঠছিল। এরপর থিকা সেফটির বড় বাস দেখা যায় না।
এবার ছাত্রদের ব্যক্তিগত সংলাপ:
দোস্ত টেনশনে আছি অস্ট্রেলিয়া যাইতে পারমু কিনা। ভিসা পামু কিনা।
তাদের আলাপে বুঝা গেল- ১০-১৫ টাকা দেওয়ার মতো দরিদ্র তারা নয়।
দুপুর আড়াইটায় মিরপুর থেকে আসাদগেট আসার জন্য আবার আশীর্বাদে উঠলাম। এবার সরকারি বাঙলা কলেজের এক ছাত্র উঠল। সুপারভাইজার যাত্রী সংখ্যা লিখতে এলে তিনিও তার পরিচয় দিলেন। যথারীতি পুরো গাড়ি পূর্ণ থাকা সত্ত্বেও একজন কম লেখা হলো।
গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছিলাম বাঙলা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজের সামনের রাস্তার মাঝে সেফটি, বিকল্প কুইক সিটিং গাড়ি জোর করে গাড়ি থামিয়ে উঠতো। কোনো ভাড়া দিতো না। আজ দেখলাম ঢাকা কলেজের ছাত্ররাও বিনা পয়সায় যাতায়াত করছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:২৩