আমরা বিবেকবান, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত । তাই আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে পাখি ডাকা সিন্ধ সকালে আস্তে আস্তে কোমল হাতের স্পর্শের অনুভূতি দিয়ে বিছানা থেকে সজাগ করে তুলি । তারপর সুন্দর করে ফ্রেশ করে ভালো ভালো খাবার খাইয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেডি করে প্রাইভেট কারে করে স্কুলে নিয়ে যাই স্কুলে । আবার টিফিন এর সময়ে উন্নত খাবার বাবা মা তাদের আদরের সন্তান কে খাওয়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন । স্নেহের সন্তানটির শরীরের কোথাও যেন একটু ব্যাথা তো দূরের কথা ফুলের আচরও যাতে না লাগে সেদিকে তাদের সুনজরের অভাব নেই । যাই হোক বাবা অথবা মা স্কুল ছুটির আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাদের প্রিয় অতি আদরের সন্তান কে বাসায় নিয়ে আসে । আবার পরিস্কার হয়ে স্বাস্থ্যকর ঘুম থেকে উঠার পর স্ন্যাকস খাবার টুকু খেয়ে কম্পিউটারে গেমস খেলতে বসে । তারপর বাবা মায়ের পরম স্নেহে বেড়ে উঠা ভদ্র সন্তানটি হাউজ টিউটর এর কাছে আগামীকালের পড়াটুকু কাভার করে নেয় । এভাবেই সোনার পালঙ্কে চড়ে চড়েই আদরের সন্তানদের জীবন চলতে থাকে ।
এখন আসুন অন্য প্রসঙ্গে ,
ফুল বিক্রি করে এমন একজন ছোট্ট ছেলে বা মেয়ে ( প্রতিকী ) তার লাইফস্টা কেমন ?সোনার পালঙ্কে ঘুমানোর কপাল নিয়ে জন্মায়নি তাই ফুটপাত, উদ্যানের মধ্যে কোন অস্থায়ী পলিথিনের তাবু থেকে সকালে ঘুম থেকে সজাগ পাওয়ার পর মাথার নিচ থেকে ইট টা সরিয়ে চলে ফুল কুড়াতে । ফুল কুড়িয়ে একটা জায়গায় বসে নিখুত হাতের শিল্পের কারুকাযের্ তৈরি করে ফুলের মালা । প্রেমিক প্রেমিকাদের মাঝে নাকি এই মালার কদর অনেক বেশী । কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা কাপলরা তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেয় । সময় সকাল গড়িয়ে প্রায় বিকেল মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘরে কয়টা টাকা পায় । সে টাকায় কেনা কিছু খাবার নিয়ে রাতের বেলায় ফিরে পলিথিনে ঘেরা ঘরে যেখানে রোগাক্রান্ত মা হয়তো খাবারের জন্য উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৬:৩৮