সকাল ১০ বেজে ৪৫ মিনিট । এমন সময় আমার মোবাইলে রিং বেজে উঠলো । আমি নিউ মার্কেট থেকে হলে এই মাত্র এসেছি । দেখি সোনিয়ার ফোন কল । নিউমার্কেট থেকে আসার ক্লান্তি ভূলে গেলাম । তৎক্ষনাৎ ফোন রিসিভ করলাম , কিন্তু ওপাশ থেকে সোনিয়া কোন কথা বলছে না । আচমকা আমি ভয় পেয়ে গেলাম । কোন দিন তো এরকম সোনিয়া আমার সাথে এরকম করে নাই ।
হ্যালো ....হ্যালো ...একটু পর হঠাৎ কান্নার আওয়াজ শুনে আমার মনটা বিষিয়ে উঠল। এখন আমার জীবনের মধ্যে ভয়াবহ রূপে ক্লান্তি চলে আসল । কি হইছে সোনা কথা বলো । সোনিয়া বলল ,আমার দুলাভাই আমার বিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে । আজকে নাকি আমাকেসহ পাত্র দেখাতে নিয়ে যাবে ।পছন্দ ঞলেই কাবিন করে ফেলবে । কি বলছ এসব আমি বিশ্বাস করতে পারছি না.,..কথাটি বলে সোহাগ দিশেহারা হয়ে গেল । হলরুমে ঢুকে কাথা মুড়ি দিয়ে হাউ মাউ করে কাদতে লাগল ।ইতোমধ্যেই সোহাগ সোনিয়ার বড় বোনকে মোবাইল ফোনে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছে ‘’আপু আমার যেন আজকে মৃত্যু না হয় ”
কথা চলছে কিন্তু কিছু কিছু কথা আমরা না বুঝলেও ওরা দুজন হয়তো ঠিকই বুঝতেছে । সকলের প্রত্যেক্ষে থেকেও যেন ওদের প্রেমের সাংকেতিক ভাষার কথাগুলো ওই দুটি মন ছাড়া অন্য কারও বুঝার সাধ্য হলো না । তার বন্ধুরা তো অবাক হয়ে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল । হঠাৎ একজন বলল সোহাগের কি কেউ মারা গেছে !!!আর বার বার হা্উমাউ করে কেদে বলছে যাও সোনা যাও আপু ডাকতেছে “ এতেই বুঝা গেল সোহাগের ভালবাসার মূল্য কতটুকু তা না হয় আপনারাই বিচার করুন ।
অবশেষে সবাই বিষয়টা জানল যে , সোহাগের গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে । ভালবাসার মূল্য কয়জনেই বা বুঝে কয়েকজন তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে আর বুঝাচ্ছে তুই যদি এসব বিষয় নিয়ে কান্নাকাটি করিস লোকজন কি বলবে ??? কাদন থামা ।
আবার একজনকে দেখা পেলাম কান্নাসম্বলিত কথা ভিডিও রেকর্ড করতে । হয়তো সে ফাজলামো করেই নিয়েছে ব্যাপারটা । যার ব্যাথা সেই বুঝে তাই বলা যায় সোহাগের ভালবাসা অন্যজনের কাছে ওরকম মর্যাদা সম্পন্ন নাও হতে পারে । তাই বলে রেকর্ড !
যাইহোক বিষন্ন মন নিয়ে সোহাগ ১:৩০ টায় উপাসনালয়ে গেল । স্রষ্টার কাছে তার মনের আকুতি জানাল সোনিয়াকে তার কাছে ফিরিয়ে আনতে । স্বয়ং বিধি তার কোমল ভালবাসার দিকে তাকিয়ে ছিল । আর তাইতো প্রায় ভংগুর দুটি জীবনের আকাশে জোৎস্না ফুটে উঠল ঠিক দুপুর 2 টায় ।খুশির খবর টা সোহাগ সব বন্ধুদের সাথে ভাগাভাগি করে দিনটা খুব আনন্দের সাথেই কাটাল
প্রেম গড়িয়েছে ৮ মাস হলো । পরিচয় সোনিয়ার চাচাতো বোনের সাথে ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে । এরই মাঝে সোহাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে ভর্তি হয়েছে । সে থেকেই শুরু হলো সোহাগের সাথে সোনিয়ার ফোনালাপ । আর হ্যা , ভালবাসা যখন পথিমধ্যে তখন সোনিয়ার উষ্ণ প্রেম নিবেদন সোহাগ ফিরিয়ে দিতে পারেনি । এখন তাদের ভালবাসা মসৃণ পথে উজ্জল ফুরফুরে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলছে । সোহাগ আর সোনিয়া সকলের দোয়া প্রত্যাশী । আমার পক্ষ থেকে শুভ কামনা রইল ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:২০