মেরিলিন মনরো
পৃথিবীর লাখ পুরুষের ড্রিম গার্ল মেরিলিন মনরো। তার নতুন ভাবে পরিচয় দেবার কি দরকার আছে? হলিউড সেক্স সিম্বল, বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে আবেদনময়ি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, মডেল ও পপ আইকন ছিলেন মনরো। মনরো তার লাস্যময়ী কণ্ঠ, হাসি আর অভিনয় দিয়ে জয় করে গেছেন লাখ দর্শকের হৃদয়।
সিনেমা জগতে আসার আগে মেরিলিন মনরো
মেরিলিন মনরো, জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায়, ১ জুন ১৯২৬ তার আসল নাম ছিল, নরমা জেন মর্টেনশন। তার আসল বাবার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। ছোট বেলা থেকেই খুব কষ্টে বড় হয়েছেন মনরো। খুব ছোট বেলাতেই তার মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ভর্তি হয় মানসিক হাসপাতালে। নয় বছর বয়সে মনরোর জায়গা হয় এতিমখানা। দু’বছর পর সেখান থেকে পালক পিতা-মাতার আশ্রয় পায় মনরো। এখানে পুর্ন স্বাধীন জীবন যাপনের সুযোগ পায় মনরো। কারন পালক মাতা ছিল তার পাগল মায়ের বান্ধবি। কিন্তু পনের বৎর বয়সে তার পালক পিতা-মাতা পারিবারিক দারিদ্র তার কারনে তাকে আবার এতিমখানা পাঠানের ব্যবস্তা করেন। তখন মনরো তার পাশের বাসার এক এয়ার ক্রাফট প্লান্টে চাকরিজীবিকে বিয়ে করেন, যাতে তার এতিমখানায় আর যেতে না হয়।বিয়ের সময় মনরোর বয়স ১৬। এটাই তার জীবনের প্রথম বিয়ে। যা চার বছর টিকে ছিল। মনরো এটা ছাড়াও আরও দু’টো বিয়ে করেছিল।
মনেরোর অভিনয় জীবন শুরু হয় মডেলিং দিয়ে ১৯৪৬সালে। শুরুতেই মনরো তার ব্রাউনিস কালার চুল কে প্লাটিনাম হোয়াইটের এক আভা আনেন যা তার ট্রেডমার্ক বলা চলে। আর তার নামের পরিবর্তে নতুন নাম হয় মেরিলিন মনরো। পরের বছর ১৯৪৭ সালে 20th Century-Fox স্টুডিওর সাথে চুক্তি বদ্ধ হন মনরো এবং দুটি মুভিতে তাকে প্রথমবারের মত দেখা যায়(যদিও খুবই অল্প সময়ের জন্য)। পরের বছর Fox এর সাথে চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় নতুন করে Columbia Pictures এর সাথে নতুন মুভি করে মনেরো। কিন্তু Columbia ও আর কোন আগ্রহ না দেখালে ১৯৪৯ সালে মনেরো আবার মডেলিং এ ফিরে আসেন। এবার সে একটি ম্যাগাজিনের জন্য নুড হয়। যার যাত্রা শুরু হয় Playboy magazine নামে। মনরোই হচ্ছে Playboy's first "Sweetheart of the Month"।
হঠাৎ ভাগ্যে পরিবর্তন আসে মনরোর, All About Eve(1950) মুভির জন্য 20th Century-Fox থেকে অফার পান মনরো। তার পর তো শুধুই ইতিহাস। লক্ষ পুরুষের এক মাত্র সপ্নের নায়িকা, 20th Century-Fox এর সাথে হয় আরও সাত বছরের চুক্তি। একের পর এক সুপার হিট সিনামা। ১৯৫৫ সালে বেসবল প্লেয়ার “জিও ডিমাজিওর” সাথে বিয়ে ও একই সালে বিচ্ছেদ হয় মেরিলিন মনরোর। এই বছরই রিলিজ হয় তার The Seven Year Itch (1955)মুভিটি। ভালই সুনাম কুড়ায় মুভিটি। ১৯৫৬ সালে আবারও বিয়ের পিরিতে বসলেন মনরো। এবার মুভি রাইটার Arthur Miller. কিন্তু অন্যদিকে মনরোর সম্পর্কে সব মুভি ডিরেক্টরদের একই অভিযোগ বারতেই লাগল যে, সে মুভি সেটে আসতে অনেক দেরি করে।
১৯৫৭ সালে মনরো ইংল্যান্ডে যান প্রথম বারের মত মুভিতে অভিনয় করতে। ইতিমধ্যে মনরো অতিরিক্ত পরিমান alcohol ও pills নেয়া শুরু করে দিয়েছে। ইংল্যান্ড থেকে ফিরেই মনরো অভিনয় করে তার সবচেয়ে ব্যবসা সফল মুভি Some Like It Hot (1959)। কিন্তু শেষের দিকে কোন স্টুডিওই তাকে তাদের কাজে নিতে চাচ্ছিল না,কারন মনরোর সময়ানুবর্তিতা অভাবে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছিল। মনরোর সর্ব শেষ অভিনীত মুভি The Misfits (1961)।
৫ আগস্ট ১৯৬২ সালে হলিউড সেরা এই অভিনেত্রীকে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ায় তার নিজ রুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর কারন হিসাবে বলা হয় অতিরিক্ত ঘুমের ঔষুধ সেবন। এখানেই ইতি ঘটে মেরিলিন মনরো অধ্যায়। মেরিলিন মনরোকে মানুয কত ভালবাসত তা বলে বুঝানোর কিছু নেই। মনরোর মৃত্যুর পর শুধু আমেরিকারে আত্মহত্যার হার ১২% বেরে গিয়েছিল। মৃত্যুর সময় মনরো প্রায় ১.৬ মিলিয়ন ডলার রেখে যান। আর রেখে যান হাজার হাজার অন্ধভক্ত।
মেরিলিন মনরো কোন এক সংবাদ সম্মেলনে একবার বলেছিলঃ
Sometimes I think it would be easier to avoid old age, to die, young, but then you'd never complete your life, would you? You'd never wholly know yourself...
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১৩