প্রধান উপদেস্টার ভাষনের মধ্যদিয়ে দেশে ভোটের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। এখন বি.এন.পি এবং আওয়ামী লীগসহ সব দলই এই রাজনীতি অর্থাৎ ভোটারের দৃস্টি আকর্ষণের চেস্টা শুরু করে দেবে - বলা ভাল ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। বরাবরের মতই এ'ব্যাপারেও এই দুই দলের দৃস্টিভঙ্গী সম্পুর্ণ দুই মেরুতে বলেই মনে হচ্ছে। আমার বিবেচনায় দুই দল যেভাবে তাদের নির্বাচনী স্ট্রাটেজী নির্ধারন করতে যাচ্ছে তা সংক্ষেপে বলার চেস্টা করছি।
আওয়ামী লীগ: দেশের মানুষের মাঝে একটা মনোভাব এ'রকম আছে যে - "বর্তমান সরকার তার প্রস্থানপথ নিরাপদ করার জন্য এবং তাদের দুই বছরের কর্মকান্ডের বৈধতা দেয়ার জন্য কোন একটা পক্ষের সাথে সুনির্দিস্ট সমঝোতায় এসেছে এবং আগামী নির্বাচনে সেই দলকেই বিজয়ী করে আনা হবে।" আওয়ামী লীগের প্রাথমিক স্ট্রাটেজী মনে হচ্ছে নিজেদের সেই সরকার সমর্থিত দল হিসেবে প্রতিস্ঠিত করা। কারন সাধারন মানুষ বিজয়ীর পক্ষে থাকতেই পছন্দ করে। যেকোন ভাবে কোন এক পক্ষের বিজয় নিশ্চিত হলে অনেক ভোটার অন্যদের ভোট দিয়ে ভোট নস্ট করতে চাইবে না। তাছাড়া এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারী এম.পি প্রয়োজন। এই দৃস্টিকোন থেকে আওয়ামী লীগ নিজেদের সরকারের পক্ষের দল হিসেবে প্রতিস্ঠা করতে চাইছে। এ'জন্যই গতকাল আশরাফুল ইসলাম ঘোষনা দিয়েছেন যে সরকারের সব সংস্কার কর্মসুচীর সাথে তারা একমত।
বি.এন.পি : বরাবরেরমতই বি.এন.পি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অবস্থান আওয়ামী লীগের ঠিক বিপরীতে। তারা নিজেদের সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবেই উপস্থাপন করতে চাচ্ছে। কারণ সাধারন মানুষের মাঝে আর একটা মনোভাব আছে এ'রকম - "এই সরকার মুলত বিদেশী সম্রাজ্যবাদী শক্তির এ'দেশীয় এজেন্ট। এরা যা কিছু করেছে সবই সেই বিদেশী শক্তির স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দেয়ার মাধ্যমে। সুতরাং এই সরকারের সমর্থক মানেই সম্রাজ্যবাদের দালাল আর এই সরকারের প্রতিপক্ষ মানেই দেশ প্রেমিক"। বি.এন.পি এই দেশপ্রেমীক ইমেজ তৈরীর মাধ্যমে মানুষের দৃস্টি আকর্শনের চেস্টা করছে। এ'জন্যই তারা ই.সির সাথে সংলাপের সময় একবাক্যে সব সংস্কার কাজ বাতিল করে আগের আইনে আগের নির্বাচনী এলাকার সীমানায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছে।
এ'খন দেখার বিষয় দেশের মানুষের মধ্যে কোন মনোভাবের প্রভাব বেশী - আপোষকামী ক্ষমতাসীনদের পক্ষের মানুষ না বিদ্রোহী মনোভাবের সম্রাজ্যবাদ বিরোধী মানুষ। যদি প্রথমটি সত্য হয় তাহলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতবে আর দ্বিতীয়টি হলে জিতবে বি.এন.পি - অথবা উল্টো করে বলা যায় আগামী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ জেতে তাহলে বুঝতে হবে দেশে আপোষকামী মানুষ বেশী আর বি.এন.পি জিতলে বুঝা যাবে দেশে সম্রাজ্যবাদ বিরোধী মানুষ বেশী।