বাবা বললেন, যাও, দেখোতো আমার ছাতার একটা বাচ্চা হয়েছে নাকি? আমি দৌড়ে গিয়ে বড় ছাতাটার মধ্যে উঁকি দিয়ে দেখলাম, হ্যাঁ সত্যিই তো বাবার ছাতার ভিতরে আরেকটা ফোল্ডিং চাইনিজ ছাতা। সম্ভবতঃ তখন ক্লাশ থ্রি’তে পড়ি। নতুন ছাতা পেয়ে সে যে কি আনন্দ। আহা!!!
আজ ৪ঠা মার্চ। বাবা চলে যাওয়ার একটি বছর পূর্ণ হলো। কেমন আছি আমি? কি তার উত্তর? আমি জানি না। জানিনা, কারণ কাউকে আমার সে ব্যথা বোঝানোর মত ভাষা নাই।
বাবা দেশের বাহিরে থাকতেন। তো, একবার ছুটিতে দেশে ফেরার সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি আনবো তোমার জন্য?” আমি বলেছিলাম- ছাতা। সেবার আসার সময় আমার জন্য অনেকগুলো ছাতা নিয়ে এসেছিলেন। তার মধ্যে দুটি আমার কলিগদের দিয়েছি আর দুটি নিজের জন্য রেখেছি। সেটারই একটা বের করলাম কয়েকদিন আগে। আরেকটা এখনও আলমারির ভিতরে।
উপরের দুটি ঘটনাই আমার এবং আমার বাবার লাইফের কমন অংশটুকুর একেবারে প্রথম দিকের এবং আরেকটি শেষের দিকের ঘটনা। একটি আমার জন্মের কয়েক বছর পরে আরেকটি বাবার চলে যাবার কয়েকবছর আগের। আর দুটো ঘটনাই ছাতাকে নিয়েই। কি অদ্ভুত মিল! তাইনা?
আজ সবই আছে, সৃত্মি আছে, তার দেয়া ছাতাও আছে। কিন্তু বাবা নেই।
আর কি লিখবো? কিচ্ছু লিখার নেই। ভালো লাগছে না। এইমুহুর্তে একটা লাইন খুব মনে পড়ছে। সম্ভবতঃ হুমায়ুন আহমেদ কোথাও লিখেছিলেন অথবা বলেছিলেন, “পৃথিবীতে হয়ত অনেক খারাপ লোক আছে, কিন্তু একটিও খারাপ বাবা নেই।” কথাটা হয়ত একলাইনের কিন্তু এই কথার ভাবার্থ জানতে হয়ত হাজার খন্ডের বইতেও হবে না।