এই শ্লোগানটি প্রায় প্রতিটি বিহারী ক্যাম্পে শোনা যেত বেশ আগে। ওরা খুবই মানবেতর জীবন যাবন করছে প্রতিটি ক্যাম্পে। তারা কোন সরকারী চাকুরী পায়না, পায়না কোন নাগরিক অধিকার। তাই কিছুদিন আগ পর্যন্তও তারা তাদের মাতৃভুমি পাকিস্তানে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তান সরকারের সাথে অনেক যোগাযোগ করে তেমন কোন আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। ঠিক একই ভাবে পাকিস্তানে আটকে আছে অনেক অনেক বাংলাদেশী। যারা কিনা যুদ্ধের সময় ওখানে গিয়েছিল অথবা বিভিন্ন সুত্রে ওখানে অনেক দিন যাবত বসবাস করছে। পাকিস্তান সরকার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কখনই কোন আগ্রহ দেখায় নি। তাহলে এর দায় দায়িত্ব গিয়ে পড়ে বাংলাদেশ সরকারের উপর। তারা তখন সরকারের কাছে আবেদন করে যে তাদের উত্তরাধিকার যারা আছে তাদেরকে মেনে নেওয়া হোক। দীর্ঘ আলোচনা সমালোচনা শেষে হাইকোর্ট গতকাল রায় দিলেন যে যেসমস্ত আটকে পড়া উর্দু ভাষী পাকিস্তানি যাদের জন্ম পচিশে মার্চ ১৯৭১ সালের পরে অথবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা নাবালক নাবালিকা ছিল তারা এখন থেকে বাংলাদেশের নাগরিক। তারা সব অধিকার পাবে এ দেশের নাগরিক হিসেবে।
তারা এখন থেকে ভোটার পরিচয় পত্র এবং জাতীয় পরিচয় পত্র পাবে। এবং এই আদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে আটকে পড়া এক লাখ ষাট হাজার উর্দুভাষী বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।
এরা বেশীর ভাগ সময়ে সঙ্গবদ্ধ ভাবে একটা জায়গায় খুব কষ্ট করে বসবাস করছে। তবে আমি দেখেছি এদের মধ্যে দুই একজন বেশ আভিজাত্য বজায় রেখে এদেশে এখনও বসবাস করছে। তবে সেটার সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন।
খারাপ লাগে তখনই, যে পাকিস্তানেও আমাদের দেশের কিছু মানুষ বসবাস করছে মানবেতর ভাবে। তারা সেখানে আটকে পড়ে আছে। তাদের জন্য সেখানার সরকার কোন সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না। যদি সরকার এই রায়ের মাধ্যমে একটা উদার মনোভাবের পরিচয় দেয় তবে পাকিস্তান সরকারেরও উচিত ওদেশে থাকা আমাদের বাংলাভাষী নাগরিকদের সমমর্যাদা প্রদান করা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০০৮ রাত ২:০১