somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিগারেট টানতে গিয়ে ধরা খাওয়ার কয়েকটি ঘটনা- ১

১৫ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধুমপারে অভিজ্ঞতা অনেকদিনের। বলতে পারেন এক্সপেরিয়েন্সড। তবে আজ কিছু কিছু মুহুর্ত এর অনুভুতি আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

প্রথম সিগারেটের প্রতি কৌতহল জাগে বাবার সিগারেট খাওয়া দেখে। সেই অনেক ছোটবেলায় এসট্রেতে ফেলে দেয়া সদ্য নেভা সিগারেটটা ঠোঁটে লাগিয়ে টান দিয়ে অনেক কেশেছি।

এরপর বিভিন্ন অকেশনে বা ফেষ্টিভালে (ঈদ, বিয়ে ইত্যাদি) সিগারেট খাওয়া হতো লুকিয়ে লুকিয়ে। খুব আয়েশ করে কিন্ত ভয়ে ভয়ে যদি কেউ দেখে ফেলে। তখন সাথে অবশ্য দুই একজন বন্ধু বান্ধব অথবা কাজিনরা থাকতো। খাওয়ার পর সে গন্ধ দুর করার জন্য কত চেষ্টা। এই খাও সেই খাও। আরো কত কি? সেই বয়সে কোন দোকান থেকে সিগারেট কেনাও ছিল পুরো রিস্ক। পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে বের করতাম কোন দোকানে অপরিচিত কোন দোকানী আছে কিনা। আবার চেনা কোন দোকানীর কাছ থেকে কিনলে তারা জিজ্ঞাসা করত, কে সিগারেট খাবে? তখন বলতাম, মামা খাবে বা চাচা খাবে। ইত্যাদি।

এরপর যখন ক্লাশ এইট অথবা নাইনে, তখন যদি কখনও সিগারেট খেতাম, তখন সিগারেট খাওয়ার সময় বাসা থেকে অনেক কষ্ট করে অনেক দুরে যেতাম, যেখানে কেউ আমাকে চেনে না। তারপরেও ভয় থাকতো যদি কেউ দেখে ফেলে। মনে আছে, প্রতিদিন বিকালে একটা সিগারেট খাওয়ার জন্য কতদুরেই না যেতাম।

একবার কি এককাজে যেন বাবার সাথে খালার বাসায় গিয়েছিলাম, তো আসার পথে একটা ফেরীতে পদ্মা নদী পার হতে হতো। ছোট ফেরি, বেশীক্ষণ সময় লাগতো না। যেই না ফেরি ছাড়লো ওমনি আমি বাবাকে বললাম তুমি বসো আমি একটু ঘুরে ঘুরে দেখি। নেমে গিয়ে ফেরির শেষ মাথায় দাড়িয়ে একটা সিগারেট ঠোঁটে দিয়েই এক চাচার হাত থেকে বিড়ির আগুন নিয়ে ধরাতে যাচ্ছিলাম। আর অমনি পিছন থেকে বাবা ডাক দিলেন, যাও গাড়ীতে গিয়ে বসো। আহা! কি ধরাটাই না খেয়েছিলাম। বাসায় আসার পর সে কি মার!!! আহা!

এরপর যখন কলেজে উঠলাম, তখন তো ডন্ট কেয়ার ভাব। কলেজে সারাক্ষণই সিগারেট খাই। ক্লাশ করতাম না, কোনদিন, কলেজে যেতাম আড্ডা মারার জন্য। একদিন রাস্তায় সিগারেট টেনে কেবলই ধোয়া ছেড়েছি, সামনে তাকিয়ে দেখি, আমাদের মহল্লার এক চাচা। আমাদের বাড়ীতে ভাল যাতায়াত আছে তার। আমি বাক হারা হয়ে গেলাম। ধোঁয়া ছাড়বো না চাচাকে সালাম দিবো। আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি কেমন আছো? আমি উত্তরে বললাম, চাচা কিছু মনে করবেন না। তারপর আর সেই চাচার মুখোমুখি ইচ্ছা করে আর কখনও হইনি।

এরকিছুদিন পর সিগারেট টানা অবস্থায় হঠাৎ সামনে এক স্যার পড়ে গেলেন। এখন তাকে তো সালাম দিতে হবে। আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। আমার ডান হাতে সিগারেট। মুখ ভর্তি ধোঁয়া। কিংকর্তব্যবিমুঢ হয়ে গেলাম। সালাম দিলাম বাম হাতে। আর স্লামুয়ালাইকুম বলার সাথে সাথে মুখ থেকে বের হয়ে আসলো একগাদা ধোয়া। পাঠক দৃশ্যটা একবার কল্পনা করে দেখেন।

এরপর গিয়েছি শ্বশুড় বাড়ী। রাতে খাওয়া দাওয়া করে একটু হাটতে বের হলাম কিন্তু আসল উদ্দেশ্য সিগারেট খেতে যাওয়া। হাটতে হাটতে একটা দোকানে গিয়ে সিগারেট ধরিয়ে আয়েশ করে একটা টান দিয়ে ইউ টার্ন দিয়ে ধোয়া ছাড়তেই দেখলাম ধোয়াটা আমি আমার শ্বশুড় আব্বার মুখে উপর ছেড়েছি। পুরা ধরা। যদিও সবাই জানে যে আমি ধুমপান করি। কিন্তু সামনাসামনি। পড়বি তো পড় মালির ঘাড়েই।

এরকম জীবনে আরও ধরা খেয়েছি সিগারেট টানতে গিয়ে। অন্যদিন সেগুলো শেয়ার করবো। এখন সিগারেটে দিকে তাকিয়ে এগুলো মনে পড়লে হাসি আসে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৬
২৯টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=চায়ের আসরে গল্প বলার দিনগুলো সেই= (চায়ের কাপে টুংটাং সুর-৮)

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪১



হারিয়ে গেল কালের অতলে বিকেলের চায়ের আয়োজন
গোল বৈঠক উঠোনে, চারপাশে কত প্রিয়জন
উষ্ণ চা সাথে মুড়ি
ঠোঁটে উড়তো কত কথার ফুলঝুরি।

টিভি সিরিয়াল আর ইন্টারনেট
ইনবক্স আর চ্যাট
কেড়ে নিল সুন্দর সময়গুলো
আন্তরিক সম্পর্কগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণহত্যাকারী দল জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হোক!

লিখেছেন সৈয়দ তাজুল ইসলাম, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫০



জামাত শিবির সুযোগ পেলে আবারও প্রকাশ্যে বাঙালী গণহত্যায় যুক্ত হবে, আওয়ামিলীগের পূনর্বহালের কথা ভাবতে গেলেই এই বিশ্বাসটা দৃঢ় হয়। এই হিসেব মিলাইতে গেলে আপনার রকেট সাইন্স... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাসুদ(শাহবাজ ) তোমরা কি আর ভালো হবা না ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯


বাংলাদেশপন্থীরা ভারত ও পাকিস্তানপন্থীদের হাউকাউতে অতিষ্ঠ। ভারত ও ভাদা রা মনে করে ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। অন্যথা বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। পাকিস্তান কি ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭








ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আকস্মিক সামরিক সংঘাতের চার দিন পর দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও যুদ্ধক্ষেত্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

তেমনই একটি হচ্ছে ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্বশুর বাড়ীর ভূতের যাতনা: সত্য ঘটনা অবলম্বনে

লিখেছেন অপলক , ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪১

নিচের ঘটনাটা দিনাজপুর, উপশহরের। ঘটনাগুলো জেনেছি আমার স্ত্রীর কাছে।



আমার শ্বশুর শহরের পাশে একটি পুরাতন টিনের বাড়ি কেনেন। বাড়ির প্রথম মালিক ছিলেন একটি হিন্দু পরিবার। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×