somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিদিম নেভা অন্ধকার---অনুগল্প

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ঘন কালো মেঘে ঢাকা আকাশ। চাদঁটা একটু একটু উকি দিয়ে আবার মেঘের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে।

হঠাৎ এক দমকা হাওয়ায় পায়ের কাছে জ্বালানো পিদিম টা নিভে গেল, চারিদিক অন্ধকার করে দিয়ে। জামাল উদ্দিন একটা পুরাতন খবর পড়ছিলেন সে আলোয়। জুলেখা কে ডাকলে সে আলোটা আবার জ্বালিয়ে দিয়ে যাবে। কিন্তু জামাল উদ্দিনের কেন যেন ডাকতে ইচ্ছে করছে না । থাক না! এই তো ভালো। পিদিম নিভে যাওয়ার পরের ঘন অন্ধকারটা তাকে কতই না অতীতের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। তার এই বায়ান্ন বছরের জীবনের স্বরণীয় সবগুলো মূহুর্তের যেন অন্ধকারের সাথে একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

ঐতো যেদিন সে অর্পনা কে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে এসেছিল। সেদিনো তো এমন মেঘে ঢাকা রাত ছিল। সন্ধ্যার পর যখন অর্পনা বাবা মার সকল বন্ধন ছেড়ে চলে এসেছিল তার কাছে, ধর্মের সব বাধা ভুলে গিয়ে বিয়ে করেছিল ভিন্ন ধর্মের এক যুবক কে, সে অন্ধকারেই তো জামাল উদ্দিন বাড়ি নিয়ে এসে মার কাছে নিয়ে গিয়েছিল তাকে। মায়ের সামনে দাড়ানো ছিল স্বচ্ছ চাদেঁর আলোয় আবছা এক রমনীর মুখ। খারাপ তো কাটে নি জীবনের সে অধ্যায় টি। কেটেছিল কি?

ঐ তো যেদিন জুলেখার জন্ম হলো। সেদিনো তো ছিল বর্ষার বৃষ্টি ভেজা এক অন্ধকার রাত। আধার রাতে সকল বেদনার অবসান ঘটিয়ে জন্ম হয়েছিল জুলেখার। অন্ধকার ছিল বলেই কি চাদেঁর আলোয় আরেকটা চাদেঁর মত মনে হয়েছিল জুলেখার মুখ? অন্ধকার ছিল বলেই কি নতুন এক শিশুর কান্না অদ্ভূত এক সুরের মত মনে হয়েছিল তার কাছে? হয়তো হ্যা ! হয়তো না!

আবার যেদিন এমনি এক অন্ধকার রাতে অর্পনার জীবন আলো নিভে গিয়েছিল। মনে পরে সেদিনের কথাও। সেদিন দিনটা কেমন ছিল? হাজার বছরের ধরে জ্বলতে থাকা স্বচ্ছ চাদেঁর আলোয় অন্ধকার এক রাত। হ্যা এমনি তো ছিল সে রাত । স্বচ্ছ আলোয় দেখেছিল মৃত এক চির চেনা মুখ, আর বুকের ভেতর জমতে থাকা হু হু সে কান্না।

বাবা! আলো নিভে গেছে ডাকো নি কেন ? জুলেখার ডাকে স্মতির সূতো টা ছিড়ে বর্তমানে ফিরে এলেন জামাল উদ্দিন। কখন যে পিদিম হাতে পাসে এসে দাড়িয়েছে জুলেখা খেয়ালই করেন নি তিনি। পায়ের কাছে রাখা পিদিম টা জ্বালিয়ে দিয়ে আবার রান্না ঘরে ফিরে গেল জুলেখা।

আহা! এই রাত, আহা! কত হাসি কান্নার স্মৃতি, কত চলে যাওয়া মূহুর্ত। পত্রিকার সে খবর টা আবার পড়তে শুরু করলেন জামাল উদ্দিন।
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে মুসলিম চরিত্রের অনুপস্থিতি: এক অনালোচিত প্রশ্ন?

লিখেছেন মুনতাসির, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

সত্যজিৎ রায়, যিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পরিচিত, তাঁর চলচ্চিত্র, গল্প এবং গোয়েন্দা সিরিজ ফেলুদা বাস্তববাদী চরিত্র, সমাজচিত্র, এবং গভীর দার্শনিকতা নিয়ে আলোচিত। তবে তাঁর কাজের মধ্যে একটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪১



গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

এআই দ্বারা তৈরিকৃত রাজনৈতিক কার্টুন—যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অসাম্যতা ও রাজনৈতিক নির্ভরতার প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৬


বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×