ঈদে স্বাদ বদলের জন্য এই কমপ্লিট ভেগান ড্রেজার্টটি ট্রাই করে দেখতে পারেন, আমার কাছে অসাধারণ লাগে; আপনাদেরও ভালো লাগবে বলেই ধারণা করি।
উপকরণ একটি আনুমানিক ৮'' (কুড়ি সেন্টিমিটার) আনারস, ১-২ কাপ নারকেল দুধ, মিষ্টির জন্য ১০০-২০০ গ্রাম চিনি/ আখের গুড়/ খেজুরের গুড়/ ম্যাপল সিরাপ / প্রয়োজনানুযায়ী জিরোক্যাল বা অন্য ডায়াবেটিক চিনি।
সময় লাগবে: সব মিলিয়ে আনুমানিক ১ থেকে ৩ ঘন্টা (বাজার করা বাদে)।
প্রণালিঃ ১) একটি আনারস কেটে ব্লেন্ডারে বা ফুড প্রসেসরে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ডার না থাকলে ছোট করে কেটে বা কাঁটা চামচ দিয়ে কুচিয়ে এর পর হাত দিয়ে চেপে ভর্তা করে নিতে পারেন। আমি সিলেট বা পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার আনারস ব্যবহার করি। বেশ কয়ক বছর ধরে দেখছি মধুপুরের আনারস হরমোন দিয়ে বড় করা হচ্ছে। এতে স্বাদ বা গন্ধ কোনোটাই থাকে না। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ি আনারস নেবেন। ব্লেন্ডের সময়ে অতিরিক্ত পানি যোগ না করাই ভালো।
যারা আনারস যোগাড় করতে পারছেন না, ক্যানের আনারস ব্যবহার করতে পারেন। স্বাদ একটু উন হবে, কিন্তু খুব খারাপ না। ব্লেন্ড করা আনারসের পরিমান দেড় থেকে দু কাপ মতো হবে। চাইলে আনারসের মাঝের শক্ত অংশ ফেলতে পারেন, আমি ফেলি না।
ব্লেন্ড করা আনারস
২)
নারকেল কুরে দুধ বানিয়ে নিন। ঝামেলা এড়ানোর জন্য নারকেল দুধের ক্যান ব্যবহার করতে পারেন। ৪০০ মিলি লিটারের ক্যান ১২০-১৪০ টাকায় পাওয়া যায়। ক্যানের দুধ একটু ঘন, ১৫০-২০০ মিলি লিটার বা মাঝারি আকারের চায়ের কাপের এক কাপ দুধ হলে চলবে। বেশি হলে সমস্যা নেই। কোরা নারকেল থেকে দুধ বানিয়ে ব্যবহার করলে দুধ খুব পাতলা করবেন না।
নারকেল দুধ
৩) একটা পাত্র আনারস ব্লেন্ড করা আনারস এর সাথে আনুমানিক ১৫০ মিলি লিটার (পোনে এক কাপ) পরিমাণ নারকেল দুধ মিলিয়ে মাঝারি আচে সিদ্ধ করুন। স্বাদমতো মিষ্টি যোগ করুন। চিনি ব্যবহারের সুবিধা হলো চিনির নিজের গন্ধ নেই , ফলে আনারস এবং নারকেলের গন্ধটা মাস্ক হয়ে যাবে না। আপনার ভালো লাগলে খেজুরের গুড় বা ম্যাপল সিরাপ ব্যবহার করতে পারেন। ডায়াবেটিক পেশেন্টদের জন্য চিনির বিকল্প জিরোক্যাল বা এরকম কিছু ব্যবহার করতে পারেন। এই ডেজার্ট খুব মিষ্টি হবে না বা পানশে হবে না, আনুমানিক বগুড়ার দইয়ের কাছাকাছি মিষ্টি। আপনি আপনার পছন্দ মতো মিষ্টি যোগ করবেন।
রান্না চড়ানো হয়েছে
৪) আনুমানিক পনেরো মিনিট জ্বাল দেবার পর মিশ্রন কিছুটা ঘন হয়ে আসলে আরও খানিকটা দুধ দিন এবং আরো মিনিট তিন-পাঁচ মিনিট সিদ্ধ করে নামিয়ে নিন। এই ডেজার্ট গরম ভাতের মাড়ের মত ঘন হবে, কনডেন্স মিল্ক এর চেয়ে পাতলা হবে ।
গরম গরম খেতে পারেন। তবে আমার কাছে ঠান্ডা বেশি ভালো লাগে। আমার হিসেবে ফ্রিজে রাখার একদিন পর এটার স্বাদ সবচেয়ে ভালো লাগে, তিন দিন পর স্বাদ একটু কমতে থাকে ।
অপশনাল- সিদ্ধ করার সময় দু তিনটে ছোট এলাচ দিতে পারেন। কিরপিন খাবার সময়ে নারকেলের মালাকেই বাটি হিসেবে ব্যবহার করে, বাটি নষ্ট করে না।
খাবার জন্য তৈরী
নারকেল কুরে দুধ বের করলে অবশেষ আমি ফেলে দেই না কখনো, চালভাজা-গুড় মেখে নাড়ু বানাই (ভদ্র লোকেরা দুধ বের করার পর ঐ নারকেল কোরার অবশেষ ফেলেদেয়া ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহার করেন না; কিরপিন চা খাবার পরে কাপে কিছু রাখার মতো অত ভদ্রতা করে না)।
নোয়াখালী বরিশাল এবং ময়মনসিংহের ব্লগাররা রান্নার সময় শুটকি মাছ বা ছোট মাছ বা চিংড়ি মাছ অ্যাড করতে ভুলবেন না কিন্তু
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
ছবিঃ আনারস এবং নারকেল কোরা- সংগৃহিত, বাকি গুলো নিজের তোলা
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০০