somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেকড়ের সন্ধানে - ২য় পর্ব

২৯ শে মে, ২০১০ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আবার বাড়ী গেলাম। সারাদিন থাকার নিয়তে। দ্বিতীয় বারের মতো। গ্রামের আত্মীয়-স্বজনরা ভাবলেন, দুপুরের খাওয়ার জন্য না ডাকলে বুঝি তাদের ডিসক্রেডিট হবে। দায়িত্বের খাতিরে তারা দুপুরের খাওয়ার জন্য টানাটানি করলেন। অনেকে। কিন্তু আমি অনড়। বাসা থেকে হট বক্সে করে নেয়া খাবারেই খেলাম। পয়ঁত্রিশ বছর ধরে পরিত্যক্ত ঘরে প্রায় সারাদিন কাটালাম।

এক দাদী। বয়স শতোর্ধ। বাবার ডাক নাম বলাতে চিনতে পারলেন। আম্মার বিয়ের কাহিনী শোনালেন। বললেন, কেন জানি গত রাতে আমার আম্মার কথা উনার মনে পড়েছে খুব। আজ আমাকে দেখে খুব, খুউব খুশী হলেন। খাঁটী চট্ট্গ্রামের ভাষায় কতো কথা যে বললেন! আমার মরহুম চাচার একটা ছবি আনিয়ে আমাকে দেখালাম।

বড় চাচা। আমার মরহুম পিতার অন্ততঃ এক যুগ কনিষ্ঠ। বললেন, তোর বাবার এতো বছরের ছোট হয়েও এখনো আমি বেচে আছি। অথচ বদ্দা মারা গেছে আজ ২০ বছর। বাবা-মায়ের সুনাম এনজয় করা যে কতো বিরাট একটা ব্যাপার এটি আমরা গ্রামে গেলে টের পাই। খুব কম লোকেরাই আমাদের চিনে। অধিকাংশ লোকদের আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারিনা। মুরুব্বীরা বিশেষ করে আমার চেহারা দেখে প্রায়শঃই বলে উঠে, ‘এটা মহব্বতের ছেলে নাকি?’। বোধকরি বাবার চেহারার সাথে আমার মিল বেশী।

দাদারা আট ভাইয়ের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আমার বাবা সবার বড়। যতটুকু দেখেছি, শুনেছি - উনি সব দিক থেকেই বড় ছিলেন। আম্মাও ছিলেন তেমন-ই। আমার দাদীকে আব্বা দেখেননি। ছোট বেলা হতে যাকে দাদী হিসাবে জানতাম তিনি যে আমাদের আপন দাদী নন -এটি আমরা জেনেছি অনেক বড় হয়ে। আব্বা যতদিন বেচে ছিলেন, আমাদের শহরতলীর বাসাটিতে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আম্মও এটি মেইনটেইন করে গেছেন।

আজ তাঁরা নাই। ঢাকা-চট্টগ্রামে এলিট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ভাই-বোনরা কেউ গ্রাম-মুখী কখনো হবেনা - এটি স্থির নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারার পর দীর্ঘ ৩৫ বছর পর; বেড়াতে নয়, একবেলা ঘুরে আসার জন্য নয়, শুধু জেয়ারতের জন্য নয়; নাড়ীর টানে, প্রাণের আবেগে শেকড়ের সন্ধানে একজন অধিবাসী হিসাবে আমার গ্রামে যাত্রা। পরবর্তী প্রজন্মকে চাই, মৃত্তিকা-সংলগ্ন থাকুক তারা। যেন ভুলে না যায় তাদের ঐতিহ্য, চেতনা আর মাটিকে। যে মাটিতে মিশে আছে তাদের পূর্ব-প্রজন্ম। তাঁদের সমস্ত স্বত্তা নিয়ে।

ঐতিহ্যহীন্ বৈভব - অর্থহীন। ঐতিহ্য হলো অমলিন প্রেরণা।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে বাংলাদেশের কি করণীয় ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:১৬


কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক মুসলিম হওয়ায় এবং ভারত বিদ্বেষী(যৌক্তিক কারণ আছে) হওয়ায় এই ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউসুফ সরকার

লিখেছেন তানভীর রাতুল, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৭

নৈতিকতা এবং নীতিবোধ কখনোই আইনের মুখে পরিবর্তিত হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া উচিত নয়”)।

নৈতিকতা ও নীতিবোধ কখনোই সহিংসতা বা আইনী চাপের মুখে বদল হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাক-ভারত যুদ্ধ হলে তৃতীয় পক্ষ লাভবান হতে পারে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৭



সাবেক ভারত শাসক মোগলরা না থাকলেও আফগানরা তো আছেই। পাক-ভারত যুদ্ধে উভয়পক্ষ ক্লান্ত হলে আফগানরা তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতেই পারে।তখন আবার দিল্লির মসনদে তাদেরকে দেখা যেতে পারে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একবারে ৫০টি ফ্রি AI টুলের নাম বাংলায় সিরিয়ালসহ !!

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৪৭

আপনার কাজ হবে আগের থেকে ১০ গুণ দ্রুত!
আপনার দৈনন্দিন কাজকে আরও সহজ, স্মার্ট ও গতিশীল করতে নিচে ৫০টি অসাধারণ ফ্রি AI টুলের তালিকা দেওয়া হলো। এই টুলগুলো ব্যবহার করলে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিদ্যা যদি অন্তরে ধারণ করা না যায় তবে সেটা কোনো কাজে আসে না।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:২৮


ঘটনাটি যেন দুঃস্বপ্নের চেয়েও নির্মম। ধর্মের পথপ্রদর্শক একজন ইমাম, যার কাজ মানুষকে সহনশীলতা, দয়া ও ন্যায়বিচারের শিক্ষা দেওয়া — তিনি নিজেই স্ত্রীর সামান্য বাকবিতণ্ডায় মত্ত হয়ে উঠলেন হত্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×