১...
হুটহাট যে বৃষ্টি আসে, তা হুট করেই চলে যায়। এই বৃষ্টি আজ থামবে বলে মনে হচ্ছে না৷ এই আউলা ঝাউলা বৃষ্টি কতক্ষণ চলবে কে জানে?
জাহান খান হাতে বাজারের ব্যাগ, সুতলিতে বাধা দুইটা ইলিশ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। বাড়ির কামলা নিশ্চয়ই বৃষ্টির জন্য আসতে পারছে না, নইলে এতক্ষণে চলে আসার কথা। মেঘ না থাকলে অবশ্য বাজার থেকে কামলা নিয়ে বাড়ি যাওয়া যেত। বাজাইরা কামলার দল মাছ বাজারে পাটাতনের এককোণে জমিয়ে তাস খেলছে। এই মেঘে বাজার নিয়ে যেতে বললে ওরা না-ও করতে পারে। এতে জাহান খানের অপমান হবে।
এই মেঘের মধ্যে বাজার নিয়ে একা রওনা দিলেও অপমান হবে। লোকজন বলবে, খান সাবে নিজের বাজার নিজে নিয়া যায়। বড়লোক হবার এই এক যন্ত্রণা, ইচ্ছেমতো কাজ করা যায় না।
অথচ বাড়িতে তার পুত্র ইলিশ দিয়ে খিচুড়ি খাবে বায়না ধরেছে। দেরি করে বাড়ি গেলে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বে।জাহান খান মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন!
তখনি ময়লা ছালা গায়ে,ভিজে জবজবে, এলোমেলো বাবরি চুল, নোংরা সাত্তার পাগলা তার সামনে এসে দাঁড়ালেন।
"আরে চান্না না, এইহানে খাড়াইয়া রইছস কেন? এই মেঘ আইজকা থামবোনি!ল, বাইতে যাই। দে বাজারের ব্যাগ দে আমার কাছে।
ইলশা কিনছস দেহি! কত নিল?"
কে বলবে, সাত্তার খান পাগল!কেমন সুস্থ মানুষের মত কথা। বলাই বাহুল্য, সাত্তার খান জাহান খানের বড় ভাই। কেমন করে পাগল হল, সারা দুনিয়া জানে।
"মিয়া ভাই, আপনে যান তো। বিরক্ত করবেন না। আমি একাই যেতে পারবো।"
জাহান খান বিরক্তি চেপে রাখতে পারলেন না। অবশ্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন, অন্যকেউ তাকে চান্না ডাকলে তিনি গালিগালাজ করেন, নিজের কামলা কামালকে মারতে বলেন। কেবল সাত্তার খান ডাকলেই কিছু বলেন না। আজকে কামালও সাথে নেই।
কতক্ষণ চলে গেল, কে বলবে? মেঘ থামার না নেই। কামালও মনে হয় এতক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে,আসবে না। সাত্তার খান বাজারের ব্যাগ মাথায় নিয়ে চলতে শুরু করলেন। পিছনে আস্তে আস্তে আসছেন জাহান খান।
সাত্তার খান গান ধরলেন,
"এক কালো যমুনার জল সর্ব প্রাণি খায়
আরেক কালো আমি কৃষ্ণ
সকল রাধে চায়
এই কথা শুনিয়া কানাই বাঁশী হাতে নিল
সর্প হয়ে কালো বাঁশী রাধেকে দংশিল
ডানপায়ে দংশিল রাধের বামপায়ে দংশিল
মরলাম মরলাম বলে রাধে জমিনে পড়িল...."
সাত্তার খান শৈশব থেকেই পালাগান করতেন, পাড়ায় পাড়ায় যাত্রা করতেন। এই যে পাগল হয়ে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ান তাতেও চেহারার মাধুর্য এতটুকু কমে নাই।এটা মিথ্যে না বলার কারনেও হতে পারে।
সাত্তার খান ২০ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নিলেন আর মিথ্যে বলবেন না। একটানা ২০ বছর মিথ্যে না বললে নাকি অলৌকিক ক্ষমতা পাওয়া যায়। জাহান খানের হিসেব অনুযায়ী ২০ বছর শেষ হবার কথা। তিনি ভাবলেন জিজ্ঞেস করবেন, কি মনে করে করলেন না।
বারারচড় ছালাম কসাইয়ের বাড়ি পেড়িয়ে পুবের সড়কে আসতেই ঝড় শুরু হয়ে গেল। পথের পাশে কলা গাছ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে। এদিকে সাত্তার খানের ভ্রুক্ষেপ নেই, ঝড়ের তাণ্ডবের সাথে উনার গানের জোর বেড়ে যাচ্ছে।
জাহান খান ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরলেন।বললেন,"মিয়া ভাই, ভয় লাগে।"
"ডর নাই, ডর কিয়ের। আমারে ধর। ধইরা হাটতে থাক।"
২...
খোলা ধানের মাঠ, ধানের খেতের মধ্যে চালা ঘর। ঘরে জুয়ার আসর বসেছে। খোলামেলা ঘর, অনেক দূর থেকেই দেখা যায়। এই জুয়ার আসর নিয়ে কেউ কিছু বলে না। বলবে কিভাবে, এই আসর জমায় সাত্তার খান। এলাকায় একটা কথা প্রচলিত আছে, পাতাম আর মোফাজ্জলের দালান উঠেছে সাত্তারের সাথে জুয়ায় জিতে। বাকিরাও এই আশায় জুয়া খেলতে আসে। তবে এই সাত্তার আর আগের সাত্তার নেই, সে পাকা খেলোয়াড়।
তবে আজকে খেলায় মন নাই, সে এক হাজারের একটা দান অনায়াসে হেরে গেল। তার কোছায় এখনো টাকা গোজা আছে। তবে খেলবে না বলে উঠে গেল।
"ঐ পাতাইম্মা, যা কামাইল্লারে ক রিকশা বাইর করতে চান মিয়ারে মমিসিং দিয়া আসি। একটু পরেই আন্ধার হইয়া যাইব, আমার ভাই আইনন্ধার ডরায় আর চৌক্ষেও ভালা দেহে না। দেহস না, চৌক্ষে চশমা লাগায়।"
জাহান খান তখন আনন্দমোহন কলেজে পড়ে। প্রতি শুকবারে বাড়ি আসে, যাবার সময় মিয়া ভাই সাত্তার খান তার সাথে মেস পর্যন্ত যায়। আসার সময় হাতে একশো টাকা দিয়ে আসে।
ছফিনা বেগমের চার মেয়ে, দুই ছেলে; কিন্তু জাহান খানকে তিনি বেশি পছন্দ করতেন। ছডিঘরে(আঁতুড়ঘর) সাত্তার খানকে দেখিয়ে বললেন,"দেখ, তর চান্নির মত সোন্দর ভাই হইছে।"
সাত্তার খান হেসে বলেছিলেন,"মায়া, তাইলে এর নাম রাহ চান মিয়া।"
অনেক দিন সবাই এই নামেই ডাকতো। চান মিয়ার এই নাম পছন্দ হল না। ছফিনা বেগম সাত্তার খানকে ডেকে বলবেল,"ও সাত্তার, ওরে আর চান মিয়া ডাহিস না। ওর নাম সারোয়ার জাহান খান।"
সাত্তার খান মাঝেমধ্যে ডাকতেন, আদরের ডাক অত সহজে ছেড়ে দেয়া যায় না।
জাহান খান কলেজ পাস করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন। কত বছর গেল, ৮৮ আর ৯৮ এর বন্যায় গ্রামকে গ্রাম উজাড় হয়ে গেল; তাতে কি? সাত্তার খান বদলালেন কই!
তিনি জমি বেঁচতে থাকলেন, জুয়া খেলতে থাকলেন , যাত্রা-পালাগান চালিয়ে গেলেন। মাঝেমধ্যে অবশ্য মনে হত ঘরে তার কিশোরী বৌ আছে, তখন সব ছেড়েছুড়ে বাড়ি আসতেন। বুনো সাত্তারকে পোষ মানায় এই ক্ষমতা কিশোরী মমতাজের ছিল না। অবশ্য সময়ও ছিল না! ননদ, ননদ জামাই, তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে বড় সংসারে তিনবেলা রান্না করা চাট্টিখানি কথা নয়। মমতাজ নিজের ছেলের দিকেই মনোযোগ দিতে পারে না!
সেদিন পলাশকান্দি বাজারে সাত্তার খান রাধা-কৃষ্ণের পালা করার জন্য রেডি হচ্ছিল। হঠাৎ ঘরের কথা মনে পড়লো। অমনি বাড়ির দিকে রওনা দিলেন।
বাড়ি পৌঁছে দেখলেন মমতাজ উঠোনে ধান সিদ্ধ করছে। ঘরের মেঝেতে সোহাগ শুয়ে আছে, ওর জ্বর।
সাত্তার খান বৌয়ের হাত ধরে ঘরে নিয়ে এলেন।
"মমতাজ, আমার প্রতি তোর অনেক রাগ নারে?"
মমতাজ আঁচল দিয়ে মুখ মুছলো, পা দিয়ে মাটিতে কাটাকাটি খেলতে লাগলো।
সাত্তার খান বৌয়ের দুই কাধ ধরে ঝাঁকি দিল।
"কথা কস না কেন, মাগী!"
"না, রাগ নাই। পয়লা পয়লা একটু খারাপ লাগতো। রাইতে সাইজা বইসা থাকতাম, আপনে কহন আইবেন এইজন্য। আপনে আইতেন না, এলকা এলকা কানতাম। অহন আর কান্দি না। কাম কইরা সময়ও পাই না।"
সাত্তার খান বৌয়ের দিকে তাকালেন। আশ্চর্য! তিনবেলা রান্না, গরুর খাবার দেয়া, দুইবার এই বিশাল উঠান ঝাড়ু দেয়ার পরিশ্রমের পরও মমতাজের মুখে কষ্টের ছাপ নেই। করুণ একটা ভাব আছে, তা তার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সাত্তার খান নিজেকে ধিক্কার দিলেন, বৌকে ঘরে রেখে সে কিনা জুয়া,যাত্রার আসরে রাত কাটিয়েছে!
সাত্তার খান মমতাজের মাথায় হাত রেখে কসম কাটলেন।
"আল্লা-নবীর ক্বিরা, আমি ভালা হইয়া যামু। জুয়া খেলমু না, রাইতে তাড়াতাড়ি বাড়িত আসমু।"
"আপনে এই ক্বিরা আগেও কাটছেন।"
"এইবার হাছা হাছাই কইতাছি।"
মমতাজ হেসে ফেলল।
"আপনের পরতি আমার কুন রাগ নাই। আপনে চাইলে আরেকটা বিয়া করতে পারতেন, তা তো করেন নাই। আপনে মানুষ ভালা।
আমার আব্বা বড় ঘর দেইখা আমারে বিয়া দিছে, আপনেরে দেইখাতো বিয়া দেয় নাই। আমি মাইনাই লইছি।"
"আমার দিকে চা। আমি ভালা হইয়া যামু, দেহিস। যা, এইবার একটু সাইজা যায়। তোরে ভালা কইরা দেহি।"
"কি দিয়া সাজমু?আমারে সাজনের কিছু কুনদিন কিইন্না দেন নাই তো।বিয়াতে আলতা-ছুনু যেগুলা দিছিলেন হেইগুলাও আপনের ছুডু বইনে লইয়া গেছে। হিহি হিহি....."
"হাসস কেন, মাগী? আজকে তরে সব কিইন্না দিব। কি কি লাগবো আমারে ক।"
"আপনে যা কিইন্না দিবেন, হেইডা দিয়াই সাজমু।"
সাত্তার খান বাজারের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলেন। মেঝেতে শুয়ে থাকা ছেলের গায়ে হাত দিয়ে জ্বর মাপলেন। সোহাগ বাবার আদর পেয়ে মিউয়ে গেল। সাত্তার খান ছেলের গালে চুমু খেয়ে জিজ্ঞেস করলেন,"বাপজান বাজারে যাই। তোমার লেইগা কি আনমু।"
"আব্বা, ইলশা দিয়া ভাত খাইতে মুন চায়।"
সেদিন চৈত্রমাস। তাপে মাঠের ফসল, গাছের পাতা পুড়ে যাবার জোগাড়। সাত্তার খানের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তার হাতে দুইটা ইলিশ সুতলি দিয়ে বাঁধা, ব্যাগে লালপেড়ে নীল শাড়ি, আলতা, সুগন্ধী তেল, জলে ভাসা সাবান, নেইলপালিশ, কুমকুম আর পাউডার। এগুলা তিনি কামলার হাতে দেননি।
তিনি প্রখর রোদে খুব জোরে হাটছেন, মাথায় এতএত বাজার নিয়ে বাড়ির কামলা কামাল প্রায় দৌড়াচ্ছে।
বাড়ি ফিরে সাত্তার খান দেখলেন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই! দাউদাউ করে তার ঘরে আগুন জ্বলছে!
তার কিশোরী বৌ, শিশুপুত্র আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তিনি কিছুই বললেন না, আগুন নেভানোর চেষ্টাও করলেন না, মাটিতে বসে পড়লেন।সারাবেলা বিরবির করলেন,
"আল্লাহ, যে ভালো হতে চায়, যে নিজের ভুল বুঝতে পারে তাকে তুমি বারবার সুযোগ দাও।আমার বেলায় এত পাষাণ হয়ে গেলে!এত পাষাণ হয়ে গেলে....."
তারপর থেকেই সাত্তার খান পাগল। জাহান খান তাকে চিকিৎসা করার অনেক চেষ্টা করেছেন, কোন লাভ হয় নাই!
৩...
ঝড় থামে নাই, আর থামে নাই সাত্তার খানের গান।
"গৃহবাসে গিয়া রাধে আঁড়ে বিছায় চুল
কঁদম ডালে থাইক্কা কানাই ফিইক্কা মারে ফুল
বিয়া নাকি কর কানাই, বিয়া নাকি কর
পরেরও রমনী দেখে জ্বালায় জ্বলে মর....."
ঝড়ের সময়ে আযান দেয়া হচ্ছে। আযান আর সাত্তার খানের পালাগান মিলে একাকার। জাহান খান বিরক্ত হলেন।
"মিয়া ভাই, আযানের সময় গান কিসের? বেহেশতে যেতে চান না নাকি?আর হিন্দু গান গাইছেন কেন?"
"বেহেশতে যাইতে চাই না, আমার ডর লাগে।"
"আপনের পাগলামি যায় নায়?আমিতো মনে করছিলাম ভালো হয়ে গেছেন?"
"ভালা হই নাই, হইতে চাইছিলাম।"
"ভালো হলে অবশ্যই বেহেশতে যাবেন।"
"আমি যাইতে চাই না।বেহেশতে গিয়া কি কমু তর ভাবীরে? জমিনের লেইগা হেরে দেবরে পুড়াইয়া মারছে!আমি ফিরাইতে পারি নাই!"
জাহান খান মিয়া ভাইয়ের হাত ছেড়ে দিলেন। ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন।
"মিয়া ভাই,আপনে জানলেন কিভাবে? আপনার কি মিথ্যা না বলার ২০ পূর্ণ হয়েছে?"
"আমি জানি না, তবে এখন ঐদিনের ঘটনা সব চোখের সামনে দেখবার পাই।"
"মিয়া ভাই, আপনি সব জমিন বিক্রি করে ফেলছিলেন।"
"আমি আমার ভাগের জমিন বেঁচতাছিলাম। তগেরে জমিন আমি বেঁচি নাই।"
"আপনি সব বেঁচে দিতেন।"
"তাতে আমার বৌ, আমার ছেলের দুষ কি ছিল?"
"এটা ছাড়া আমার কিছুই করার ছিল না।"
"সারোয়ার, তর ভাবীর বয়স কত ছিল? তর মনে আছে রে? তাকে আমার শ্বশুর বৌচি খেলা থেকে ধরে এনে বিয়ে দিয়েছিলেন। তাকেও তোরা ৪ জন মিলে......। মমতাজের চিৎকার এখনো আমার কানে বাজছে!ও তো তোকে ভাইজান ডাকতো।"
" আমি নিজেকে সংযত রাখতে পারিনি।"
"আমার ছেলেটা জ্বর নিয়েই ঘর থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বেড়িয়ে এসেছিল। তাকেও ঘাড়ে ধরে আবার আগুনে ছুড়ে দিয়েছিলি,তাই না!"
"ও সব দেখে ফেলেছিল।"
"সারোয়ার, আমার খুব হিংসা অয়। তোর ছেলে রাঈদকে দেইখা আমার মন ভাইঙা যায়। সোহাগ বাঁইচা থাকলে এহন কলেজে পড়তো।
আমি জমিন বেঁচছি, জুয়া খেলছি; তোদের প্রতি দায়িত্ব কি পালন করিনাই?
আব্বা-আম্মার অভাব কেউ কুনদিন বুঝবার পারছস? আমার জমিন বেইচা তর পড়ালেহার টেকা দিছি, বইনের বিয়া দিছি।
তোর জমিন দরকার আমারে কইতি, আমার সব লিইখা দিয়া দ্যাশ ছাইড়া যাইতাম।আমারে এত বড় শাস্তি দিলি!"
"আপনে এটা করতেন না।"
"একবার কইয়া দেখতি।"
জাহান খান চুপ করে রইলেন।
সাত্তার খান ভাইয়ের হাত ধরলেন।
"আমার প্রতিশোধ নিবার মন চায় রে।
আবার তোর লেইগা কষ্টও লাগে। আমি যে কষ্টডা পাইছি, তরে হেই কষ্টডা দিবার চাই না। তুইতো আমারে ভালা হইবার সুযোগটাই দিলি না!আমি না হইলাম ভালা ভাই, না হইলাম ভালা স্বামী, না ভালা বাপ।"
৪...
পরদিন বাড়ির পিছনে ছফিনা বিবির কবরের পাশে মান্দার গাছটায় সাত্তার খানের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেল। তিনি আত্মহত্যা করেছেন, এত কষ্ট নিয়ে একটা মানুষ কতদিন বেঁচে থাকতে পারে?
রাঈদ তার বাবা জাহান খানকে জিজ্ঞেস করলো,"আব্বা, জেঠুর কি হয়েছে? জেঠু ওভাবে ঝুলে আছেন কেন? আব্বা, জানো জেঠু আমার নাম মনেই রাখতে পারতেন না।
আমাকে দেখলেই ডাকতেন 'এই সোহাগ, এই সোহাগ'। হা হা হা....
আচ্ছা আব্বা, সোহাগ কে?আমি কি তাকে দেখেছি?সোহাগ কোথায় থাকে?"
জাহান খান ছেলের গালে একটা চড় দিলেন।
"এত কথা কিসের, যাও বাড়ির ভিতরে যাও।"
দুনিয়া আবেগ দিয়ে চলে না।
এখানে নিজে উপরে উঠার পাশাপাশি, শরীককেও নিচে রাখতে হয়। তবেই না ভালোভাবে টিকে থাকা যায়!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:২৮