
পদ্মার পাড়ের এক শহরে বেড়ে উঠেছি আমি। ছোট বেলার সুখ স্মৃতিগুলোর একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ভরে আছে রুপালি ইলিশের স্মৃতিতে। ছোট বেলার বর্ষাগুলো ছিল বৃষ্টি ভেজা ফুটবল আর ইলিশময়। রান্না ঘরের ইলিশ ভাজার সুবাস বৃষ্টির সাথে মিলে অদ্ভুত এক আবেশ তৈরী করত। সারা বর্ষায় ছোট্র শহরটা সয়লাব হয়ে যেত ইলিশে। মনে পড়ে ছিয়াশি সাতাশির দিকে .. ছয় সাত দিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে। একরাতে আব্বা অনেকগুলো ইলিশ একসাথে নিয়ে এলেন। আম্মা বিরক্ত। বাসা ইলিশে ভর্তি আবার ইলিশ কেন? আব্বা বললেন পরিচিত জেলে খুব করে ধরল, বিক্রি নাই নিয়ে যান বিশ টাকা করে কেজি।

সেইদিনগুলো চলে গেছে অনেক আগেই। পদ্মা তার যৌবন হারিয়েছে। এই ভরা বর্ষাতেও পদ্মাকে দেখলে কষ্ট লাগে। তার গৌরব ইলিশও এখন কমে গেছে অনেক। তারপরও অন্তত বর্ষাতে ইলিশ পাওয়া যেত নাগালের মধ্যে। এবছর সেটাও নেই!!
কারনটা অল্প বিস্তর সবাই জানি। একটু আগে বৈশাখীর একটা রিপোর্টে সেটা আরও স্পস্ট হলো, পাচার হয়ে যাচ্ছে ইলিশ। জেলেরা বলল চলে যাচ্ছে সীমান্তের ওপারে, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বললেন চলে যাচ্ছে ইলিশ। কে ঠেকাবে? বললেন প্রশাসনের দায়িত্ব। হায় প্রশাসন!!
আমাদের ইলিশ, আমরা খাব না । প্রতিবেশী বড় হকদার,সে খাবে। আমাদের অদ্ভুত এক চরিত্র। কি বলা যায় এটা কে? প্রতিবেশী সেবা? নাকি লোভী, মেরুদন্ডহীন একটা জাতির অব্যাহত দেশপ্রেমহীনতারই একটা নমুনা মাত্র?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৪:৩৯