সাধারনত মেয়েরা অযথা অপরিচিত পুরুষের সাহায্য পার্থি হতে চায়না।
এর মুল কারন হতে পারে, সহযোগিতা পরবর্তিতে সাহায্য পার্থির উপর সাহায্যকর্তার এক প্রকার দাবি তৈরি হয়।
এই দাবিটির কারনে এক সময়ের উপকারির পরবর্তি অপকারের প্রতিবাদ করতে মন সায় দেয়না।
একটা ছোট্ট ঘটনার মাধ্যমে বলছি----
----৬তলা দালানের চার তলার মিলিরা এই এলাকায় নতুন এসেছে। সে নিকটস্থ একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
তাদের বাসা থেকে ১৫-২০ গজ দুরেই স্থানীয় রতনের ফ্লেক্সি-লোডের দোকান।
নাম্বার ছড়িয়ে পরার ভয়ে ছোট ভাই মাহিনকে রতনের দোকানে পাঠিয়ে প্রায় সময় মিলি তার মোবাইলে রিসার্জ করে।
একদিন অন্য একটি নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে রতন নিশ্চিত হয়ে নিল যে এটি মিলির নাম্বার। এরপর একদিন মাহিন রিসার্জ করতে এলে সে মাহিনকে নিজের নাম্বার দিয়ে বল্ল 'তোমার আপুকে বল টাকা লাগলে এই নাম্বারে মিসকল দিলে অথবা মেসেজ দিয়ে টাকার পরিমান জানালে আমি পাঠিয়ে দিব। তোমাকে আর এত কষ্ট করে আসতে হবেনা। তোমার আপু কলেজে জাওয়ার সময় আমাকে টাকা দিয়ে দিলেই হবে।'
এরপর বেশ কিছুদিন মিলি রতন থেকে রিসার্জ করেনি। অন্য দোকান থেকে কার্ড কিনে রাখত।
একদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। মিলির কলেজ ও বন্ধ ছিল সেদিন। বান্ধবীদের সাথে কথা বলে টাইম পাস করতে ইচ্ছে হল তার। ওথচ ব্যালেন্স আছে মাত্র ১টাকা২৪পয়সা। একটা কার্ড ও নেই। এই দুপুর বেলা বাবাকে বললে কাজ হবে সেই সন্ধায়। বৃষ্টির মাজে মাহিনকে বের হতে বলতেও মন সায় দিলনা। রতনের দেয়া নাম্বারটির কথা মনে পড়ল। নাম্বার লেখা কাগজটি ড্রয়ারে অথবা ময়লার জুড়িতে থাকতে পারে। কিন্তু কাজটি করা ঠিক হবে কিনা তা ভাবতে লাগলো সে। একসময় তার মনে হল, 'সমস্যা কি যদি সে উপকার করতে চায়? আর যদি সে এতই খারাফ হত তবে এতদিনে তো নাম্বারটি ছড়িয়ে দিতে পারতো। তাছাড়া সে এখানকার স্থানীয়। আর সে তো মাগনা দিচ্ছেনা! টাকা পরে দিতে বলেছে। আমিও তো আর বিপদ না হলে এভাবে সবসময় টাকা নিবনা!'
মিলি ড্রয়ারটি চেক করে ময়লার জুড়িতেও নাম্বারটি পেলনা। এখানে-সেখানে খুজে অতপর বুক-শেল্পের উপর মুচড়ানো কাগজটি পেল।
একোই অপারেটরের সিম! ফোন করে বললে হয়তো ১মিনিটে গুছিয়ে বলা জাবেনা তাই সে বেশ কয়েকবার এডিট করে একটা sms লিখল- 'রতন ভাই, আমি মাহিনের বোন। আব্বু সন্ধায় আপনাকে টাকা দিয়ে দিবে। এই নাম্বারে ২০তাকা দিতে পারবেন এখন?'
কিছুক্ষনের মধ্যেই টাকা চলে এল! একটু পর আরেকটি মেসেজ এল- 'এই বৃষ্টিতে আঙ্কেলকে পাঠানোর দরকার নেই। কাল দিলেই হবে।'
মিলি এর কোন রিপ্লাই দেয়নি। বাবাকে ফোন করে বলে দিল যেন আসার সময় রতনকে টাকা দিয়ে আসে। যথারিতি টাকা দেয়া হল।
এর বেশ কিছুদিন পর এক বিকেলে মিলি রতনকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকার অঙ্ক লিখে sms করলো। কারন হল সেদিনের মধ্যে ঐ পরিমান রিসার্জ করলে বোনাস ঘোষণা করেছে ঐ ফোন কম্পানি।
যথারিতি টাকা এলো এবং সন্ধায় পরিশোধ হল।
এভাবে ধিরেধিরে মিলি অন্য কোথাও হতে রিসার্জ না করে ফোন অথবা মেসেজ করে রতন থেকে নেয়া শুরু করলো।
প্রায় সময় বাবাকে বলা হতনা তাই সে বের হলে ২-৪বারের টাকা একসাথে নিজেই গিয়ে পরিশোধ করে আসতো এবং রতনের পাঠানো সুন্দর সুন্দর মেসেজ গুলোর প্রশংসা করতো। মাজেমাজে মিলি কিছু মেসেজের উত্তর ও দিতো। কিন্তু অশিক্ষিত রতন মিলির মেসেজ গুলোকে তার পাঠানো মেসেজের মতই মনে করতো।
একদিন রতনের 'i love u' লিখা মেসেজ দেখে মিলির মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো! সাথেসাথে রতনকে ফোন করে নিষেধ করলো আর এসব ফাজলামি না করতে এবং আগামি কাল রতনের পাওনা টাকা সব পরিশোধ করবে বলে ফোন রেখে দিল।
পরদিন দুপুরে কলেজ হতে ফেরার সময় মিলি রতনের দোকানে ডুকলো টাকা দিতে। রতন মিলিকে বসতে বললে মিলি জানালো যে সে বসতে পারবেনা, তার তাড়া আছে। সাথেসাথে টেবিলের উপর রাখা মিলির হাত চেপে ধরে রতন বল্ল- 'এত তাড়া কিসের সুন্দুরি? টাকা নিবা মাগার সার্বিস দিবানা তা কি করে হয় সোনা?' হেচকা টানে মিলি তার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মুঠোবন্ধি টাকা গুলো রতনের মুখে ছুড়ে মেরে বের হয়ে এল।
বাকি যে কয়দিন মিলিরা ঐ এলাকায় ছিল ততদিনে মিলি একবারো বাসার বের হয়নি।----
----শারীরিক দুর্বলতার কারনে নারীকে পুরুষের সহযোগিতা নিতে হয়। আবার সেই পুরুষ যদি মাহরামের বাহিরে হয় তবে তা তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এমতাবস্থায় সে কি করবে?
মাহরাম ছাড়া অপরিচিত রাস্তায় জাতায়াত করবেনা।
তার জন্য নির্দিস্ত সতর ডেকে সে যে কোন প্রকার বৈধ কর্ম সম্পাদন করতে পারে।
সে এসব না মানলেও যদি কোন পুরুষ জোর পুর্বক বলাৎকারে লিপ্ত হয় তবে সেই পুরুষের জন্য রয়েছে প্রস্তারাঘাতে মির্তু! সেচ্চাক্রিত হলে উভয়ের জন্য একই বিধান প্রযোজ্য।
এই অনুশাসন চাইলে স্বীয় মা-বোনকে অবশ্যই সৎ থাকতে বলব মানুষ রুপি শয়তানের হাত হতে ইজ্জত রক্ষার্তে।
কারন এই বিধানের প্রতিটি অংশ অবিচ্ছিন্ন। ঠিক যেন ecosystem! অর্থাৎ এক অংশ বাদ দিয়ে অন্য অংশের বাস্তবায়ন অসম্ভব।
আল্লাহ আমাদের সকলকে বুজার তৌফিক দান করুক। আমীন