শুক্রবার। বাংলাদেশে থাকে ছুটি ছুটি আমেজ আর এখানে(লন্ডনে) প্রচুর ব্যস্ততা। যাইহোক, শুক্রবারে প্রায়ই আমার ক্লাস থাকে। আজও ছিল কিন্তু ক্লাসে গেলাম না। আসলে ক্লাসে যাওয়ার জন্য যথারীতি ঘুম থেকে উঠেছিলাম, কিন্তু একি; বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি। অনেকক্ষণ অভিযান চালিয়েও একটা ছাতা বের করতে পারলাম না, মনে মনে ভাবলাম যখন কোন কিছুর বেশী প্রয়োজন পড়ে তখন মহামূল্যবান জিনিসখানা পাওয়া যায়না। মেজাজ মহাশয় একশ ডিগ্রী'তে গিয়েও থামল বলে মনে হচ্ছেনা।
ভাবলাম কি আর করা কিছুক্ষণ বৃষ্টি দেখি আর কাব্যিক মনটাকে একটু জেগে তুলি। বৃষ্টির এই ধারা কখনো মধুর হয় আবার কখনো কান্নার রং মেখে আসে। বৃষ্টির এই সুরে আজ অনেক সুখের স্মৃতি মনে পরে যায়।
মনে পরে, আমবাগান মাঠে মুষলধারে বৃষ্টি আর জমে থাকা পানিতে পাড়ার বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলার স্মৃতি। কাদা মাখামাখিতে তখন কত আনন্দ ছিল। লন্ডনে কাদা নেই, পাড়ার সেসব বন্ধুরাও নেই, আছে শুধু প্রাণহীন বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে আমি দেশের বৃষ্টিকে খুঁজে পায়না তাই বৃষ্টির সাথে দিয়েছি আড়ি।
আসলে এখানে বৃষ্টি হয় শীতে, তাই শীতের দিনে বৃষ্টিতে ভিজতে যাওয়া তো দুরের কথা বেশী দরকার না হলে বাসা থেকে বেরই হইনা বাসায় রেডিয়েটর চালিয়ে বসে থাকি।
গত বছর সামারে কোন একদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। বাসায় ছিলাম আমি আর রাসেল। কেন জানি দু'জনেই বৃষ্টি দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। আমি রাসেলকে বললাম, চল... বৃষ্টিতে ভিজি বলার সাথে সাথেই দুজন শর্টস পরে খালি গায়ে নেমে পড়লাম আমাদের বাসার পিছনের গার্ডেনে। পানি মারামারি করে ক্ষান্ত হয়নি পরক্ষণেই একটা বল নিয়ে দৌড় সামনের রোড়ে। পানি জমে থাকতে কখনো খেয়াল করিনি কিন্তু সেদিন পানি জমে গিয়েছিল। এতে আমদের আরো সুবিধে হল, শুরু করলাম বল নিয়ে মারামারি। অনেক মানুষ আমাদের আনন্দ উৎসুক দৃষ্টিতে দেখছে তাতে আমাদের পাত্তাই নেই, দেখলে দেখুক বলে দুজনে মনের আনন্দে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার।