সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামাত-বিএনপি জোটের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। এখন বিজয়ী শিবিরে চলছে উল্লাসের মহড়া। সেটাই স্বাভাবিক। এরসঙ্গে চলছে কার কি ভুমিকায় তারা বিজয়ী হয়েছে সেটার প্রচার এবং দলের ভিতরে যার যার অবস্থান শক্ত করা।
কেউ বলছে একমাত্র অমুক ওই এলাকার প্রচারাভিযানে ভুমিকা রেখেছে বলেই তমুক জয়ী হয়েছে। অমুকের ওই কথাই বিজয়ী হতে মুল ভুমিকা রেখেছে। এমনকি নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর অনুপস্থিতিও নাকি ভোটের
বাক্সে সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসেবে যোপগাংকিত হয়েছে। কেউ বলছে জামাতের নেতাদের বিচারের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করানোই নাকি বিজয়ের মুল কারন। আর আল্লামা শফি সাহেব কইছে "নাস্তিকদের পক্ষ নেয়ায় সিটি নির্বাচনে ভরাডুবি"।
হক মৌলা!
ফরহাদ মাজহারের লিখিত বয়ানপাঠকারী শফি সাহেব ভালোই কইছে। যার যার পক্ষে বিজয়ের বরমাল্য নিশ্চিত করতেই যে এসব কথাবার্তা বলা হচ্ছে এতে কোনই সন্দেহ আমার নাই। কিন্তু গনজাগরন মঞ্চ বা হেফাজতি ইস্যু যে ভোটের বাজারে তেমন(!) কোন ভুমিকা রাখতে পারে নাই এটা অপ্রত্যাশিতভাবে সত্য।
ওহ হ্যা, মহাজোট শিবির বিজয়ী হলেও সাফল্যের ভাগ নেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন 'নানাকথা ও তার পরের কথা' বলতো এতেও আমার সন্দেহ নাই।
কিন্তু এরচেয়েও বড় সত্য হলো, জামাত-বিএনপি জোট মোটেও তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা, যোগ্যতা বা সঠিক পথে রাজনীতি করার কোন সুফল হিসেবে জয়লাভ করে নাই। তারা জয়ী হয়েছে একমাত্র বর্তমান সরকারের বিকল্প হিসেবে। সেই বিকল্পের যায়গায় বিএনপি না হয়ে তাদের পেরালাল অন্য যেকোন সংগঠন সেটা যত নোংরাই হোক তারাই বিজয়ী হতো। এমনকি রংপুরে হলে হয়ত এরশাদের জাতীয় পার্টির কেউ বিজয়ী হতো। অথবা এই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ থেকে মুটামুটি ভালো মানুষ বিদ্রোহী প্রার্থী হলেই বিজয়ী হবার সম্ভাবনা ছিল বিশাল। যার প্রমান চট্টগ্রাম ও নারায়নগঞ্জ। আবার কুমিল্লায় তাদেরকে(জামাত-বিএনপি) দল থেকে সান্টুকে বহিষ্কার করে জয় নিশ্চিত করতে হয়েছিল।
আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আর কয়েকটি দিন পরে এই চারটি সিটিতেই নির্বাচন হোক বিএনপির অধীনেই এবং নিরপেক্ষ ইলেকশন হোক... আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হবে।
যা হোক অনেকের বক্তব্য দেখে বারবার মনে হচ্ছে 'ঝড়ে বক মরছে ফকিরের কেরামতি বাড়ছে'।
আসল বিষয় রাজনৈতিক অর্থনীতির। এখানে কারো ভালো কাজের জন্য কেউ বিজয়ী হয়না। আরেকজনের অধিক ত্রুটিপুর্ণ কাজের কারনেই ভিন্নজন এগিয়ে যায়...