বাংলাদেশের একটি পত্রিকা আছে। উনাদের নিজস্ব বানান রীতি আছে। পত্রিকা নীতিও আছে। আমার ধারনামতে তারা কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাকে অনুসরন এবং অনুকরনও করেন। যার ফলে একটি সফিষ্ট গ্রুপ গড়ে তোলা, পারিতোষিক দিয়ে টিকিয়ে রাখা, প্রকাশনা সংস্থা গড়ে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজকম্ম করছেন। সেটাকে আমি সাধুবাদই জানাই।
কিন্তু আমার প্রশ্ন জাগে যেসব ভাষা-তাত্বিকগন বেতার-টিভি, ফেসবুক-ব্লগ ইত্যাদি মাধ্যমে ভাষার ব্যবহার নিয়ে কাউমাউ করেন মাঝেমধ্যেই, উনারা এই পত্রিকার বানানরীতি নিয়া কিছু বলেন না কেন?
এই পত্রিকাটিতে নামের দুটি অংশ লিখে থাকেন। যার নাম তিন বা ততোধিক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত তাদের নাম কেটে ছোট করে লেখা হয়। কিন্তু তাদের নিয়মিত লেখক ও সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে এই নিয়মের শৈথিল্যতা লক্ষ্যনীয়। কেন?
পক্ষান্তরে রাজনীতিকদের নাম লেখার ক্ষেত্রে পত্রিকার নিজস্ব নিয়ম কড়াকড়িভাবে মানা হয়। কেন? নাম কেটে বিচ্ছিরি করে ফেলা হয়। এটা কোন সভ্যতা হতে পারে?
আচ্ছা একটি দেশে সরকারী স্বিদ্ধান্তের বাইরে ভাষার কোন ভিন্ন বানানরীতি ও নিয়ম কি থাকতে পারে? বুদ্ধিজীবিরা এই বিষয়ে কিছু বলেন না কেন? নাকি পত্রিকার খরপোষ প্রাপ্ত সফিষ্ট গোষ্ঠী ভুলে গিয়েছেন যে, পত্রিকার নিজস্ব নৈতিকতা ও তথ্য আইনের বাইরেও বিশাল জনগোষ্ঠীর আলাদা কিছু নৈতিকতা ও আইন রয়েছে। আছে রীতিনীতি ও বিধিবিধান এবং এটাই হচ্ছে মুলধারা।
এই পত্রিকাটির প্রতি আমার ব্যক্তিগত দুর্বলতা থাকলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, অতি উগ্র তথ্যবাজি করতে গিয়ে খুব নিকট ভাবীকালে জাদুঘরে বা তথ্য আর্কাইভে আশ্রয় নেয়া লাগতে পারে। কেননা এই পত্রিকাটি নিজেদের স্বিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অতি উগ্রতা ও রক্ষনশীলতা প্রদর্শন করলেও এর বাইরের সকল কিছুর ক্ষেত্রে তারা সমঝোতা বা রিকন্সলিয়েশনের তালিম দিয়ে থাকেন। শুধুমাত্র এই দ্বৈতনীতির কারনে জাদুঘরে প্রবেশ করলে বা স্মৃতির খাতায় লিপিবদ্ধ হলে আমি মোটেও অবাক হবো না।
এর দায় এই পত্রিকাটিকেই নিতে হবে। পাঠকের প্রত্যাশা সত্ত্বেও হারিয়ে গেলে বা গ্রহনযোগ্যতা নিম্নমানের হতে থাকলে এর দায় সংশ্লিষ্ট পত্রিকাটিকেই নিতে হবে। ক্ষতি পাঠকেরই হবে...মালিক, সম্পাদক ও সাংবাদিক... তাদের প্রত্যেকের নতুন ব্যবসা বা চাকুরী ঠিকই হবে।
ক্ষতি শুধু আমরা যারা ভালবেসেছি তাদের...