বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে অনুরোধ করে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে আনেন, তাকে সেই বছরই নাগরিকত্ব দেন। বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশাতেই জাতীয় কবি ঘোষণা করেন। তাকে একটি সরকারি কোয়াটার দেয়া হয়। মাসিক ভাতা দেয়া হত ভরণপোষণের জন্য।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর জিয়া ক্ষমতায় এসেই নোটিস জারি করে ৭ দিনের মধ্যে কবির কোয়াটার খালি করানো হয়! অভিযোগ হল বঙ্গবন্ধু নাকি অবৈধভাবে তাকে এটি বরাদ্দ দিয়েছিলেন! তার ভাতাও বন্ধ করে দেয়া হয়। কবির শেষকাল খুব কষ্টের মধ্যেই কাটতে থাকে, অবশেষে শিল্পগোষ্ঠী তাদের সংস্থা থেকে ভাতার ব্যবস্থা করে। খুব দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয়েছে শেষ জীবনে! চিকিৎসা পর্যন্ত সরকারী খরচে হয়নি।
কবির মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি করে কবর দেয়া হয় কলকাতা থেকে আত্মীয় আসার বা তাকে দেখার সুযোগ দেয়া হয়নি।
কাঁচের ঘরে বাস করে ঢিল দিতে নেই, কবি আছেন ত মরমে স্বরণে, কিন্তু জিয়া যেমন কবির আত্মীয়দের মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত করেছেন তেমনি তার লাশও দেখার ভাগ্য হয়নি স্ত্রী পুত্রদের। জিয়া যেমন কবির বাড়ি কেড়ে নিয়েছেন তেমনি, খালেদাকেও বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। অন্যায়ের হাতেনাতেই দৃশ্যমান। একজন উর্দি পরিধানকারী কি কতে কবি সাহিত্যিকের মর্ম বুঝবেন।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু যেমন করে রবীন্দ্রনাথ ভক্ত ছিলেন তেমনি ভক্ত ছিলেন নজরুলের। বঙ্গবন্ধু তার গ্রেফতারী পরওয়ানা আসলে সুটকেসে রবীন্দ্র পাণ্ডুলিপি নিয়ে জেলে ঢুওকতেন আবার রাজনৈতিক ঝামেলাতে নজরুলের বই থেকে পেতেন সংগ্রামী প্রেরণা। তাইত আওয়ামীলীগের তথা ১৯৬৯ সালে সংগ্রামে মূল শ্লোগান জয় বাংলা শব্দটিও নজরুলের বাঙালির 'জয় হোক, বাংলার জয় হোক' শব্দ থেকেই চয়ন করেন। নজরুল বলেছিলেন "তোরা সব জয়ধ্বনি কর", আওয়ামী লীগ জয় বাংলাতেই জয়ধ্বনি করে।
নজরুলের সাথে বঙ্গবন্ধুর এত মিল হল আদর্শগত, সংগ্রামী চেতনাগত।