নামঃ ম্যাপ অব বোনস
লেখকঃ জেমস রোলিন্স
প্রকাশনীঃ বাতিঘর
কাহিনি সংক্ষেপঃ
জার্মানির কোলনে প্রাচীন এক ক্যাথেড্রালে একদল প্রার্থনারত মানুষদের অজানা নিষ্ঠুর এক পদ্ধতিতে খুন করে সন্নাসীর পোশাক পরা ডাকাতদল। ক্যাথেড্রালে রাখা মূল্যবান গুপ্তধন ফেলে তারা নিয়ে যায় পুরনো কিছু হাঁড়। খ্রিস্টিয় ইতিহাসের প্রাচীনতম তিন রাজার এই হাঁড়ের আড়ালে লুকানো আছে অজানা এক নির্দেশনা, যার ভিত উন্মোচিত হলে মহাবিপর্যয়ের মুখে পতিত হবে মানবসভ্যতা। বিপর্যয় ঠেকাতে তদন্তে নিয়োগ দেয়া হয় আমেরিকান সিগমা ফোর্স এজেন্ট কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্স আর তার দলকে, তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে ভ্যাটিকান বিশেষজ্ঞ ভেরোনা আর লেফটেনান্ট র্যাচেল। সম্মিলিতভাবে তদন্ত শুরু করতেই বাধার সন্মুখীন হয় তারা। একের পর এক আক্রমন আর ধ্বংসযজ্ঞের মুখে জীবনবাজি রেখে এগিয়ে যেতে থাকে অভীষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে। এক দিকে বাইবেল, ইতিহাস, মিথ আর বিজ্ঞানের দূর্ভেদ্য পাজল আর অন্যদিকে শক্তিশালি প্রতিপক্ষ, কমান্ডার গ্রেসনের দল কি পারবে বিপর্যয় ঠেকাতে?
অত্যাধুনিক বিজ্ঞান, প্রাচীন মিথ, খ্রিস্টিয় উপাখ্যান, দূর্দান্ত অ্যাকশান আর দূর্ধর্ষ অ্যাডভেঞ্চার নির্ভর এই বইয়ের পটভূমি আবর্তিত হয়েছে পুরনো চার্চ, ক্যাথেড্রাল, আলেকজান্দ্রিয়ার সমুদ্রতল থেকে শুরু করে ভ্যাটিকানের সেইন্ট পিটার ব্যাসিলিকার তলা পর্যন্ত। যারা ধর্মীয় মিথ, অত্যাধুনিক বিজ্ঞান আর অ্যাকশান ভালোবাসেন তাদের জন্যে বইটি একটি রোলার কোস্টার রাইড।
মতামতঃ
জেমস রোলিন্স মানেই অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার এবং থ্রিল। হাজার বছরের ইতিহাস, মিথের সাথে আধুনিক বিজ্ঞানের যোগসূত্র এবং দুর্দান্ত একশন, অ্যাডভেঞ্চার রলিন্স সাহেবের লেখার ধরন। এর আগে ওনার আমাজনিয়া বইটা পড়েছিলাম খুব ভালো লেগেছিলো এরপরে জানতে পারি রোলিন্স সাহেব একটা বইয়ের সিরিজ লিখেছে সিরিজের নাম 'সিগমা ফোর্স'। এই সিগমা ফোর্স সিরিজে মোট ১৬ টি বই লিখেছে। গতবছর সিরিজের প্রথম বই অর্থ্যাৎ 'স্যান্ডস্টর্ম' পড়েছিলাম খুব যে ভালো লেগেছিল বলবো না আবার খুব খারাপও লাগেনি। এরপরে তার পরবর্তী বই 'ম্যাপ অব বোনস' হার্ডকভার অনেক খুজেছি কোথাও পাইনি তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই পিডিএফ পড়া শুরু করেছিলাম।
এই বইটা এক কথায় অসাধারণ! ধর্মীয় মিথ, আধুনিক বিজ্ঞান, প্রাচীন মিথ, খ্রিষ্টীয় উপাখ্যান, দুর্দান্ত অ্যাকশন এবং অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে তৈরি করেছে দারুন একটা প্লট।
কাহিনি শুরু হয়ে চার্চ, ক্যাথেড্রাল, শতবছর আগে ধ্বংস হওয়া আলেকজান্দ্রিয়া লাইটহাউজ দিয়ে সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকায় এবং ফ্রান্সের এভিগননে ঐতিহাসিক টেম্পলারদের নির্মিত গথিক দুর্গ পাপাসির প্রসাদ পর্যোন্ত বিস্তৃত।
অনুবাদের কথা বললে বইটি যেহেতু অনেক তথ্যনির্ভর (কাল্ট, অত্যাধুনিক বিজ্ঞান) তাই বইটি অনুবাদ করতে যে একটু কষ্ট হয়েছে এটা বোঝা যায় তবুও আমার মনে হলো অনুবাদ আরেকটু ভালো হলে পড়ে আরো মজা পাওয়া যেত। আরেকটা কথা যখন বইটি পড়ি তখন কিছু কিছু সময় আমার ড্যান ব্রাউনের কথা মনে পড়েছে লেখার স্টাইলটা অনেকটা ড্যান ব্রাউনের মতোই তবে ড্যান ব্রাউনের বইতে যে রোলিন্স সাহেবের মতো এরকম একশন, এডভেঞ্চার নেই এটা বলাই বহুল্য। যারা কাল্ট, ধর্মীয় মিথ, প্রাচীর মিথ, আধুনিক বিজ্ঞান, একশন, এডভেঞ্চার, রোলারকোস্টার রাইডে পছন্দ করেন তাদের জন্য হাইলি রিকমন্ডেড।
পার্সোনাল রেটিং ৮/১০
হ্যাপি রিডিং
(ছবি ফেইসবুক থেকে নেয়া)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৭