ইদানীং খেয়াল করতেছি আমি একদমই সিরিয়াস হইতে পারতেছিনা। দিনভর খালি বান্দরামি করি। বেকার মানুষের মনে হয় মাথা আউলায়া যায় জলদি! বন্ধুবান্ধবরা সিরিয়াসলি নিজের দুঃখ কষ্টের কথা বলতে আসলেও দেখি নন ভেজ জোকস শুনতেছি এমন ভাব করে হেসে লুটোপুটি খাই! ঐদিন তো রিয়াদ বলেই ফেলল " ঐ তুই ডাক্তারের কাছে যা, তোর অসুখ হইছে!" আমি তাতেও তামাশা করি! আগে ব্লগে প্রেম ভালুবাসার গল্প লিখে ব্লগটারে ঝালাফালা করে ফেলতাম। প্রেম ভালুবাসার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ! বুঝতে পারতেছি প্রেম ভালুবাসারা সব চাকরি খুঁজতে গেছে।
একটু আগে বান্ধবী আসলো বাসায়। চেহারাটা দেখি সাহারা খাতুনের মত কইরা রাখছে। জিগাইলাম "কি হইছে জানটুস?"। ব্যাগটারে বিছানায় আছাড় দিয়া কয় " শালার বুইড়া গুলা এমন বদের হাড়ি ক্যান হয় রে?" আমি বুঝলাম না সে কি কইতে চায়! যতদূর মনে পড়ে হের জামাই জোয়ান মানুষ! বুইড়ারা ওর কোন বাড়া ভাতে ছাই দিছে বুঝলাম না। "ক্যান কি হইছে?" এই ঝামটি মাইরা কইল "মোহাম্মদপুর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আসলাম, পাশে একটা ইয়াং পোলা। শাহবাগে নাইমা গেল। মনে হয় ইনিভার্সিটিতেই পড়ে। সারা রাস্তা সে সীটের বাইরে এক পা রাইখা বইসা ছিল তাও মাঝখানে এক বিঘাত জায়গা রাখছে। সে নামার পর এক মাঝবয়সী লোক উঠলো। এমন ভাবে বসলো যেন খেঁজুরের পাট বিছায়া ঠ্যাং ছড়ায়া বসছে। ২/৩বার নিজে গুটি সুটি দিয়া বসলাম। শেষমেষ কইলাম আঙ্কেল একটু চেপে বসেন। ব্যাটা কইল-- কই চাপুম, জায়গা নাইত। তুমি তো আমার মেয়ের মত! রাগে গা জ্বলতেছিল, নিজেই উঠে দাড়ায়া কইলাম, আপনি বসেন তাইলে! মতিঝিল পর্যন্ত দাঁড়ায়ে আসলাম" আমি টের পাইলাম আমার পেটের মধ্যে মোচড় দিতেছে হাসির বেগ। বেচারী! আমি গত দেড় বছর ঢাকা সিটির কোন বাসে উঠিনাই। এই যন্ত্রণা তাই অনেকদিন সহ্য করতে হয়নাই! তবে আঙ্কেলের কপাল ভালো, পাশে আমি থাকলে তারে নির্ঘাত বাপ বানায়া দিতাম (যেহেতু আমিও তার মেয়ের বয়সী!) যখন মিরপুর থাকতাম তখন ভার্সিটি বাস মিস হইলে মাঝে মাঝে লাইনের বাসে আসতাম। ব্যাগে অল টাইম সেফটিপিন রাখতাম! কতবার যে সেফটিপিন থেরাপি এ্যাপ্লাই করছি! বান্ধবীরে শিখাইলাম " ব্যাগে পিন রাখবি, উল্টাপাল্টা দেখলেই এমন ভাবে ফুটাবি যেন মনে করে তোর কাপড় চোপড়ে পিন জাতীয় কিছু আছে, তাই ফুটে যাচ্ছে, নিজেই সামলে বসবে!"
আমি নিজেও খেয়াল করছি ইয়াং ছেলেরা বাসের মধ্যে অনেক তটস্থ থাকে। কিন্তু "তুমি তো আমার মেয়ের বয়সী"" করে বুইড়া ভামগুলা বাকবাকুম করে!
দুর! শিরোনাম দিলাম তেল দিয়া, সেই তেল নিয়াই কিছু কইলাম না। ইদানীং তেল দেয়া শিখতে ট্রাই করতেছিলাম। কিন্তু ঘটনা হইল, কোন স্ট্রাটেজি ফলো কইরা কোন আসপেক্টে কই তেল মারতে হয় এইটা আমি ধরতে পারিনা। অনেকরে দেখি কাউয়ার মত লাগতেছে মেকাপ দেইখা তাও বলে "আল্লা আপু, আপনাকে কি সুন্দর লাগছেএএএএএএ!!" আমি পা থেকে মাথা অবধি চোখ বুলাই আর নিজেরে জিগাই "সুন্দরডা কোন জায়গায়?" তো এইটা ফলো কইরা পরশু একজনরে কইলাম "ভাইয়া, আপনার শার্টটা আপনাকে অনেক মানাইছে"! উনি বললেন " দুর পাগল, আপুর বাসায় গেছিলাম, আপুর পিচ্চি ইয়ে করে শার্ট ভিজায় দিছে, তাই দুলাভায়ের পুরান শার্ট পরে বের হলাম"! পুরাই ধরা খাইলাম!
ব্লগে দেখি অনেকে এর ওর নাম ধইরা লিখে পোষ্টে তেলের জাহাজ ডুবায় দেয়। দেশে যদি আমেরিকা আক্রমণ করে এদের জন্যে করবে! প্রায়ই ব্লগের হোমপেইজ খুইলা দেখি তেল ভাসতেছে! এত তেল খাইলে কিন্তু পিম্পল হবে, চেহারা নষ্ট হয়ে যাবে । আমিও তেল মারতে চাই। কারে তেল দিব খুজতে খুঁজতে মনে হইল যার নুতন পোষ্টের আশায় ব্লগে ঢুকি সেই ইমন জুবায়ের ভাইয়া কে তেল দেই। যাতে উনি আরও বেশি বেশি ইতিহাস, রুপকথা আর মিথোলজি নিয়ে লেখা দেন। ব্লগের সেই ক্ল্যাসিক লেখা গুলা মিস করি! তেলের কয়টা জাহাজ ডুবাইলে যে সেই ক্লাসিক চেহারা ফিরে আসবে!
(ধূর মিয়া, কাম নাই আর? এই লেখা পড়তে আইছেন? যান, সরল অংক করেন গিয়া )