বছরের এই একটি মাস আজম সাহেবের খুব খারাপ যায়, ডিসেম্বর মাস এলেই তার বুকের বাম দিকে চিনচিন ব্যাথা শুরু হয় এবং ১ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত এই ব্যাথাটা নাছোড়বান্দা হয়ে লেপ্টে থাকে তার বুকে। ডিসেম্বর মাস এলেই বাংগালগুলো যেভাবে আদিখ্যেতা দেখাতে শুরু করে, উফ, আজম সাহেবের সফেদ দাড়িগুলো ঘৃনায় খচখচ করে ওঠে। আর বেগানা মেয়েগুলোর লাল-সবুজ শাড়িমোড়া ডাসা শরীরগুলো স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে কুফরি (নাউজিবিল্লাহ) শুরু করলে ক্রোধে ৪০ বছর আগের মতো তার শিশ্ন উত্থিত হতে চায়। ডিসেম্বরের ১৬টা দিন তিনি পারতো পক্ষে ঘর থেকে বের হন না বা বের হলেও আকাশের দিকে তাকান না, কারন ক্যাটকেটে লাল ও সবুজের পতাকা খুব অশ্লীল ওড়ে শহরের অধিকাংশ বাড়ির ছাদে, তবে এটা ভেবে তিনি একটু শান্তি পান; ঐ সবুজের মধ্যে যে টকটকে লাল, ঐ লালে তার অবদান অপিরিসিম। তার আংগুলের ইশারায় ইন্ডিয়ার দালালগুলোর জবাইকৃত গলা দিয়ে কম রক্ততো জমা হয়নি ঐ পতাকায়! এই পাথরসম ১৬টা দির্ঘ দিনের প্রতি ৫ ওয়াক্ত তিনি আলমিরার গোপন ও পবিত্র গুহা থেকে চাঁদ তারা খচিত পতাকাটি গভির শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চুম্বন করেন।
১৬ তারিখের প্রতিটা সেকেন্ড আজম সাহেবের অন্তর্গত ক্ষরন, বিশেষ করে নিয়াজির অনিচ্ছুক কলমের খোঁচা এখনো তার বুক বিদির্ন করে দেয়। তবে হ্যা, ডিসেম্বরের ১৪ তারিখটা তাকে চৈত্রের খরায় এক পশলা বৃস্টির মতো কাজ করে, তার নির্দেশে বাংগালগুলোর মাথা শুন্য করে দেওয়া হয়েছিল; জহির, মুনীর, শহীদুল্লাহ এদের থ্যাতলানো মাথার ঘিলুর গন্ধ এখনো তাকে উজ্জিবিত করে। গতো ৩৯ বছরের প্রতিটি ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে তিনি শপথ করেছেন সেই অসমাপ্ত পবিত্র দায়িত্ত তিনি সম্পন্ন করবেন। কাজ অনেকটা গুছিয়ে এনেছেন তিনি। মাথামোটা বাংগালগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের কথা বলতে বলতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলে আর তিনি ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসেন।
আজ ১৬ তারিখের রাতে তিনি আলমিরার গোপন ও পবিত্র গুহা থেকে চাঁদ তারা খচিত পতাকাটা বের করে পরম মমতায় চুম্বন করবেন এবং বুকে জড়িয়ে ঘুমাবেন, তার স্বপ্নে খেলা করবে অসমাপ্ত যুদ্ধের পবিত্র পরিনতির কথা, ৪০ বছর এমন কোন সময় নয়................