কাঠঠোকরা পাখিটি যে জীবন্ত গাছের গুড়িতে গর্ত করে বাসা করে এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু একবার কি ভেবে দেখেছেন যে কি প্রচন্ড শক্তিতে তারা গাছের গুড়িতে ঠোট দিয়ে আঘাতকরে তাতে যে কোন প্রাণীর মস্তিস্কে রক্ত ক্ষরণ ঘটেমৃত্যু হবার কথা, অথচ কাঠঠোকরার কিছুই হচ্ছে না। আপনি হয়ত বলতে পারেন কাঠঠোকরার ঠোট খুব শক্ত তাই কিন্তু বাস্তবতা আরো জটিল। এই পাখিরমাথার খুলিটি এই প্রচন্ড আঘাত হজম করার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তিসহ সৃষ্ট; এর কপাল, মাথার খুলির সাথে ঠোট ও চোয়ালের সংযোগ রক্ষাকারী কয়েকটি বিশেষ মাংসপেশী এমন শক্তিশালী যে সব মিলিয়ে এই অসাধ্যটি করা কাঠঠোকরা পাখির জন্য খুবস্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঠঠোকরা
সাধারণত পাইন গাছে বাসা করে।যেসব পাইন গাছের বয়স ১০০বছর বা এর চেয়ে উর্ধে কাঠঠোকরা এসকল গাছকেই বেছে নেয়। কারন এই বয়সের পাইন গাছের দেহে এক প্রকার রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, ফলে পাইন গাছের শক্ত বহিরাবন নরম হতে থাকে। অর্থ্যাৎ পাইন গাছের বয়স নির্ধারনে কাঠঠোকরা পাখিকে একজন বিশেষজ্ঞ বলতে পারেন।
কাঠঠোকরা তাদের গর্ত গৃহের চারপাশে আরো অনেকগুলি ছোট ছোট ছিদ্র করে রাখে। কালক্রমে পাইন গাছের আঠাল কষ এসে এই ছিদ্রগুলি ভরে ফেলে এবং ক্রমেএকটা আঠাল বেষ্টনীর সৃষ্টি করে যা কাঠঠোকরা কে সাপের আক্রমন থেকে রক্ষা করে।
কাঠঠোকরার জিহবার অগ্রভাগ এমন সূচাল যে সে অনায়সে পিপড়ার গর্ত থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারে। আর এদের জিহবার গঠন এমনপ্রক্রিয়ায় যে পিপড়ার দেহের অম্ল জাতীয় পদার্থ আহার সংগ্রহে তাদের প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারেনা। এখন বুঝা যায় কাঠঠোকরা একটি বিশেষ জীবন্ত সত্ত্বা হিসাবে তার বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমূহ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিপূর্ণ একক হিসাবে সৃষ্ট হয়েছিল। ডারউইনের বিবর্তনবাদীদের তত্ত্ব কথা মানতে গেলে কাঠঠোকরা পাখিটি তার প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা পর্যায়ে পেলে অনেক আগেই পৃথিবী থেকে এইপাখিটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে হত।
তথ্য সূত্রঃ http://www.Harunyahya.comএবং Encyclopedia Britannica.