আম্মা: আমি মারা গেলে তুই কোরআন তেলাওয়াত করবি না?
আমি: না আম্মা। আল্লাহ নিষেধ করছেন,আল্লাহ বলছেন কোরআন জীবিতদের জন্য। (সুরা ইয়াছিন আয়াত ৭০)। কুরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন পিতামাতা জীবিত থাকাকালীন কি করতে হবে,মারা গেলে নয়।(সুরা আর রুম আয়াত ৫২)
আম্মা: আমার কবরে এসে সূরা ও পড়বি না?
আমি: আম্মা,যেই সূরা আমি পড়বো,সেখানেই বলা আছে পিতামাতার জন্য ব্যয় করতে,তাদের সাথে উত্তম আচরণ করতে ইত্যাদি যা জীবিত থাকাকালীন আমার জন্য করণীয় ছিল এখন এটা কোন কাজে আসবে না।(সুরা ৬৩ আয়াত ১০)
আপনার মৃত্যুর সাথে সাথেই আপনার সব বন্ধ হয়ে যাবে আর আপনি শুধু আপনার কর্মফলই ভোগ করবেন যা কুরআনে আল্লাহ স্পষ্ট করে বলেছেন।(সুরা ইয়াসিন আয়াত ৫৪)
আম্মা: তাহলে তো মানুষকে এই দুয়ার অর্থ জানানো বেশি জরুরি,তাহলে মানুষ নিজ নিজ কর্মের ব্যাপারে বেশি সচেতন হবে।
আমি: কিন্তু শয়তান তা হতে দিবে না।শয়তানের সবচেয়ে বড় সফলতা,শয়তান আমাদের কর্মের বইকে তেলাওয়াতে মানে সুর করে পড়ায় আটকে ফেলেছে।
আম্মা: মানে?আল্লাহ কি সুর করে পড়তে বলেন নি?
আমি: সূরা নিসার ১০ নং আয়াতে আল্লাহ জোর দিয়ে বলছেন,"নিশ্চয় যারা পিতৃহীনদের সম্পদ অন্যায় ভাবে গ্রাস করে,তারা আসলে নিজেদের উদরে অগ্নি ভক্ষণ করে।আর অচিরেই তারা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।"
বুঝে না পড়ায় এই কথা আমরা অনুধাবন করি না।তাই আমরা অনেকের সম্পদ ভোগ করে ও শুধু কোরআন তেলাওয়াত,দুয়া,মোনাজাত,মসজিদ,মাদ্রাসায় দান, ইজতেমা,জামাত,নামাজ পড়ে,হজ করে নিজেদের নাজাত খুঁজছি অথচ আল্লাহ নিশ্চিত ভাবে বলছেন এদের আগুনে দিবেন তা আমাদের ভাবায় না।
আম্মা: আল্লাহর নিয়ম কত সুন্দর!
আমি: আম্মা,এই নিয়মকেই আরবিতে বলে সুন্নত আর শয়তান আল্লাহর নিয়ম বা সুন্নতকে ঢেকে দিয়েছে নবীর সুন্নত তৈরি করে অথচ নবীর কোন সুন্নত নেই৷নবীর সুন্নতের নামে প্রচলিত সমস্ত ইবাদত মিথ্যা!সুন্নত বা নিয়ম হল আল্লাহর,তাই আল্লাহ বার বার বলেছেন "আমার রাসুলগণের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে পাঠিয়ে ছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ সুন্নত এবং তুমি আল্লাহর সুন্নতের কোন পরিবর্তন পাবে না।(সুরা ১৭: আয়াত ৭৭)(সুরা ৩৩:আয়াত ৩৮)(৩৩:৬২;৩৫:৪৩;৪৮:২৩)
আম্মা: মানুষ যত শিক্ষিত হবে তত সত্য সামনে আসবে
আমি: না মা,এরা এতটাই উগ্র; যে এসব সামনে আনবে তাকেই হাদিস মানে না,নবিজির হাদিস অস্বীকার মানে নবীকে অস্বীকার এসব বলে তাকে আক্রমণ করবে, ইহুদিদের এজেন্ট,শেষ জামানা,কেয়ামতের আলামত, তাকে কতল করা ঈমানী দ্বায়িত্ব,এসব বলে শেষ করে দিবে তবুও সত্য স্বীকার করবে না।
আম্মা: কেন? তারা কোরআনের সত্য জেনে ও এই কথা কেন বলে?
আমি: কেননা এই সত্য স্বীকার করলে নবীর নামে তাদের হাজার বিজনেস হারাবে,জান্নাতের ঠিকাদারি হারাবে, ফতোয়া দেওয়ার পাওয়ার হারাবে,দুয়া বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে,বিদেশি ডোনেশন হারাবে। সুন্নতি জিনিস বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে।
আম্মা: মানুষ কি বোকা নাকি? মানুষ সত্য খুলে দেখে না?
আমি: না দেখে না। ধর্মের ব্যাপারে আমরা বেশিরভাগ আবেগি আর অন্ধ,কেউ পড়ে দেখে না,শুনে শুনে প্রশ্ন করে।তবে সত্য চাপা থাকে না।সুরা নিসা আয়াত ৬৪ "রসূল এ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছি যে,আল্লাহর নির্দেশ মানে আল্লাহর কিতাব অনুসারে তার আনুগত্য করা হবে।"
আপনি যদি কোরআন দিয়ে রাসুলের আনুগত্য করেন, তখন দেখবেন রাসুল নিজের নামে সুন্নত প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করেননি বরং তিনি নিজে আল্লাহর সুন্নত অনুসরণ করেছেন।কিন্তু যারা নবীর সুন্নত পালনের মধ্য দিয়ে জান্নাত প্রাপ্তির আশায় আছেন,তারা কখনোই সত্যকে মেনে নিতে পারবে না।
আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়,"নবিজি কেন বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন?"
আমাদের উত্তর হবে,"নবিজির দাড়ি ছিল আর উনি খেজুর খেতেন, টুপি পরতেন তাই!!!
এই জন্যই আল্লাহ বলেছেন এই কিতাব জ্ঞানীদের জন্য, শুধু জ্ঞানীরাই এই কিতাবের উপদেশ অনুধাবন করতে পারবে।
সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪