একসময় সাইকোলজীর একটা বিষয় পড়েছিলাম : যে ব্যক্তি নিজের বক্তব্যকে প্রকাশ করার সময় অতিরিক্ত জোর দিয়ে প্রকাশ করে অথবা বিভিন্ন প্রকার অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে তার বক্তব্য সত্য-সঠিক বলে প্রকাশ করতে চায় "তিনি অবশ্যই অহঙ্কারী"।
জনৈক লেখক সামুতে ২টা পোষ্ট দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন- তাবলীগের মধ্যে শিরক আছে মর্মে পবিত্র কোরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তাছাড়া তাবলীগওয়ালারা সব মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাবলীগের কাজগুলোর মধ্যে শিরক, ও সুফীবাদ বা পীর ইজম বিদ্যমান- ইত্যাদি ইত্যাদি বিদ্যমান বলার চেষ্টা করেছেন। পোষ্ট দুটির লিঙ্কগুলো হলো-
০১. প্রচলিত তাবলীগ জামাত বনাম আমাদের ইসলাম (১ম পর্ব)
০২. বহুল প্রতীক্ষিত: প্রচলিত তাবলীগ জামাত বনাম আমাদের ইসলাম (২য় পর্ব)
জনাব লেখক কোন কোন মন্তব্যের জবাবে বার বলছেন- যদি বাপের বেটা হয়ে থাকেন আমার পরে পোষ্টে আমন্ত্রন। তাছাড়া আরো বলেছেন "কিছুক্ষনের মধ্যেই আসতেছে আমার চরম পোষ্ট"
স্ক্রিনসট দিলাম-
সুধী পাঠক: আপনাদের সবাইকে সবিনয়ে বলতে চাই- তাবলীগের সমালোচনাকারী আর কোরআন হাদিসের অনুবাদ নিয়ে গবেষনাকারী একজন পোষ্ট লেখকের ভাষার ব্যবহার আর তার কমেন্টের জবাব দেওয়ার তরিকায় সুস্পষ্টভাবে অনুমান করা যায়- পোষ্ট লেখকের বয়স ত্রিশের নিচে- আর জ্ঞানের অহন্কার বিদ্যমান। (অবশ্য আমার পড়া সাইকোলজির সুত্রটা যদি ভুল না হয়ে থাকে) যে ভাষায় যে জ্ঞানের দ্বারা দ্বীন, ইসলাম-আর ইসলামের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হয় সে জ্ঞান আর প্রজ্ঞা প্রয়োজন সেটা তার মধ্যে এখনও আসেনি। যদি আসত তাহলে তার ভাষার ব্যবহার এমন হত না। উদাহরনঃ জনৈক কমেন্টকারীর শেষ লাইনে যখন বললেন- স্কীন সটটি গভীর দৃষ্টিতে দেখে নেবার অনুরোধ করছি অনুসণ্ধিৎসু পাঠকের জন্য।
পোষ্ট লেখক অপ্রাসঙ্গিক এই বিষয়ে নীরবতা কি প্রমাণ করে সে ভার পাঠকের কাছে ছেড়ে দিলাম- তাবলীগ নিয়ে আলোচনায় এই অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ আনার বিষয়টিকে পোষ্ট লেখক কোন সমালেচনা/জবাব দেননি।
যাক- এবার আসা যাক তাবলীগ সম্পর্কে আমার জানা বক্তব্যে- তাবলীগ এর মুল কথার মধ্যে সর্বপ্রথম যে কথাটি বলতে আর আমল করতে শেখানো হয়- তা হলো আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নাই- মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল- তার ব্যক্ষায় তাবলীগে আসা একজন মুর্খকেও এই কথাটি মুখে উচ্চারন করতে শেখানো হয় যে- আমরা চোখের সামনে যা কিছু দেখি বা অনুভব করি সবই মাখ্লুক (সৃষ্টি)। আর মাখলুক (সৃষ্টি) কোন কিছুই করতে পারেনা আল্লাহ্ বা খালিক (স্রষ্টা)ছাড়া। আর খালিক বা স্রষ্টা সব বিকছুই করতে পারে সৃষ্টি ছাড়া। কোন কিছুর দ্বারা কোন কিছুই হয়না- যা কিছু হয় সবই আল্লাহর পক্ষ হইতে হয়। সবার আগে শিক্ষা করতে হবে ঈমান- আর আল্লাহর একত্ববাদের ঈমান ছাড়া কোন প্রকার এবাদতের মূল্য নাই।
আলোচনা আরো দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে... তাই প্রসঙ্গক্রমে বলতে চাই- তাবলীগ শিরক শিখাচ্ছে কথাটি তিনি কিভাবে বুঝলেন? পাঠক সহ সকলের কাছে প্রশ্ন রাখলাম।
আর একটা অত্যন্ত জরুরী কথা: একজন তাবলীগী ভাই এর কাছ থেকে জেনেছি- যে উদ্যেশ্ব্যে তাবলীগের উৎপত্তি এবং পথচলা- তা হলো- তাবলীগ মনে করে মুসলিম জাতি শিরক আর ইমানের কলেরা বা ডিহাইড্রেশন দ্বারা অসুস্থ মৃত্যুপথ যাত্রী একটা রোগীর মত। আর এই রোগীকে বাঁচানোর জন্য সবার আগে প্রয়োজন- "খাবার স্যালাইন" এখানে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করলে হিতে বীপরীত ফল হতে পারে। অতএব আগে একজন মুসলমানকে ঈমানের কলেরা থেকে মুক্তির জন্য যে জিনিসটা প্রয়োজন- সেই স্যালাইনের দায়িত্বটাই তাবলীগ পালন করছে। আর একটি স্যালাইন যেমন ছেলে বুড়ো সকল বায়সীদের জন্য উপযোগী- তেমনি তাবলীগের কাজটিও মুর্খ-বা উচ্চ শিক্ষিত সকলের জন্য উপযোগী হিসাবে কাজ করছে। রোগী শক্ত হয়ে গেলে যেমন কোন প্রকার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করুক সমস্যা নাই। যে কোন লাইনে জ্ঞানী হোক কোরআন হাদিস অধ্যয়ন করুক কোন সমস্যা নাই। তাবলীগ শুধু শিরক আর কবরপুজা/ বাতেল মুক্ত একত্ববাদের পথে-স্যালাইনের কাজটিই করছে। আর এই পথে তাবলীগ কতটুকু সফল সেটা বিচারের ভার পাঠকের হাতে। আর এই তাবলীগই যে শয়তানের প্রধান শক্র হবে এটা সন্দেহ করাটাও অমুলক নয়। এখন উল্লিখিত পোষ্ট লেখক কার প্রেরনায় এসব লিখছেন- আল্লাহ্ ভাল জানেন।
বাংলা প্রবাদ "বেশী বাছলে কম্বল মিছা হয়ে যায়" আবার জ্ঞানের অহকার এর কারনে আজাজীল ফেরেস্তা আজ অভিশপ্ত শয়তান" সে ভাবে সব কিছুতেই দোষ খুজতে গিয়ে আমি আবার কোন বিভ্রান্তিতে পড়ছিনাতো? এই বিষয়টিও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
আল্লাহ সবাইকে সত্য পথ চেনার তৌফিক দান করুন। আমিন।
তাবলীগ নিয়ে বিভ্রান্তি : আমার কিছু কথা- পর্ব- ০২
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৫০