সূচনাঃ গরু একটি গোয়ালপালিত পশু। তবে গোয়াল না থাকলে বাইরে খুঁটিতেও বেঁধে রাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুরি হওয়া কিংবা দড়ি ছিঁড়ে চম্পট দেওয়াসংক্রান্ত যাবতীয় দায়দায়িত্ব আপনার।
বর্ননাঃ গরুর পা আছে ঠিক, কিন্তু তাদের সম্প্রদায়ে জুতা পরার সিস্টেম চালু না থাকায় এ পর্যন্ত কোনো গরুকেই কখনো জুতা (*১)পরতে দেখা যায় না।এরা জুতা পরলে অবশ্য জুতার ক্ষেত্রে ‘জোড়া’ শব্দটি চালু না হয়ে ‘হালি’ শব্দটি চালু হতে পারত।
গরুর দুটি শিং রয়েছে। এই শিং নামক দুটি অস্ত্র রাখার দায়ে কোনো গরুকে এ পর্যন্ত জেলহাজত কিংবা অন্য কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে শোনা যায়নি। গরুর বিশাল একটি মাথা রয়েছে। মাথার ওপর হালকা চুল থাকলেও বড় কোনো চুল নেই, কারণ গরুরা ইচ্ছে করেই চুল বড় করে না। আর বড় করে না এই জন্য, যেহেতু বাজারে এখনো তাদের চুলের যত্নে কোনো শ্যাম্পু কেনাবেচা হচ্ছে না।
গরুর মেগা সাইজের একটা ভুঁড়ি আছে। এই ভুঁড়ি কমাতে তারা কোনো যানবাহনে (*২) না চড়ে হেঁটে যাতায়াত করে। গরু তাদের মাথায় লম্বা চুল না রাখলেও লেজের মাথায় লম্বা কতগুলো চুল রাখে, যাতে মশা-মাছি গায়ে বসামাত্র কষিয়ে বাড়ি মারতে পারে।
মেয়ে গরুকে গরু সম্প্রদায়ের পরিভাষায় বলা হয় গাই। তাদের নামে বাংলাদেশের একটা জেলারও নামকরণ করা হয়েছে। গাইবান্ধা। টিসু কিংবা রুমাল না থাকায় গরুরা মন খুলে কাঁদতে পারে না। গরু সাংঘাতিক উপকারী প্রাণী।
উপকারিতাঃ গরু আমাদের চারপাশের ঘাস, লতাপাতা খেতে গিয়ে শাকসবজিও খেয়ে ফেলে। ফলে আমাদের বাড়িতে কেউ শাক রান্না করতে চাইলেও করতে পারেন না। এতে বিরাট বাঁচা বেঁচে যাই আমরা। শাক খেতে যা বিশ্রী লাগে!
এমনিতে খালাতো/মামাতো/ফুফাতো/চাচাতো/তালতো/…..তো বোনের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোরবানির ঈদে গরুর মাংস দিয়ে আসার ছুতোয় আমরা সহজেই দেখাটা করে ফেলতে পারি।
অপকারিতাঃ গরুর কিছু অপকারী দিকও আছে। গরু নামে পৃথিবীতে একটা প্রাণী আছে বলেই শিক্ষকেরা আমাদের গরু বলে সম্বোধন করেন। যা অতিশয় মর্মবেদনাদায়ক। গরু খানিকটা বেয়াদব কিসিমের প্রাণী। কারণ সে কোনো রকম আদব-কায়দার ধার না ধেরে মাঝেমধ্যে এমন জোরে লাথি মারে যে নিজেকে তখন মনে হয় ফুটবলজাতীয় একটা কিছু। বিষয়টা একটু লজ্জাকর বৈকি।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায়, গরুর ছোটখাটো অপরাধ থাকলেও প্রাণী হিসেবে গরু কিন্তু ভালোই। যে কারণে শুধু কোরবানির বাজারে নয়, কবিদের কবিতার বাজারেও গরুর ভালো একটা ডিমান্ড আছে। তাই তো জনৈক অখ্যাত কবি তার এক জবরদস্ত কবিতায় এভাবে রশি ধরে টেনে এনেছেন গরুকে—‘তুমি সাগর, আমি মরু/ছিলাম ছাগল, হলাম গরু।’
ফুট(ইঞ্চি/গজ/মিটার নহে)নোট:
*১ বিদ্রঃ গোপন সূত্রে থুক্কু প্রকাশ্য সূত্রে পাওয়া খবর মতে কিছু আধুনিক গরুকে জুতা পায়ে দেখতে পাওয়া গেছে।
সূত্র: মন্তব্যের ফটো
*২ বিদ্রঃ গোপন সূত্রে থুক্কু প্রকাশ্য সূত্রে পাওয়া খবর মতে কিছু আধুনিক গরুকে যানবাহনে চড়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেছে।
সূত্র: মন্তব্যের ফটো
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:০১