সেদিন উত্তরা এক বন্ধুর বাসায় থাকলাম। আমার কলেজ ফ্রেন্ড। প্রথম সারির এক প্রাইভেট ইউনি থেকে বের হয়ে সদ্য এক ফার্মে জয়েন করছে। বন্ধুর বাসা মানে, ফ্ল্যাট ভাড়া করে কয়েকজন থাকে। বাকিরা তারই ভার্সিটির জুনিয়র পুলাপান। অনেক কথা হল বন্ধুর সাথে। তারি ভার্সিটির দুই বছরের জুনিয়ার এক মেয়ে তার বর্তমান জিএফ। একেই নাকি সে বিয়া করবে ফাইনাল। অনেক স্বপ্নের কথা বললো। বললাম দোস্ত ভাল চাকুরি করস তাইলে প্রব কি? বিয়া কইরা ফালা।
- না দোস্ত এখন না।
- কেন?
- বিয়া করলেই তো সব শেষ। বিয়া করলে বুঝবি বৌ তরে গলায় দড়ি দিয়া ঘুরাইব।
- তাইলে কি বিয়া করবিনা? মজা লইতাসস?
- আরে করমু দোস্ত কিছুদিন পর। রিমিরেই (আসল নাম নয়) বিয়া করুম। ওরে সত্যিই ভালবাসি। সংসার তো এখনি করতাসি সপ্তাহে এক দুইদিন কইরা। পরে ফাইনালি করুম।
- মানে?
প্রথমে কাহিনি কি বুজলাম না। পরে রাত্রে বিড়ি ধরাইয়া বন্ধু নিজেই বলা শুরু করলো। যা বুঝলাম তা হল। সে রিমিকে সত্যিই ভালবাসে এবং বিয়ে করবে। এখন তারা একটু আক্টু সংসার সংসার খেলে। রিমি বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষে বন্ধুর বাসায় আসে। দুইজন ঘুরে ফিরে বাজার করে। রাতে রিমি নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ায়। খুব নাকি মজা। শুক্রবার অনেক বেলা করে উঠে। আজ সারাদিন তাদের। সারাদিন ঘুরে বেরায় রাতে রিমি রান্না করে দিয়ে যায় অথবা বাইরে খায় দুজনে। এই তাদের সপ্তাহের ২-১ দিনের সুখের সংসার।
বললাম দোস্ত রাতে যে থাকে বাড়িওয়ালা কিছু বলেনা? বন্ধু আমার দিকে চরম বিরক্তির ভংগিতে তাকিয়ে বল্ল আরে বেটা এসব ব*ল নিয়া বাড়িওয়ালা ভাববো কেন? আমার ফ্লাটে চাইরটা রূম প্রতি রুমেই পুলাপানের গার্লফ্রেন্ডরা আসে, থাকে। এইসব নিয়া এই যুগে ভাবলে বাড়ি আর ভাড়া দেয়া লাগব না উত্তরাতে।
বন্ধুকে আর কিছু বলি নাই। ইট ইজ হিজ লাইফ। তবে তার মতে এটা নাকি খুবি কমন এবং নরমাল।
ভাবি, কতই না পরিবর্তন হয়ে গেছে দেশে। গত এক বছরে ১২ ঘন্টা করে কামলা খেটে অনেক কিছুই মিস করলাম দুনিয়ার। যে ঘটনার কথা বললাম তাতো একরকম লিভ টুগেদারই। দেশে এখন এভাবে লিভ টুগেদার চালু হয়ে গেছে ভাবতেই অবাক লাগে। আমাদের ছিল কতই না সুন্দর সমাজ। অনন্য জিনিসের মত এটাও এই দেশে এসে গেল। আর আমি বুঝিনা মেয়েরা কেন এত বোকা। ঝামেলা হলে ছেলেদের না হয় কোন প্রব্লেম হয়না কিন্তু প্রেগনেন্সি, এবরশন এই সব ধকল তো মেয়ের উপর দিয়েই যায়। কিসের লোভে তারা বিয়ের আগেই আরেক ছেলের সাথে থাকে? প্রেম করা আমি মানি কিন্তু একসাথে থাকা কিভাবে মানা যায়? এই কথা বলার নিশ্চয় অপেক্ষা রাখেনা যে ছেলে মেয়ে একসাথে থাকা মানেই শারিরীক সম্পর্ক।