‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল। ’
অর্থ: ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম সাহায্যকারী, কার্যসম্পাদনকারী।
’ -সূরা আল ইমরান : ১৭৩
উত্তম সাহায্যকারী কে: বর্ণিত আয়াতে আল্লাহতায়ালার ওপর ভরসা করার বিষয়ে বলা হয়েছে। আল্লাহর ওপর ভরসা করার নানা পর্যায় রয়েছে। কেউ মুখে মুখে ভরসার কথা বলে, কেউ সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ভরসা করে, কেউ-বা সর্বদাই সব কাজে আল্লাহর ওপর ভরসা করে। এটি তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়।
আল্লাহর ওপর যার আস্থা যত বেশি, তার সফলতার পরিপূর্ণতা তত বেশি। তাওয়াক্কুল একটি গুণ, একটি ইবাদত। এটি অর্জন ছাড়া ঈমান অসম্পূর্ণ থাকে। সে কারণে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ওপর তাওয়াক্কুল করা যায় না। মৃত বা জীবিত কোনো ওলি-আল্লাহ, পীর-বুজুর্গ, নবী-রাসূলের ওপর ভরসা করা শিরক। আর শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় জুলুম।
আমল: বর্ণিত আয়াতাংশটি বেশি বেশি পাঠে আল্লাহর ওপর ভরসা দৃঢ় হয়। প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর এ আয়াত কয়েকবার পাঠ করার ফজিলত অনেক বেশি। আর এ কথা প্রমাণিত যে, আল্লাহর ওপর ভরসাকারীই প্রকৃত মুমিন ও সঠিক পথপ্রাপ্ত সফল ব্যক্তি।
আল্লাহর ওপর ভরসা করার কারণে কঠিন বিপদও মোকাবেলা সহজ হয়। ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা) হলো- ঈমানের অর্ধেক। আর দ্বিতীয় অর্ধেক হলো- আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া।
কোরআনে কারিমে তাওয়াক্কুল ৯ বার, বহুবচনে মুতাওয়াক্কিল ৪ বার, বিভিন্ন ক্রিয়াপদে ৩৩ বার এবং ওয়াকিল ২৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
ইসলামি শরিয়তে তাকদিরে বিশ্বাস রাখা ওয়াজিব। তাই তাকদিরে বিশ্বাস রাখার পাশাপাশি চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সফল হলে যে কোনো ব্যাপারে কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হবে। আর সফল না হলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
প্রচেষ্টা ও তাওয়াক্কুল উভয়টাই থাকতে হবে। তাকদিরের দোহাই দিয়ে রোগ হলে চিকিৎসা না করা, শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা না করা ইসলামসম্মত নয়।
আয়াতের শিক্ষা : বর্ণিত আয়াতের শিক্ষা হলো, সর্বাবস্থায় আল্লাহর ওপর ভরসা করা এবং আল্লাহকে নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে, আল্লাহকে সব শক্তির উৎস মনে করা। এ ছাড়া এই আয়াতের আরও শিক্ষণীয় বিষয় হলো, শত্রুপক্ষের অনুপ্রবেশ এবং আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তাদের ছড়িয়ে দেওয়া প্রচারণা সম্পর্কে সাবধান থাকা, শত্রুরা যত বেশিসংখ্যক কিংবা শক্তিশালী হোক না কেন- আল্লাহর ক্ষমতা তার চেয়েও বেশি- এমন বিশ্বাস মনে দৃঢ় রাখা।
আসলে, দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি নিতান্ত অনিচ্ছায় এবং প্রস্তুতি বা আগ্রহ ছাড়া কোনো কাজ সম্পন্ন করে, তবে সে কাজের কোনো মূল্য নেই। তদ্রুপ যার মধ্যে খোদাভীরুতা নেই এবং সৎকাজের ইচ্ছাও নেই- সে যুদ্ধে অংশ নিলেও তা হবে মূল্যহীন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:২২