কাজী নজরুল ইসলামের কিছু লেখা প্রথম পর্ব ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কবিতা অগ্নিবীণা
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলো অগ্নিবীণা । ১৩২৯ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসে ইংরেজী ১৯২২ সালে অক্টোবর মাসে প্রকাশ করা হয় । এই গ্রন্থে মোট বারোটি কবিতা আছে । কবিতাগুলি হচ্ছেঃ
১।প্রলয়োল্লাস বিদ্রোহী ।
২।রক্তাম্বর-ধারিণী মা ।
৩। আগমণী ধূমকেতু ।
৪। কামাল পাশা ।
৫। আনোয়ার ।
৬। রণভেরী ।
৭।শাত-ইল-আরব ।
৮। খেয়াপারের তরণী ।
৯। কোরবানী ও মোহররম ।
এছাড়াও এই গ্রন্থটির সর্বাগ্রে বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ-কে উৎসর্গ করে লেখা এতে একটি উৎসর্গ কবিতাও আছে । অগ্নি-বীণা কবিতার প্রচ্ছদপটের পরিকল্পনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং এঁকেছিলেন তরুণ চিত্রশিল্পী বীরেশ্বর সেন । বইটির তখন মূল্য ছিল ৩ টাকা । ৭ নং প্রতাপ চ্যাটার্জি লেন থেকে গ্রন্থকার কর্তৃক গ্রন্থটি মুদ্রিত এবং প্রকাশিত হয় । প্রাপ্তিস্থান হিসেবে গ্রন্থে লেখা ছিল আর্য পাবলিশিং হাউস,, কলেজ স্ট্রিট,, মার্কেট দোতলায় । গ্রন্থটি ছাপা হয় মেটকাফ প্রেস,, ৭৯ নং বলরাম দে স্ট্রিট,, কলিকাতা থেকে । দাম ছিল এক টাকা । গ্রন্থটির উৎসর্গ হচ্ছে- বাঙলার অগ্নিযুগের আদি পুরোহিত সাগ্নিক বীর শ্রীবারীন্দ্রকুমার ঘোষ শ্রীশ্রীচরণারবিন্দেষু । নিচে লেখা আছেঃ তোমার অগ্নি-পূজারী -হে- মহিমাম্বিত শিষ্য কাজী নজরুল ইসলাম । অরবিন্দ ঘোষের ভ্রাতা বারীন্দ্রকুমার ঘোষ বাংলা তথা ভারতের বিপ্লববাদী আন্দোলনের অন্যতম নায়ক ছিলেন । বিপ্লবে বিশ্বাসী নজরুল তাই নিজেকে বারীন্দ্রকুমারের হে-মহিমান্বিত শিষ্য বলে উল্লেখ করে তাকেই তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করেছিলেন ।
কাজী নজরুলের কবিতা তালিকাঃ
১। প্রলয়োল্লাস ।
২। বিদ্রোহী ।
৩। রক্তাম্বর-ধারিণী মা ।
৪। আগমণী ।
৫। ধূমকেতু ।
৬। কামাল পাশা ।
৭। আনোয়ার ।
৮। রণভেরী ।
৯। শাত-ইল-আরব ।
১০। খেয়াপারের তরণী ।
১১। কোরবানী ।
১২। মোহররম ।
নিচে বিদ্রোহী কবিতা দেওয়া হলোঃ
নজরুল ইসলাম রচিত বিদ্রোহী বাংলা ভাষার বিখ্যাত একটি কবিতা । এটা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালে বিজলী পত্রিকায় । এরপর প্রকাশিত হয় মাসিক প্রবাসী ও মাসিক সাধনা এবং ধূমকেতু পত্রিকায় । প্রকাশিত হওয়া মাত্রই এটি ব্যাপক ভাবে জাগরণ সৃষ্টি করে । দৃপ্ত বিদ্রোহী মানসিকতা ও অসাধারণ শব্দবিন্যাস এবং ছন্দের জন্য আজও বাঙালি মানসে কবিতাটি ''চির উন্নত শির" বিরাজমান হয়ে রয়েছে ।
বল বীর-
বল উন্নত মম শির !
শির নেহারী'' আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর !
বল বীর-
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি''
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি''
ভূলোক দ্যূলোক গোলোক ভেদিয়া
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর !
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর !
বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির! আমি চিরদুর্দম, দূর্বিনীত, নৃশংস,,
মহাপ্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস !
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,,
আমি দূর্বার,,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার !
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল !
আমি মানি না কো কোন আইন,,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি,, আমি টর্পেডো,, আমি ভীম ভাসমান মাইন !
আমি ধূর্জটী,, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী,, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর !
বল বীর-
চির-উন্নত মম শির! আমি ঝঞ্ঝা,, আমি ঘূর্ণি,,
আমি পথ-সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি''।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ ।
আমি হাম্বীর,, আমি ছায়ানট,, আমি হিন্দোল,,
আমি চল-চঞ্চল,, ঠমকি'' ছমকি'
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি'
ফিং দিয়া দেই তিন দোল
আমি চপোলা-চপোল হিন্দোল ।
আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা''
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা,,
আমি উন্মাদ,, আমি ঝঞ্ঝা !
আমি মহামারী, আমি ভীতি এ ধরীত্রির''
আমি শাসন-ত্রাসন,, সংহার আমি উষ্ণ চির অধীর ।
বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির ! আমি চির-দূরন্ত দুর্মদ
আমি দূর্দম মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ । আমি হোম-শিখা,, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,,
আমি যজ্ঞ,, আমি পুরোহিত,, আমি অগ্নি ।
আমি সৃষ্টি,, আমি ধ্বংস,, আমি লোকালয়,, আমি শ্মশান,,
আমি অবসান,, নিশাবসান ।
আমি ঈন্দ্রাণী-সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ তূর্য,, আমি কৃষ্ণ-কন্ঠ,, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা বারিধির ।
আমি ব্যোমকেশ,, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর ।
বল বীর-
চির-উন্নত মম শির ! আমি সন্ন্যাসী,, সুর সৈনিক,,
আমি যুবরাজ,, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক ।
আমি বেদুইন,, আমি চেঙ্গিস,,
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কূর্ণিশ ।
আমি বজ্র,, আমি ঈষাণ-বিষানে ওঙ্কার,,
আমি ইস্রাফিলের শৃঙ্গার মহা-হুঙ্কার,,
আমি পিনাক-পাণির ডমরু ত্রিশুল,, ধর্মরাজের দন্ড,,
আমি চক্র-মহাশঙ্খ,, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড !
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা,, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,,
আমি দাবানল-দাহ,, দহন করিব বিশ্ব ।
আমি প্রাণ-খোলা হাসি উল্লাস,, আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস
আমি মহাপ্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু-গ্রাস !
আমি কভু প্রশান্ত,, -কভু অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,,
আমি অরুণ খুনের তরুণ,, আমি বিধির দর্পহারী !
আমি প্রভঞ্জনের উচ্ছাস,, আমি বারিধির মহাকল্লোল,,
আমি উজ্জ্বল,, আমি প্রোজ্জ্বল,,
আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল,, চল ঊর্মির হিন্দোল-দোল !
আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী,, তন্বী নয়নে বহ্নি,,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি !
আমি উন্মন, মন-উদাসীর,,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস,, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর ।
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,,
আমি অবমানিতের মরম-বেদনা,, বিষ-জ্বালা,, প্রিয় লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের,,
আমি অভিমানী চির ক্ষূব্ধ হিয়ার কাতরতা,, ব্যাথা সূনিবিড়,,
চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর থর থর প্রথম পরশ কুমারীর !
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি,, ছল ক' রে দেখা অনুখন,,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা,, তার কাকণ-চুড়ির কন-কন ।
আমি চির শিশু,, চির কিশোর,,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আচর কাচুলি নিচোর !
আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া,,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী,, বেণু-বীণে গান গাওয়া ।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা,, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর,, আমি শ্যামলিমা ছায়াছবি !
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি,, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ !
আমি সহসা আমারে চিনেছি,, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাধ !
আমি উত্থান,, আমি পতন,, আমি অচেতন চিতে চেতন,,
আমি বিশ্বতোরণে বৈজয়ন্তী,, মানব-বিজয়-কেতন ।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালী দিয়া,,
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে,,
তাজী বোর্রাক্ আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে !
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নেয়াদ্রী,, বাড়ব বহ্নি,, কালানল,,
আমি পাতালে মাতাল,, অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল !
আমি তড়িতে চড়িয়া,, উড়ে চলি জোড় তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,,
আমি ত্রাস সঞ্চারি'' ভুবনে সহসা,, সঞ্চারি ভূমিকম্প
। ধরি বাসুকির ফণা জাপটি -
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি’ ।
আমি দেবশিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব-মায়ের অঞ্চল !
আমি অর্ফিয়াসের বাশরী,,
মহা-সিন্ধু উতলা ঘুম্ঘুম
ঘুম্ চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝ্ঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি ।
আমি শ্যামের হাতের বাশরী। আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোযখ নিভে নিভে যায় কাপিয়া !
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া !
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,,
কভু ধরনীরে করি বরণীয়া,, কভু বিপুল ধ্বংস ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা !
আমি অন্যায়,, আমি উল্কা,, আমি শনি,,
আমি ধূমকেতু জ্বালা,, বিষধর কাল-ফণী !
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী,, আমি রণদা সর্বনাশী,,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি !
আমি মৃন্ময়,, আমি চিন্ময়,,
আমি অজর অমর অক্ষয়,, আমি অব্যয় !
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য !
আমি উন্মাদ,, আমি উন্মাদ !!
আমি সহসা আমারে চিনেছি,, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাধ !! আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার,,
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব,, আনিব শান্তি শান্ত উদার !
আমি হল বলরাম স্কন্ধে,,
আমি উপাড়ি'' ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে । মহা- বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল,, আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না -
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি আমি সেই দিন হব শান্ত !
আমি বিদ্রোহী ভৃগু,, ভগবান বুকে একে দিই পদ-চিহ্ন,,
আমি স্রষ্টা-সূদন,, শোক-তাপ-হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব-ভিন্ন !
আমি বিদ্রোহী ভৃগু,, ভগবান বুকে একে দেবো পদ-চিহ্ন !
আমি খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন! আমি চির-বিদ্রোহী বীর -
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির !
সঞ্চিতা কবিতা সংকলন
সঞ্চিতা এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাব্য সংকলন । এই গ্রন্থে মোট ছিয়ানব্বইটি কবিতা আছে । তার মধ্যে - বিদ্রোহী,,সর্বহারা,,সাম্যবাদী,,মানুষ,,জীবন বন্দনা,,খুকী ও কাঠবেরালী,,চল চল প্রভৃতি প্রধান ।
গ্রন্থটির উৎসর্গ পত্রে লেখা আছেঃ “বিশ্বকবিসম্রাট শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রীশ্রীচরণারবিন্দেষু ।
ফনীমনসা কবিতা ।
ফণি মনসা কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ । ফণি মনসাতে সর্বমোট ২৩টি কবিতা আছে ।
কবিতা তালিকা
১। সব্যসাচী ।
২। দ্বীপান্তরের বন্দিনী ।
৩। প্রবর্তকের ঘুর-চাকায় ।
৪। আশীর্বাদ ।
৫। মুক্তি-কাম ।
৬। সাবধানী-ঘন্টা ।
৭। বিদায়-মাভৈ ।
৮। বাংলায় মহাত্মা ।
৯। হেমপ্রভা ।
১০। অশ্বিনীকুমার ।
১১। ইন্দু-প্রয়াণ ।
১২ ।দিল-দরদী ।
১৩। সত্যেন্দ্র-প্রয়াণ ।
১৪। সত্য কবি ।
১৫। সত্যেন্দ্র-প্রয়াণ-গীতি ।
১৬। সুর-কুমার ।
১৭। রক্ত-পতাকার গান ।
১৮। অন্তর-ন্যাশনাল সংগীত ।
১৯। জাগর সূর্য ।
২০। যুগের আলো ।
২১ ।পথের দিশা ।
২২। যা শত্রু পরে পরে ।
২৩। হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধ ।
চক্রবাক কবিতা
চক্রবাক কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ । এটি ১৯২৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় । এই গ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ১৯টি ।
কবিতাগুলো হলোঃ
১। তোমারে পড়িছে মনে ।
২। বাদল-রাতের পাখি ।
৩। স্তব্ধ রাতে ।
৪। বাতায়ন-পাশে গুবাক-তরুর সারি ।
৫। কর্ণফুলী ।
৬। শীতের সিন্ধু ।
৭। পথচারী ।
৮। মিলন-মোহনায় ।
৯। গানের আড়াল ।
১০। তুমি মরে ভুলিয়াছ ।
১১। হিংসাতুর ।
১২। বর্ষা-বিদায় ।
১৩। সাজিয়াছি বর মৃত্যুর উৎসবে ।
১৪। অপরাধ শুধু মনে থাক ।
১৫। আড়াল ।
১৬। নদীপারের মেয়ে ।
১৭। ১৪০০ সাল ।
১৮। চক্রবাক ।
১৯। কুহেলিকা ।
সাতভাই চম্পা এটি কাজীনজরুল ইসলামের একটি কাব্যগ্রন্থ । এটি ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত হয় ।
নির্ঝর এটি জাতিয় কবি কাজীনজরুল ইসলামের একটি কাব্যগ্রন্থ ।এটি প্রকাশিত হয় ১৯৩৯ সালে ।
সাম্যবাদী -কাজী নজরুল ইসলাম
গাহি সাম্যের গান- যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান যেখানে মিশছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুস্লিম-ক্রীশ্চান। গাহি সাম্যের গান! কে তুমি?- পার্সী? জৈন? ইহুদী? সাঁওতাল, ভীল, গারো? কন্ফুসিয়াস্? চার্বআখ চেলা? ব’লে যাও, বলো আরো! বন্ধু, যা-খুশি হও, পেটে পিঠে কাঁধে মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও, কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিটক- জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থসাহেব প’ড়ে যাও, যত সখ- কিন্তু, কেন এ পন্ডশ্রম, মগজে হানিছ শূল? দোকানে কেন এ দর কষাকষি? -পথে ফুটে তাজা ফুল! তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান, সকল শাস্র খুঁজে পাবে সখা, খুলে দেখ নিজ প্রাণ! তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগাবতার, তোমার হৃষয় বিশ্ব-দেউল সকল দেবতার। কেন খুঁজে ফের’ দেবতা ঠাকুর মৃত পুঁথি -কঙ্কালে? হাসিছেন তিনি অমৃত-হিয়ার নিভৃত অন্তরালে!
বন্ধু, বলিনি ঝুট, এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট। এই হৃদ্য়ই সে নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন, বুদ্ধ-গয়া এ, জেরুজালেম্ এ, মদিনা, কাবা-ভবন, মস্জিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়, এইখানে ব’সে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরিচয়। এই রণ-ভূমে বাঁশীর কিশোর গাহিলেন মহা-গীতা, এই মাঠে হ’ল মেষের রাখাল নবীরা খোদার মিতা। এই হৃদয়ের ধ্যান-গুহা-মাঝে বসিয়া শাক্যমুনি ত্যজিল রাজ্য মানবের মহা-বেদনার ডাক শুনি’। এই কন্দরে আরব-দুলাল শুনিতেন আহবান, এইখানে বসি’ গাহিলেন তিনি কোরানের সাম-গান! মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই ।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন
দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?
দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখস্তান.....
শেখস্তান.....
বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের বিয়ের খাওয়া
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন