চলে তবে যাওয়া যাক তোমাতে আমাতে
পেছনে চির রৌদ্রের নগর রেখে,
বহুদিন দেখি না সন্ধ্যা, চৌকোণা আকাশের ফুটো হতে
কালো আকাশের মাঝে ছাড়া ছাড়া রোশনাই চুমকি।
বহুদিন বিমর্ষ লেগেছে পূর্ণিমার চাঁদখানি,
কাপড়ে ময়লা দাগের মতন
মধ্য রাত্রির সারি সারি দালানের মাথায়
হলুদ ল্যাম্পপোস্ট, গাড়ির অনিয়মিত শাঁ শাঁ শব্দ ;
নিস্তব্ধ অন্ধকার রাত্রে নিমগ্ন সৌন্দর্যের
অমল ধবল রূপ, ভুলে গেছি বোধ হয়।
তুমি কি জানতে চাও, ফিরব কি না ?
এই মাত্র ছেড়ে আসা মুখ, অতি পরিচিত।
অতি প্রিয় কিনা, জিজ্ঞেস করলে থমকে যাবে জানি।
খাবার প্লেটের উপর প্রশ্ন রেখে খাবারের বিস্বাদ জিহবায়।
ঠোঁটে ঠোঁটে এই কথা শুনেছ বহু বার
‘‘আমাকে অন্যদের সাথে মিলিয়ো না, আমি ব্যতিক্রম’’
ব্যতিক্রম হবার সাধারণ সূত্র ভুলে গিয়ে
যারা মিশেছে এক দলে
তাদেরকে বাদ দিয়ে চলো বড় সাধারণের কাছে ।
সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় পার হল।
মসৃন নতুন দেয়ালে যখন সাদা চুনকাম দেই
আমার চতুর্পাশের সমুদয় পিলার গুলিকে বড় শক্ত দেখতাম
দেখতাম, তাদের সাদা চোখ ;
সে সব চোখ গুলিতে আজ সবুজ শ্যাওলা
রং চটে তাদের পলেস্তরা খসে পড়েছে
পেছনে ফিরলে দেখবে, আমার ভাঙা বাড়ি।
এই অন্ধকার যাত্রায় আমাদের সাংকেতিক চোখে তীব্রতা
বিড়ালের মত ধীরে, আদুল পায়ে, চলো, যাই।
আমাদের তাড়া নেই।
দিনভর একাকী মানুষ গুলো গোছানো কাপড় পরে
তাড়াহুড়া করে,
চড়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়িতে, দু নম্বর ড্রাইভার
বাইরে থেকে ঝকঝকে, মসৃন পালিশ ;
প্রেয়সীর চকচকে লিপস্টিক, শক্ত ফোমের ব্রা
প্রেমিকের অসংখ্য বার ব্যবহৃত অভিজ্ঞ হাত।
সাজের কি পরিহাস্য বাড়াবাড়ি
সমৃদ্ধ মার্জিত টাই
হায় ! কি সুন্দর তাদের ঝোলানো ফাঁস !
এর পুরোটাই মিথ্যে নয় জানি,
তবু কত কাল মেনে নেয়া যায় সত্যের অর্ধ ভাগ।
এই হালকা আলো আঁধারির সন্ধ্যায় নাহয়
আমরা ভুলে যাওয়া গল্প বলি।
শরীরের নিচে যে হৃদয় আছে তা তো এক কালে
মন্দ ছিল না,
অভিনয়ের রাংতা খুলে
সাদামাটা মনটা দেখতে পারো স্নিগ্ধ অবসরে ।
নিরেট, নির্বোধ, হাস্যাস্পদ বলে যারা গালি দিত
আমিও চালাকি করে তারপরে
অতি ভারিক্কি বিজ্ঞ মানুষের মত চলতাম
এতদিন - বাদামের খোসার মত,
তুমি আজ অনায়াসে তার সাদা শাঁস
দেখে নিতে পারো।
তাই যাওয়া যাক তোমাতে আমাতে
আমাদের প্রার্থিত গন্তব্যে।
বাদুড়ের মতন দিন বাড়ি ছেড়ে ;
স্বপ্ন, স্বপ্নের ফানুস আর চিলতে চিলতে বাস্তবে।
আসন্ন অন্ধকারে অপসৃত স্বপ্নেরা ফিরে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:২৭