তালিকার শীর্ষে থাকবে প্রথম আলো
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
এই বিশাল,বর্ণাঢ্য,বেগবান ঐতিহাসিক উপন্যাসের পটভূমিকায় রয়েছে গত শতাব্দীর শেষ এবং বর্তমান শতাব্দীর শুরুর এক নবজাগরণের সময়কাল।যখন হঠাৎ যেন ঘুম ভেঙে কিছু মানুষ আবিষ্কার করছে দেশ নামের এক ভাবসত্তাকে। শরীরে অনুভব করছে পরাধীনতার জ্বালা। ব্যক্তিগত মর্মযাতনা,ভালোবাসার অপূর্ণতাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে জাতিগত অধঃপতনের গ্লানি। দু-পর্বে বিন্যস্ত এই মহান উপন্যাসের কাহিনীর শুরু এক রাজ-অন্তঃপুরে।ঠিক যেন রুপকথার এক রাজবাড়ি, যেখানে কয়েকজন মহারানীর সঙ্গে বিহার করছেন এক কঠোর-কোমল মহারাজ, রাজপুত্র-রাজকন্যারা ঘোরাঘুরি করছে কাছাকাছি। অথচ এ-কাহিনী রূপকথা নয়। মাত্র এক শো বছর আগেকার কথা এবং এই মহারাজের মুখের ভাষা বাংলা, রাজ্যের নাম- ত্রিপুরা। সেই পার্বত্য ত্রিপুরা-রাজ্য থেকে ক্রমশ এই কাহিনী বিস্তৃত হয়েছে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী বাংলায়,তারপর সমগ্র ভারতে। অসংখ্য জীবন্ত চরিত্র। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মহারাজ বীরচন্দ্র মাণিক্য, রাধাকিশোর মাণিক্য, বিলেত-প্রত্যাগত তরুণ কবি রবীন্দ্রনাথ, অকস্মাৎ-দৃষ্ট উল্কার মতন ব্যতিক্রমী সন্ন্যাসী বিবেকানন্দ, আধুনিক ভারতের প্রথম বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্র,আয়ার্ল্যান্ডের অগ্নিকন্যা মার্গারেট নোবল, বঙ্কিমমচন্দ্র, তিলক, ওকাকুরা, অবনীন্দ্রনাথ,গিরিশ ঘোষ, অর্ধেন্দু মুস্তাফি প্রমুখ বিস্তর চেনা এবং সেই সঙ্গে অনেক দরিদ্র-মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ। সব ছাপিয়ে, এই উপন্যাসেরও মূল নায়ক-সময়।
দূরবীন
দূরবীন মূলত তিন প্রজন্মের গল্প। প্রথম প্রজন্মের নায়ক জমিদার হেমকান্ত, দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক কৃষ্ণকান্ত এবং তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব। উপন্যাসের প্রথম পর্যায়ে বিপত্নীক হেমকান্ত ও রঙ্গময়ী নামের প্রবল ব্যক্তিত্ব অধিকারী এক পুরোহিত কন্যার গোপন প্রণয় কাহিনী ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য পারিবারিক কাহিনী নিয়ে গল্প এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক কৃষ্ণকান্ত। স্বদেশী আন্দোলনে উদ্ভুদ্ধ কৃষ্ণকান্তের দেশ ভাগের পর আমুল পরিবর্তন নিয়ে এই উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাহিনী। তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব। বিশ শতকের উপান্ত পর্বে এক দিক ভ্রষ্ট বিদ্রোহী যুবক ধ্রুব। ধ্রুবর স্ত্রী রেমি, যার সঙ্গে এক অদ্ভুত সম্পর্ক তার। কখনো ভালবাসা, কখনো উপেক্ষা, কখনো বা প্রবল বিরাগ। অথচ রেমির ভালবাসা শত-আঘাতেও অবিচল। একদিকে রেমির সঙ্গে সম্পর্ক অন্যদিকে পিতা কৃষ্ণকান্তের মধ্যে সেই ব্রক্ষচারী ও স্বদেশের জন্য উৎসর্গকৃত প্রানসত্তা টিকে খুঁজে না-পাওয়ার ব্যর্থতায় ক্ষতবিক্ষত ধ্রুবর অদ্ভুত কাহিনী দিয়েই গল্পটি শেষ হয়।
পূর্ব পশ্চিম
বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ১৯৪৭ দেশ বিভাজন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনাবদ্য সৃষ্টি 'পূর্ব-পশ্চিম' উপন্যাস। পূর্ব-পশ্চিম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাংলা ভাষায় লেখা একটি বৃহৎ উপন্যাস । এই উপন্যাসটি কলকাতা থেকে প্রকাশিত দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল ।
পার্থিব
আমাদের প্রত্যেকেরই একটা নিজস্ব জগত আছে এবং প্রত্যেকেই নিজের মত করে চিন্তা করে, এই পার্থিব জীবনের চলার পথে অনেক চিন্তাভাবনা আমাদের মাথায় খেলে । অনেক প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খায়,সচেতন কিংবা অচেতন মনে মাঝে মাঝে অনেক প্রশ্ন এসে দাগ কাটে, আসলে এই যে আমাদের জীবন এর উদ্দেশ্য কি ? আমরা কিসের দিকে অগ্রসর হচ্ছি এই রকম অনেক দার্শনিক প্রশ্নের কোন উত্তর আমরা খুঁজে পাই না । এই উপন্যাসে লেখক তার সৃষ্টি বিভিন্ন চরিত্র ও আধডজন কাহিনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এইসব প্রশ্নের উত্তর গ্রামবাংলা ও শহরের প্রেক্ষাপটে । বিষ্ণুপদের তিন ছেলের মধ্যে কৃষ্ণজীবন গ্রামের দরিদ্রতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও পড়াশুনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন সাথে সাথে পরিবেশবিজ্ঞানী হিসাবে দেশ-বিদেশে তার নাম হয় , কিন্তু তারপরও তার সেই ছোট বিষ্ণুপুর গ্রামটি তাকে টানে । এই পৃথিবীর প্রতি তার অনেক মায়া কিন্তু পৃথিবী যে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তা তিনি কাউকে বোঝাতে পারেন না তার স্ত্রীও তাকে বুঝতে পারে না।
সাতকাহন প্রথম পর্ব সাতকাহন দ্বিতীয় পর্ব
সাতকাহন এর কেন্দ্রীয়চরিত্র সাহসী, স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত এক মেয়ে দীপা-দীপাবলী। ভাগ্যের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ করতে করতে বহুবাঁধা, বিপর্যয় পার হতে হতে কিভাবে দীপা সন্ধান পেল অমল এক তীরের, তাই নিয়েই-এ কাহিনী। চা বাগানে গাছগাছালি, নদী -এ উপন্যাসের সূচনা। কাহিনী বিস্তারের সঙ্গে- সঙ্গে ক্রমশ বিস্তৃৃতর হয়েছে পটভূমি। চালচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছে শহরতলি, কো-এডুকেশন কলেজ, মেয়েদের হোষ্টেল, কফি হাউজ, সমকালীন ছাত্র ও রাজনৈতিক আন্দোলনের ছবি। ভাগ্যবিড়ম্বিত সেই- মেয়ে দীপা শৈশবে যে মাকে হারিয়েছে এবং বাবা নিখোঁজ, দীর্ঘকাল পর্যন্ত মাসি আর মেসোমশাইকেই যে জেনে এসেছিল মা আর বাবা বলে, দশ বছর বয়স মাত্রই বাহাত্তর ঘন্টার জন্য যার সিঁথিতে উঠেছিল সিদুঁর। তারপরও দুঃস্বপ্নবৎ এই নিষ্ঠুর অতীতকে মুছে ফেলে যে শুরু করতে চেয়েছিল নতুন জীবন, জয় করতে চেয়েছে নিজের ভাগ্য । আর সেই চলার পথেও কাছের মানুষের বীভৎস, লোভী চেহারা যাকে বারবার আঘাত করে, কিন্তু পারে না পর্যুদস্ত করতে। যার জীবনে এসে মেশে নাটকে, আবার জীবন কেবলই ছাপিয়ে যায় নাটকে। একদিকে দীপার এই চরিত্র চিত্রনে, অন্যদিকে বহুবিচিত্র ঘটনার প্রবল ঘাত প্রতিঘাতে চারপাশের চরিত্রাবলীর সঙ্গে সর্ম্পকের সুক্ষ টানা পোড়েন মানুষী হ্নদয়ের বহু অচেনা দিকের নিপুন উদঘাটনে “সাতকাহন”।
গর্ভধারিনী
উচ্চবিত্ত পরিবারের স্বাধীনচেতা মেয়ে জয়িতা। তবে সমাজের উঁচু শ্রেনীর আর দশটা মেয়ের মত সে নয়। নয় বিলাসিকতায় গা ভাসানো ঝকমকে এক্সপেন্সিভ শোপিস মাত্র। বিত্তশালীদের বৈভব-বিলাসিতার ভেতরকার নগ্ন-উন্মুক্ততায় তার দমবন্ধ হয়ে আসে। প্রতিবাদী সে আচরণে, প্রতিবাদী বেশভূষায়।কল্যাণ, সুদীপ, আনন্দ জয়িতার বন্ধু। জয়িতার সাথে প্রেসিন্ডেন্সিতে পড়ে।প্রত্যেকে স্বপ্ন দেখতো একটা শ্রেণীহীন সমাজের, যেখানে ধনী-গরীব থাকবে না, সবার জীবনযাত্রার মান একই হবে, মানুষ শুধু নিজেকে নিয়ে ভাববে না বরং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে সমান ভূমিকা রাখবে। তারা স্বপ্ন দেখে দুর্নীতিমুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, মানুষের ভেতরের কুসংস্কার ও অসচেতনতা মুক্ত সত্যিকারের স্বাধীন এক সমাজের, স্বপ্ন দেখে পরিবর্তনের।