২০১১ বিশ্বকাপ এ ওয়েস্টইন্ডিজ এর সাথে শোচনীয় ভাবে হারার পর থেকেই বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ,ব্লগ এ এবং ফেসবুক এ সাকিব বিরোধী নানা রকম কথা লেখা হচ্ছে। তখন সাকিব ও একটি দৈনিক এ কিছু আপত্তিকর কথা লিখেছিল সাবেক ক্রিকেটার দের সম্পর্কে। মাত্র ৭ দিন এর মাথায় চট্রগ্রাম এ ইংল্যান্ড এর বিপক্ষে অ যখন সব সমালচনার জবাব দিয়ে দিল তখন আবার সবাই চুপ। কিন্তু বিশ্বকাপ এর শেষ টা ভাল না করতে পারায় সবাই আবার ওর উপর খেপল। আবার শুরু হল তার মুন্ডুপাত। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ও তেমন কিছু করতে পারল না। এখন কেকেআর এ গিয়ে ভাল খেলতে শুরু করতেই আবার কিছু লোক মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠল। বেশ কয়েক দিন ত বিশ্রাম নেয়া হয়ে গেছে। এখন আবার ওই ছেলেটির পিছনে লাগতে হবে। অনেকেই বলতে শুরু করেছে আই পি এল এ বেশি টাকা পাচ্ছে বলেই ও এমন ভাল করছে। আসলেই কি তাই?
চলুন একটু পেছনে ফিরে তাকাই।
২০০৮ সাল। সেপ্টেম্বর মাস।
হাবিবুল বাশার, আলক কাপালি সহ ১৪ জন চলে গেল আই সি এল এ। সাকিব কিন্তু যায় নি। এটা কয় জন মনে রেখেছে?
২০০৯ সালের প্রথম দিক। জানুয়ারী মাস।
সাকিব উঠে এল ওডিআই অল রাউন্ডার রাঙ্কিং এ ১ নাম্বারে।
টানা অসাধারন খেলতে লাগল । তখন কি তাকে বিসিবি ছাড়া অন্য কেউ টাকা দিত?
এই কয়েক মাস সে খেল্ল অসাধারন ভাবে। সউথ আফ্রিকা , নিউজিলান্ড, ইংল্যান্ড এর মত প্রতিকুল পরিবেশে খেল্ল এক জন বিশ্ব মানের খেলোয়াড় এর মত। ফল পেল তার ২০১০ সালে। উস্টারশায়ার চুক্তি করল ৫০০০০ পাউন্ড এর। মানে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার। আই পি এল এর মত বেশি না হলেও ৩ মাসে ৫০ লক্ষ টাকা, তার সাথে গাড়ি বাড়ি ত অনেক ই। দেশে ত কেউ অত টাকা দেয় না। কাউন্টি তে ভাল খেলতে শুরু করল। তখন কেউ কেউ বলতে লাগল ও আর দেশে ফিরবে না। ইংল্যান্ড ই থেকে যাবে। অ টাকার জন্য খেলে। কই? সে ত ফিরে এল।
এর পরের ঘটনা কি মনে আছে?
অক্টোবর এ ছিল নিউজিলেন্ড সিরিজ। ব্যাট আর বল হাতে একাই হারিয়ে দিল অ নিউজিলেন্ড কে। হ্যাঁ, একাই ত হারিয়েছে। বাকিরা ছিল সহযোগী।
এর পর এল বিশ্ব কাপ। আর শুরু হল সমালচনা।
কারা করল এই সমালচনা। সাকিব জা বলেছে তা কি ভুল ছিল? টিভি চ্যানেল এর . সি. রুম এ বসে যে সব সাবেক রা কথা বলতেন তাকে নিয়ে তারা কি এমন খেলেছিলেন? তারা ত ওই যুগ এর খেলোয়াড় ছিলেন যখন আমরা স্বপ্ন দেখতাম বাংলাদেশ ৫০ ওভার খেলবে। কন মতে ২০০ করতে পারলেই আমরা খুশিতে ১৬ খানা হয়ে যেতাম। আর এখন কয় জন দর্শক খেলা দেখতে বসে ৫০ ওভার আর ২০০ রান দেখার জন্য? সবাই চায় বাংলাদেশ জিতুক । সাকিব যে দল কে নেতৃত্ব দিচ্ছে তার গড় বয়স ২২/২৩। তার নিজের বয়স ২৪। ও কিছু ওসসদসদসদসদ্বা ও ও ও ও ও ও ও ও ও কিছু ভুল বললে তার সমালচনা করা উচিত নাকি তার ভুল টা ধরিয়ে দেয়া উচিত? আমাদের দেশের মানুষ সব সব সময় উল্টো কাজ করে। বিশ্ব কাপ এর সময় কে জেন সাকিব এর বিতর্কিত অঙ্গ ভঙ্গির একটা ফটো ছেড়ে দিল নেট এ। কতটা মস্তিষ্ক বর্জিত হলে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই রকম অবিবেচনা প্রসুত কাজ করা যায়?
এখন কেকে আর এ ভাল খেলছে তা ও অনেকের সহ্য হচ্ছে না অনেকের। আই পি এল থেকে এসে যখন মাঠে আব্র ঝলক দেখাবে তখন ঠিক ই সব আবার চুপ হয়ে যাবে।
কিছু তথ্য দি।
সাকিব ই একমাত্র বাংলাদেশী বোলার যে অডি আই রাঙ্কিং এ ১ নাম্বার এ উঠেছিল। টানা প্রায় দেড় বছর ছিল ২ নাম্বার এ। অডি আই অল রাউন্ডার রাঙ্কিং এ ১ নাম্বার ছিল ২ বছর ৩ মাস এক টানা। বর্তমান টেস্ট রাঙ্কিং এও ও সেরা দশ এর এক জন। এ সব এ ত সে করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এ বাংলাদেশ এর হয়ে খেলে। তাহলে আমরা কিভাবে ওর এত অবদান ভুলে ক্রমাগত ওর সমালচনায় মেতে থাকি। সাকিব আসলেই একজন মেচ উইনার। তার দোষ কি এই যে ও ঠোঁট কাটা উত্তর দেয়? সবাই ত আর একরকম হয় না। আমাদের উচিত সাকিব এবং পুর বাংলাদেশ টিম এর পাশে থাকা এবং সর্বদা তাদের সমর্থন করা। না হলে এই ছেলেটি একজন ইয়ান বোথাম, একজন ভিভ রিচরডস, একজন ফ্লিন্টফ হতে পারবে না। একজন লিজেন্ড হতে পারবে না। আমাদের কি উচিত হবে জেনে শুনে একজন সম্ভাবনাময় লিজেন্ড কে গলা টিপে মেরে ফেলা? সময় ই মনে হয় ভাল বলতে পারবে।
বি.দ্র. ঃ এটা আমার প্রথম লেখা। জানি না কেমন হল। ভাল লাগ্লে মন্তব্য করবেন। খারাপ লাগ্লে আর বেশি করে মন্তব্য করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:২৩