somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজ্ঞান পর্ব-৩ঃ রহস্যময় রাতের আকাশ।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হাজার নক্ষত্রখচিত রাতের আকাশ কতই না সুন্দর। হাজার বছর ধরে আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই আকাশকে দেখেছেন অবাক হয়ে।আর কৌতুহলী মানুষ হিসেবে হাজার প্রশ্ন এসেছে তাদের মনে। রাতের আকাশ এমন কেন? চিরকালই কি এমন ছিল? চিরকালই কি এমন থাকবে? আকাশের দিকে তাকিয়ে আসলে আমরা কী দেখি?
আগেকার দার্শনিকেরা বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়েছিলেন আকাশ সম্পর্কে। কিন্তু, বর্তমানে বিজ্ঞানের যুগ। আমরা আকাশকে দেখি বিজ্ঞানের চোখে। এই লিখায় প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
আমরা যা দেখিঃ রাতের আকাশে আড়াআড়িভাবে মহাবিশ্বের ২৮,০০০ মেগাপারসেক এলাকা আমাদের কাছে দৃশ্যমান। এতে আছে ১০০ বিলিয়নেরও বেশি ছায়াপথ।যেগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন সুপারক্লাস্টার, গ্যালাক্টিক ফিলামেন্ট ও শূণ্যস্থান নিয়ে সজ্জিত। মোট নক্ষত্রের সংখ্যা প্রায় ৩ থেকে ১০০ × ১০ ২২ টি।যদিও খালি চোখে আমরা মাত্র ৫০০০ এর মত নক্ষত্র দেখতে পাই।
ছায়াপথ কী?
আমাদের পৃথিবী, আরও ৭ টি গ্রহ ও তাদের শতাধিক উপগ্রহ, সূর্য নামক নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।এই ৮ টি গ্রহ ,উপগ্রহসমূহ ও সূর্যকে নিয়েই সৌরজগৎ।কতগুলো গ্রহ-উপগ্রহ ও সূর্যকে নিয়ে যেমন একটি নক্ষত্রব্যবস্থা বা সৌরজগৎ গঠিত হয়, তেমনি এরকম অসংখ্য নক্ষত্রব্যবস্থা নিয়ে গঠিত হয় একটি ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি।সূর্য যেমন পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের আবাসস্থল ঠিক তেমনি গ্যালাক্সিগুলো হল নক্ষত্রদের আবাসস্থল।গ্রহগুলো যেমন সূর্যকে ঘিরে অবিরাম পাক খাচ্ছে,নক্ষত্রগুলোও ছায়াপথে তাদের আপন কক্ষপথে অবিরাম ঘূর্ণায়মান।বিভিন্ন আকারের ছায়াপথ রয়েছে।তার মধ্যে উপবৃত্তাকার, কুণ্ডলাকার,সর্পিল অথবা অনিয়মিত।
বলছিলাম আকাশের কথা।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (আইএইউ) আকাশকে ৮৮টি ভাগে ভাগ করেছে যার প্রত্যেকটির রয়েছে সুস্পষ্ট সীমারেখা। এর ফলে এখন পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান মহাকাশের প্রতিটি স্থানই কোন না কোন তারামণ্ডলের মধ্যে পড়ে।যেমনঃ কালপুরুষ মণ্ডল, মীন মণ্ডল, পরশু মণ্ডল, কাশ্যপেয় মণ্ডল,গোধা মণ্ডল,পক্ষীরাজ মণ্ডল,ত্রিকোণ মণ্ডল ইত্যাদি।ইংরেজীতে এই নামগুলো অন্যরকম যেমন Orion, pegasus, cetus ইত্যাদি। এই নাম গুলো একসাথে লিখলে অনেক বড় হয়ে যায়। নিচের ছবিতে দেখতে পারেন।


আমরা যেখানে আছিঃ
আকাশগঙ্গায় নামক ছায়াপথে জন্ম সূর্যের জন্ম আমাদের পৃথিবীরও। আমাদের আকাশগঙ্গার ব্যাস প্রায় ১ লক্ষ আলোকবর্ষ কি.মি.। সূর্য বাবাজী এর কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৬ হাজার আলোক বর্ষ কি.মি. দূরে অবস্থান করছে।নিচের ছবিতে সূর্যের অবস্থান দেখনো হয়েছে।


এরই একপাশে ক্ষুদ্র আমাদের পৃথিবীর অবস্থান। আমরা কিন্তু, আকাশগঙ্গাকে পুরপুরি দেখতে পারিনা।না দেখার কারন কী?
কারন হল আমাদের অতি ক্ষুদ্রতা। যেমন যদি কোন এক বিশাল ঘরে আপনার জন্ম হয় এবং আপনি কোনদিন বাইরে থেকে সে ঘরটাকে দেখেননি এবং সেই ঘরের মধ্যেই আপনি বেড়ে উঠেছেন।অর্থাৎ, এই ঘরের বাইরে যাওয়ার সৌভাগ্য আপনার হয়নি। তাহলে কী আপনি সে ঘরটার সমগ্ররূপ বুঝতে পারবেন? কখনই না।।
ঠিক একই বিষয় প্রযোজ্য আমাদের আকাশগঙ্গার ক্ষেত্রে। যদিও আমাদের জন্ম এই ছায়াপথেই, কিন্তু আমরা
আকাশগঙ্গাকে একসাথে দেখতে পারি না।তবে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে বের করেছেন যে, আকাশগঙ্গা সর্পিলাকার।

আরও একটি প্রশ্নের উত্তর রয়ে গেছে। চিরিকালই কি এই আকাশ এমন থাকবে?
না এই আকাশ পরিবর্তিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে মহাবিশ্ব। এই মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। ছায়াপথগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, দূরে সরে যাচ্ছে নক্ষত্রগুলোও। এই দূরে সরে যাওয়ার বেগ এদের পারস্পরিক দূরত্বের বর্গের সমানুপাতিক । অর্থাৎ, যে নক্ষত্রগুলো যত দূরে আছে তাদের সরে যাওয়ার বেগ তত বেশি । সে হিসেবে মহাবিশ্বের শেষেরদিকে যে নক্ষত্রগুলো আছে তারা প্রায় আলোর বেগে দূরে সরে যাচ্ছে । অর্থাৎ, তাদের কাছে পৌছানো একেবারেই অসম্ভব ।তাই একটা সময় এই আকাশ নক্ষত্রশুন্য হয়ে যাবে। কথা হচ্ছে ততোদিন পর্যন্ত আমরা হয়তোবা বেঁচে থাকব না এই পৃথিবীতে।।

++ আমাদের ক্ষুদ্রতাঃ এই ছবিটি দেখলেই বুঝে যাবেন।


সহজ করিয়া লিখার চেষ্টা করিয়াছি।সময় নষ্ট করিলে ক্ষমাপ্রার্থী।
সহায়ক পোষ্ট- Click This Link
অন্যান্য পর্বগুলো-
১। Click This Link
২। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

ছবি কৃতজ্ঞতা এআই।

ভূমিকা

নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা ইতিহাসের এক দীর্ঘ অধ্যায়। পাশ্চাত্যে নারী আন্দোলন শুরু হয় ১৮শ শতকের শেষভাগে, যার ফলশ্রুতিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি স্মার্ট জাতির অন্তঃসারশূন্য আত্মজৈবনিক !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪


একটা সময় ছিল, যখন জাতির ভবিষ্যৎ বলতে বোঝানো হতো এমন এক শ্রেণিকে, যারা বই পড়ে, প্রশ্ন তোলে, বিতর্কে অংশ নেয়, আর চিন্তা করে। এখন জাতির ভবিষ্যৎ মানে—ইনফ্লুয়েন্সার। তারা সকাল ১০টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতায় যাবার আগেই নারী বিদ্বেষ শুরু

লিখেছেন অপলক , ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১০:১১

সংবাদ সম্মেলন থেকে বের করে দেওয়া হলো নারী সাংবাদিককে, যা বললেন মুফতি ফয়জুল করিম

বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের এক নারী সাংবাদিক মনিকা চৌধুরীকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামী দলগুলো নারী বিদ্বেষী - এটা একটি মিথ্যা প্রোপাগান্ডা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১১:২৯

আরবের দেশগুলোকে আমাদের দেশের নারী আন্দোলনের নেত্রীরা দেখতে পারেন না হিজাব ইস্যুর কারণে। অথচ, আরব দেশ কাতার বি,এন,পি'র চেয়ারপারসনকে চার্টারড প্ল্যানে করে দেশে পাঠাচ্ছে। আরো কিছু উদাহরণ দেই। আওয়ামী লীগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ সকাল ৮:৫৩

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা



ইদানিং নারীনীতি নিয়ে দেশে নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে। আলেম-ওলামা এবং ইসলামপন্থীরা যখন পাশ্চাত্যঘেঁষা নারীনীতির সুপারিশকে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন, তখনই মূলত এই আলোচনার বিস্তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×