ফিরছিলাম আসাদ গেট থেকে মোহাম্মদপুরে, আসাদ এভিন্যু হয়ে পায়ে হেটে। পুরা রাস্তাটা পাবলিক বাস, প্রাইভেট কার আর রিক্সায় জগাখিচুড়ি পাকিয়ে। অবশ্য সে তুলনায় ফুটপাতগূলো অনেক ফাঁকা।
বাঙালী হাঁটতে চায় না যে!
কিন্তু আসাদ এভিন্যুর একি অবস্থা?? দুপুরের এ সময়টা স্কুল ছুটির, আর রাস্তার দুধারেই বিস্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফলে ক্ষুদে মাঝারী বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের ভিড়ে পুরা জায়গাটা থই থই করছে।
বাচ্চাদের বাড়ি ফিরিয়ে নিতে আসা গাড়ী গুলো পার্ক করে রাখা ফুটপাটের পাশে। অনুমান করা যায় অন্ততঃ ঘন্টাখানেক ধরে গাড়ীগুলো ফুটপাত ঘেষে দাড়িয়ে, এবার যারা দেরি করে বাচ্চা সংগ্রহ করতে এসেছে তাদের গাড়ীগুলো পার্ক করা দ্বিতীয় সারিতে। একই হিসাব রাস্তার ওপাশেও।
অর্থাৎ আসাদ এভিন্যুতে চার লেনের গাড়ী পার্কিং। বাকী থাকে কি?
আজকাল আসাদ এভিন্যুতে সেন্ট জোসেফ স্কুলের পরে আর রিক্সা চলতে দেয়া হয়না। ফলে রাস্তায় রিক্সার উপস্থিতি অনেক কম। সারা রাস্তা পার্ক করে রাখা গাড়ীর দখলে। মাঝখানে একচিলতে যে লেন বাকী আছে, তা সিঙ্গেল লেন, সেখানে কোন ভাবেই দুই সারীতে গাড়ী যাওয়া আসা করতে পারবে না। টাউন সার্ভিসের বাসগুলো সেখানে নিশ্চল দাড়িয়ে।
বাসের জানালাগুলোতে নির্বিকার যাত্রীদের ভাবলেষহীন মুখ। বাস চালকের অপেক্ষা- কখন বিশাল বিশাল ফোর হুইল ড্রাইভগুলো একটা অথবা দুইটা বাচ্চাকে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করবে। এদিকে ক্লান্ত বাচ্চারা গাড়ীতে উঠেই শরীর এলিয়ে শ্রান্তিতে। দ্রুত ঘরে ফেরা দরকার তাদের। কিন্ত জটপাকানো রাস্তায় গাড়ী তো চলতেই চায় না।
অথচ কোথাও আশু বিদ্রোহের চিহ্নমাত্র দেখলাম না। যে গাড়ীতে বসে, তারও এ অচলাবস্থার কোন অভি্যোগ নাই, যে বেচারি বাসের জানালায়- মনে হলো না তারও খুব বেশি নালিশ আছে।
ভাবছিলাম- কোন চরিত্রটা আসল বাঙালীর - যে স্বার্থপরের মতো দুঘন্টা ধরে রাস্তা দখল করে তার ফোরহুইলটা পার্কিং করে, সে? নাকি চোখের সামনে এত কিছু অরাজকতা দেখেও নির্বিকার ভাবে বাসের জানালার পাশে বসে বসে যে অপেক্ষা করে, জ্যাম কখন ছুটবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৪