১.
নীলবাবু ছিলেন আমাদের ইসকুলের বাংলা টিচার। ক্লাসের বাইরের সময়ও উনার বুক পকেটে একটা ফাউন্টেন কলম থাকত।
স্যার বলতেন: "গঠন-গাঠনে আর লম্বায় সব মানুষই বড় হয়। শুধু মাত্র মনুষত্যে সবাই বড় হয় না।"
বুক পকেটে একটা ফাউন্টেন পেন নিয়ে আমি স্যারের মত হতে চাইতাম। আমি আকাশ ছোঁয়ার মত বড় হয়েছিলাম। শুধু আমার বুক পকেটে ভরদুপুরে একটা ব্যাঙাচি ঘুমায় আজকাল। ঘুমের ঘুরে মাঝে মাঝে লাঠিতে ভর দিয়ে চলা স্যারের খট খট খট শব্দ শুনে আমি জেগে উঠি। আমার কপালে জমতে থাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম।
২.
আমার জন্য সে এক হাজার একটা কবিতা লিখবে বলেছিলো। কবিতার মাঝ পথে আমি তাকে ফেলে এসেছিলাম। আমি সবসময় একজন প্রেয়সী হতে চাইতাম, শুধুমাত্র কারোর প্রেরণা নয়। সে আজো এচোখ থেকে ওচোখ কবিতা খোঁজে বেড়ায়।
আর আমি কবিতাকে ঘৃনা করি। শাড়ির আচলে বেঁধে রেখেছি নিঝুম এক কোয়া।
৩.
মল্লিকাদের বাড়ির উঠোনে পরে কাতরাচ্ছিলো শালিকটা। আমি শালিকটাকে ঠিক ঠিক চিনতে পারছি। হ্যাঁ তাকেই তো আমি অভিশাপ দিয়েছিলাম। আমার মেয়ের গালে কি নির্মম নখের দাগ বসিয়ে দিয়েছিলো! আমি লাথি দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলাম শালিকটাকে। আমার মেয়েকে শক্ত করে বুকের মাঝে আগলে ধরে চুমো খাই আমি। পৃথিবীর সব সুন্দরের প্রতি মায়া জন্মাতে নেই।
একটা ডানা, একটা লাল ফ্রক, আর একটা নোলক পাশাপাশি শুয়ে থাকে কবরে।
৪.
ঈশ্বর আর আমি
মুখোমুখি...
আমি: আমাকে স্বপ্ন গড়ার ক্ষমতা দাও নয়ত মৃত্যুর।
তাহলে একজন পিতা, একটা লালচুড়ি, আর একটা স্বপ্নকে আমি মারবো।
.
.
.
অবশেষে আমি ঈশ্বরকে খুন করেছিলাম। I had forgotten that miracle does happen. আমি পরী থেকে একটা ছারপোকা হয়ে গেলাম! ঈশ্বরের সর্বশেষ অভিশাপের ফলশ্রুতিতে, আমি আর বৃষ্টি ছুঁতে পারিনা।
৫.
আমি তুকে একটা শুভ্র সকাল, একটা স্বর্ণালী সন্ধ্যা, আর একটা বেলী ফুলের মালা গুঁজা খোঁপা দিবো। শুধু বিষন্ন দুপুরটাকে দিবো না। পড়ন্ত দুপুরটা ভাসিয়ে দিবো মায়াদীঘির জলে। সারাবেলা আমার ঘরে যেই মাছরাঙা পাখিটা উড়ে চলে সে যদি দুপুরটাকে ঠোঁটে করে ফিরে আসে তবে সে হবে একটা নাকফুল। আর যদি অভিমানে ফিরে যায় তবে সে হবে একটা নাটাইবিহীন ঘুড়ি।
বাস্তবপক্ষে, মাছরাঙা পাখিটা হয়েছিলো একটা কাকতাড়ুয়া!