রাজধানী ঢাকায় ঢুকলেই দিতে হবে ট্যাক্স। প্রাইভেট কার, বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহনকে এই ট্যাক্স দিতে হবে। কোন ধরনের যানে কী পরিমাণ ট্যাক্স ধরা হবে তা এখনও স্থির করা হয়নি। তবে এ খাতে ১০০ কোটি টাকা আয় করার টার্গেট নিয়েছে নবগঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। চলতি অর্থবছরে রাজধানীতে সব ধরনের যানবাহন প্রবেশের ক্ষেত্রে এই অক্টোপ্রথা (নগরশুল্ক) চালুর প্রস্তাব করেছে স্বায়ত্তশাসিত এই সংস্থা। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিবেচনাধীন আছে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই ট্যাক্স আদায় শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ’৮০’র দশকে রাজধানীতে যানবাহনের প্রবেশের ক্ষেত্রে নগরশুল্ক ব্যবস্থা চালু ছিল। এখাতের আয় দিয়ে সে সময় নগরীর রাস্তাঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চাকা সচল রাখা হতো। পরে সরকার নগরীর উন্নয়ন খাতে বার্ষিক আড়াই শ’ কোটি টাকা অনুদান দেয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রায় ২২ বছর আগে নগরশুল্ক ব্যবস্থা তুলে দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি অনুদানের অংক ক্রমশ কমে যায়। বর্তমানে এখাতে সরকার তরফে বরাদ্দ আছে ৩৮ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রাজধানীর বাইরের যানবাহনকে ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে নগরশুল্ক আরোপের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। ৫ই জুলাই ডিসিসি উত্তরের ঘোষিত বাজেটে এই শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন প্রশাসক শাহজাহান আলী মোল্লা। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্সের পরিমাণও বেশ কম। রাজস্ব আদায়ের তেমন বড় কোন খাতও নেই। তাই এই অঞ্চলের রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়নের স্বার্থে নগরশুল্ক ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। এ জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে যানবাহনের উপর ট্যাক্স বসিয়ে আয় বাড়াতে চান তিনি। এদিকে প্রস্তাবটি যাচাই বাছাই ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর নগরশুল্ক আদায় এবং আরোপের পদ্ধতি ঠিক করা হবে বলে জানান প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মহসিন আলী। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এই খাতে আমাদের রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ৭৫ থেকে ১০০ কোটি টাকা। তবে রাজধানীমুখী যানবাহনের ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে এই শুল্ক আদায়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত হওয়ার পর ৫ই জুলাই পৃথক বাজেট ঘোষণা করা হয়। এতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০০ কোটি টাকা আয়ের টার্গেট নিয়ে ১০ ভাগ হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে যানবাহনের উপর শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করে। উভয় করপোরেশনের প্রস্তাব নিয়ে নগরবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।